শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার ॥
বাংলাদেশের কক্সবাজার সাগর পাড়ের খুরুশকুল পালপাড়ায় ৫ দিন ব্যাপী রাসমেলা বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হয়েছে। সার্বজনীন রাস মহোৎসব উপলক্ষে শুরু হয় মহতী ধর্মসভা,লীলা প্রদর্শনী ও ষোড়শ প্রহরব্যাপী হরিনাম-মহাযজ্ঞ।
কক্সবাজার জেলার সর্ববৃহৎ প্রাচীন রাসমেলা। ৪৬ বছরের ঐতিহ্যবাহী রাসমেলা সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী, আয়োজক কমিটি সহ বিভিন্ন সংস্থা ইতমধ্যো নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। মেলায় দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসছে।
বঙ্গোপসাগরের মোহনা খুরুশকুল পালপাড়া ও সমুদ্র সৈকতে রাস পূর্ণিমায় রাধাকৃষ্ণের পূজা, পূর্ণস্নান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শুক্রবার ৩ নভেম্বর উদ্বোধনী পর্ব, পূজা, কীর্ত্তন, লালন ও হাসানের সংগীত অনুষ্ঠান ও ৮ নভেম্বর সমুদ্র স্নানের মধ্যদিয়ে রাসমেলা শেষ হবে। হিন্দুধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব নিয়ে কক্সবাজার জেলাবাসী সহ বিভিন্ন এলাকার মানুষের মাঝে সম্প্রীতির মেল বন্ধন পরিলক্ষিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে খুরুস্কুল পাল পাড়া শ্রী শ্রী রাসবিহারী মন্দির প্রাঙ্গনে পাঁচদিন ব্যাপী এই উৎসবের উদ্বোধন করেন কক্সবাজারের অতিরিক্তে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট খালেদ মাহমুদ। পরে এ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল এম পি।
অধ্যক্ষ সাধন পালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সভাপতি এ্যাডভোকেট রনজিত দাশ, কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি রনজিত কুমার বড়–য়া, মহোৎসব উদযাপন পরিষদ সাধারণ সম্পাদক স্বপন পালসহ সংশ্লিষ্টরা বক্তব্য রাখেন। এ সময় পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা,জনপ্রতিনিধি, ধর্মীয় পুরোহিত ও নেতানেত্রীসহ অসংখ্য ভক্তবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
রাসমেলায় পূর্ণিমা তিথিতে সাগরপাড়ে নির্মিত মন্দিরে রাধাকৃষ্ণ, কমল কামিনি ও বনবিবির পূজা অনুষ্ঠিত হবে। পুর্ণিমার পূন্যতিথিতে সকালে সাগর ঢেউয়ে পূস্নান্নের জন্য লক্ষাধিক নারী পুুরুষবিভিন্ন ধরনের প্রসাদ নিয়ে মানত ও মনোবাসনা পূন্যের জন্য চরে সারীবদ্ধ হয়ে বসবে। সাগর ঢেউয়ে স্নান শেষে পূন্যাথিরা বাড়ী ফেরা শুরু করে। অটুট বিশ্বাস আর পূন্যভক্তিতে কমল কামিনীর দর্শন মেলে। পূন্যাথিরা কমল কামিনী দর্শনের আশায় নিলকোমলের সাগর মোহনায় সাগর ঢেউঢেয় স্নান করে। রাস পূর্ণিমায় প্রথম আসা সমুদ্র ঢেউকে নিলকোমলের ঢেউ বলা হয়। এই প্রথম ঢেউয়ে পূন্যাথিরা প্রসাদ উৎসর্গ করে পূন্যস্নান করে। এ বছর ৪৬ তম রাসউৎসব অনুষ্ঠিত হবে এখানে। মেলায় পর্যটক সহ প্রায় ৮/১০ লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটে। এমটাই দাবী আয়োজকদের।
পাঠকের মতামত: