ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

খালেদা জিয়ার জেল প্রস্তুতি!

নিউজ ডেস্ক ::

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড এক রকম মেনে নিয়েই পরবর্তী করণীয় বিষয়ে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে বিএনপি। দলের দায়িত্বশীল সিনিয়র নেতাদের এই মুহূর্তে ঢাকা ত্যাগ না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে দলের প্রথমসারির নেতা ও চেয়ারপারসনের বিশ্বস্তদের নিজ নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করা হয়েছে।

নেতারাও তাদের আশু করণীয় নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। একই সঙ্গে খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে আলোচিত ১/১১’র মত যেন সামগ্রিক সিদ্ধান্তে দল পরিচালিত হয়, করণীয়ের ক্ষেত্রে তা প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে এরই মধ্যে কেন্দ্রে রেখে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণের কাজ শুরু হয়ে গেছে।

বিএনপির একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে। সেই সঙ্গে এ বিষয়গুলো কেবল দলের স্থায়ী কমিটি ও জোটের সভায় আলোচনা করে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত হিসেবে আসার অপেক্ষায় রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

যদিও বিএনপি নেতারা তাদের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য কিংবা প্রতিক্রিয়ায় বলছেন, আইন তার সঠিক পথে চললে খালেদা জিয়া খালাস পাবেন।

এর পাশাপাশি তারা এও বলছেন, প্রধানমন্ত্রী যেখানে বারবার খালেদা জিয়াকে এতিমের টাকা মেরে খেয়েছেন বলে অভিযুক্ত করছেন এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ৮ ফেব্রুয়ারি সামনে রেখে কঠোর হবার ঘোষণা দিয়েছেন, তাতে আইন তার নিজ গতিতে চলতে পারবে কিনা আশঙ্কা রয়েছে।

বিএনপি নেতারা মনে করেন, খালেদা জিয়াকে কারাদণ্ড দেয়া হলে দলের তাৎক্ষণিক বেশকিছু অসুবিধা হবে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে লাভই বেশি হবে।

বিএনপির একটি অংশ মনে করে, খালেদা জিয়ার সাময়িক কারাবাস দলে যেকোনো ধরনের গোলযোগ তৈরির সুযোগ সৃষ্টি হবে। সুযোগ সন্ধানী ও সুবিধাভোগীরা তৎপর হয়ে উঠতে পারে।

অন্য অংশের ভাষ্য, নিপীড়ন-নির্যাতনের মুখে পড়লে রাজনীতিতে নিপীড়িত অংশই দীর্ঘ মেয়াদে শক্তিশালী হয়। আর জেলে যেতে হলে খালেদা জিয়ার প্রতি দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক সহানূভূতি বাড়বে, যা দীর্ঘ মেয়াদে তার এবং দলের জন্য লাভ বয়ে আনবে।

এসব হিসাব-নিকাশ সামনে রেখে বিএনপির সকল দেশের ইউনিটগুলোকে আগামী দু’একদিনের মধ্যেই নিয়মিত ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের দূতাবাস ও হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করার নির্দেশ দিয়েছে বলে জানা গেছে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত দু’দিনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীসহ দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে একাধিকবার পরামর্শ করেছেন। নেতাদের চেয়ারপারসনের কার্যালয় থেকে খুব জরুরি কিছু না হলে ঢাকায় থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল মাহবুবুর রহমান পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভালো না। বিএনপিও কিছু করতে পারছে না। সরকারও কঠোর অবস্থানে রয়েছে। বিএনপির জন্য ভালো কিছু দেখতে পাচ্ছি না।’

তিনি বলেন, ‘ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) আগেও তো জেলে গেছেন। তার অনুপস্থিতিতে পার্টিতো থেকেছে। এবারো থাকবে। তবে ১০ বছর আগের কথা আর এখনকার মধ্যে বড় পার্থক্য রয়েছে। দেখি, চিন্তা-ভাবনা করে কি করা যায়।’

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘জেল প্রস্তুতির কোনো ব্যাপার নেই। এটা সত্য ও মিথ্যার লড়াই। মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা হলে ৮ ফেব্রুয়ারিই সরকারের পতনের দিন গণনা শুরু হবে।’

তিনি অভিযোগ করেন, ‘সরকার পরিস্থিতি ঘোলা করে মাছ শিকার করতে চাচ্ছে। আমরা আইনের লড়াই করছি। এটার শেষ দেখার পরে রাজনৈতিক লড়াইটাও করব।’ সুত্র: পরিবর্তন

পাঠকের মতামত: