নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার ::
কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলাধী ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিশলয় আদর্শ শিক্ষা নিকেতনের হোস্টেল তত্ত্বাবধায়ক পীযুষ কান্তি শর্মা ও বিধিবহির্ভূতভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত এমপিও ভূক্ত অফিস সহকারী সেলিমের গ্রুপিং, অনিয়ম ও সন্ত্রাসী ককর্মকাণ্ডে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে পুঞ্জীভূত ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। হোস্টেল তত্ত্বাবধায়ক পীযুষ কান্তি শর্মা ও অফিস সহকারী সেলিম আর্থিক অনিয়মের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে চলেছেন। তাছাড়া হোস্টেলের শিক্ষার্থী ও কয়েকজন শিক্ষক নিয়ে গ্রুপিং সৃষ্টি করে বিগত ২৬/০৩/২০১৯ তারিখ হোস্টেল তত্ত্বাবধায়ক পীযুষ কান্তি শর্মা ও অফিস সহকারী সেলিম হোস্টেলের ছাত্রদের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক জনাব ওবাইদুল হকের বিরুদ্ধে রাতের অন্ধকারে বিদ্যালয়ের সকল শ্রেণিকক্ষ, ছাত্রাবাস, বিদ্যালয় গেইট ও বিদ্যালয়ের সবকটি ভবনে বানোয়াট, ভিত্তিহীন, মানহানিকর, কুরুচিপূর্ণ ও অশালীন ভাষা সংবলিত পোষ্টার লাগায়।
২৭/০৩/২০১৯ তারিখ সহকারী শিক্ষক ওবাইদুল হক বিদ্যালয়ে এসে পোস্টারগুলো দেখতে পেলে তিনি পোস্টারগুলো তুলতে থাকেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অফিস সহকারী সেলিম ও হোস্টেল তত্ত্বাবধায়ক পীযুষ কান্তি শর্মা হোস্টেলের ছাত্রদের নিয়ে পোস্টার তুলতে বাধা দেন। উক্ত শিক্ষক তখন বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ত্যাগ করতে চাইলে অফিস সহকারী সেলিম ও হোস্টেল তত্ত্বাবধায়ক পীযুষ কান্তি শর্মা হোস্টেলের ছাত্রদের লাটি-সোটায় সজ্জিত করে এগিয়ে এসে ওবাইদুল হকের গতিরোধ করে এবং তারা সন্ত্রাসী কায়দায় হোস্টেলের আনুমানিক ১০-১৫ জন ছাত্র নিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি,লাথি ও ইট দিয়ে মারতে থাকে। তারা তাকে মারতে মারতে মাটিতে ফেলে দেয়। অতপর মাটিতে পড়ে থাকা অবস্থায়ও তারা তাকে দীর্ঘক্ষণ মারধর করে প্রাণনাশের চেষ্টা করে। অবশেষে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক বাহাদুর হক, সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান, অভিভাবক আলী আহমেদ ও বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে উদ্ধার করেন। হোস্টেলের শিক্ষার্থীদের সুশিক্ষা দানের পরিবর্তে ব্রেইন ওয়াশ করে গ্রুপিং সৃষ্টি করে এবং তাদেরকে উস্কানী দিয়ে জঙ্গি স্টাইলে একজন শিক্ষকের উপর হামলার মাধ্যমে হোস্টেল তত্ত্বাবধায়ক পীযুষ কান্তি শর্মা ও অফিস সহকারী সেলিম শিক্ষাঙ্গনের পবিত্র পরিবেশকে কলুষিত করে চলেছেন।
এর জেরে বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা রক্ষার্থে ও হোস্টেলের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছাত্রাবাস বন্ধ করে দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
ছাত্রবাস বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলাম বলেন, বহিরাগত কিছু লোক ছাত্রাবাসে ঢুকে স্কুলের নিয়ম শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়-এমন কাজ করছে। নিজস্ব এজেন্ডায় হোস্টেলের ছাত্রদের ব্যবহার করছে। ইতোমধ্যে এমন ঘটনা ঘটেছে। তাই নিরাপত্তাজনিত কারণে আপাততঃ ছাত্রবাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
সরেজমিনে খুটাখালী গিয়ে সচেতন এলাকাবাসী, প্রাক্তন এবং বর্তমান শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ২৬ মার্চ রাতে স্কুলের আঙ্গিনায় ইংরেজি শিক্ষক ওবায়দুল হকের বিরুদ্ধে কে বা কারা কুরুচিপূর্ণ কথা লিখে পোষ্টার লাগিয়ে দেয়। এ বিষয়ে ইংরেজি শিক্ষক ওবাইদুল হক বলেন, এমপিও’র আবেদন অগ্রায়নে সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জনাব নুরুল কবির আমার কাছে ২ লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করেন। আমি ঘুষ না দিলে তিনি জ্যেষ্ঠতার যাবতীয় মানদণ্ডকে উপেক্ষা করে ২য় স্থান অর্জনকারীর আবেদন অগ্রায়ন করে তাকে এমপিও ভূক্ত করেন এবং আমাকে দীর্ঘ ২ বছর বেতন-ভাতার সরকারি অংশ থেকে বঞ্চিত করেন। এ বিষয়ে আমি যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ দিলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জনাব নুরুল কবির ও তার সক্রিয় অনুসারী হোস্টেল তত্ত্বাবধায়ক পীযুষ কান্তি শর্মা ও অফিস সহকারী সেলিম আমাকে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেওয়ার কু-মানসে ষড়যন্ত্র করতে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিগত ২৭/০৩/২০১৯ বর্ণিত ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটানোর মাধ্যমে আমাকে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেন।
পাঠকের মতামত: