ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

কক্সবাজারে বিভিন্ন পশুর হাটে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই বিক্রি হচ্ছে কুরবানীর পশু

eeআবদুর রাজ্জাক,কক্সবাজার-

কক্সবাজারের বিভিন্ন পশুর হাটে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই গরু-ছাগল-মহিষ সহ কুরবানীর পশু বিক্রি হচ্ছে। আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশীয় বিক্রেতা ছাড়াও মিয়ানমার ও ভারত থেকে পশু গুলো এ সব হাটে আসলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কোন তৎপরতা চোখে পড়েনি। ভুক্তভোগিরা বলছেন কোনটি কী রোগে আক্রান্তবা নিরোগী কি-না অথবা কীভাবে মোটা করা হয়েছে জানা যাচ্ছে না। এ কারনে পশু ক্রেতারা প্রতিনিয়তই ঠকছেন। ফলে সরকার জনর্স্বাথে পশুর হাটে পরীক্ষা ছাড়া গরু বেচা-কেনা না করার যে বিধান রেখেছে তার ফলাফল ধুলায় মিশে যাচ্ছে। বিঘিœত হচ্ছে জনর্স্বাথ ।

কক্সবাজার প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এদিকে আসন্ন কোরবানিতে কক্সবাজারে কোরবানিযোগ্য পবাদিপশু রয়েছে ৩৫ হাজার ৮’শত ৭১টি। এর মধ্যে ১৩ হাজার ৮’শত ৭১টি গরু, ৪’হাজার ৫’শত টি ছাগল ও ১৭’হাজার ৫’শত টি ভেড়া রয়েছে ।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সূত্রে জানা গেছে, এবারে ৪৪ টি পশুর হাটের মধ্যে স্থায়ী ২১টি, অস্থায়ী ২৩টি, সদরে পাঁচটি, চকরিয়ায় ১০টি, পেকুয়ায় ২ টি, কুতুবদিয়ায় ২ টি, মহেশখালীতে ৬ টি, উখিয়ায় ৬ টি ও টেকনাফে ৭ টি পশুর হাট বসছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি হাটে হাতে গুনা পশু উঠেছে। কোরবানের দিন যতই এগিয়ে আসছে ততই হাটে পশুর সংখ্যা বাড়বে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। তবে হাট গুলোতে দেশি গুরু ও মহিষের চাহিদা রয়েছে। এছাড়া অনেক হাটে তোলা হবে মিয়ানমার থেকে আমদানি করা গবাদিপশু।

কক্সবাজার জেলার সবচেয়ে বড় পশু হাট সদর উপজেলা খরুলিয়া বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বিশাল হাটে পশু রাখার জন্য সারি সারি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। গরু, মহিষ, ছাগল ও বেড়ার জন্য আলাদা আলাদা স্থান করা হয়েছে। তবে তেমন পশু উঠেনি হাটে। সব মিলিয়ে দুই শতাধিক পশু দেখা গেছে। এছাড়া কক্সবাজার পৌরসভার একমাত্র হাট খুরুশকুল রাস্তার মাথায়ও একই চিত্র। খুরুশকুল রাস্তার মাথা পশু হাটের ইজারাদার নুরুল আজিম কনক বলেন, হাটে বিক্রির জন্য কোরবানি পশু আসতে শুরু করেছে। আজ থেকে পশু বিক্রি পুরোদমে শুরু হবে এবং তা ঈদের আগেরদিন রাত পর্যন্ত বিক্রি চলবে। তবে ঈদের তিনদিন আগে থেকেই পশুর হাট গুলো জমজমাট হয়ে উঠবে বলে তিনি জানান। এদিকে এসব পশুর হাটে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা।

সরেজমিন পরিদর্শন কালে দেখা যায়,আসন্ন কোরবানি ঈদে কক্সবাজার সদরসহ আট উপজেলায় ৪৪ টি পশুর হাট বসছে এবারে। তবে এখনো জমে উঠেনি পশুর হাট। ঈদের তিনদিন আগেই পশুর হাট জমজমাট হবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের। তবে বাজারে জনস্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক এমন পশু বাজারজাত রোধে প্রতিটি হাটেই মেডিকেল টিম গঠন করেছে বলে প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে জানানো হলেও এসব হাট-বাজারে প্রাণিসম্পদ বিভাগের কোন কর্মীর নজরদারী চোখে পড়েনি। এছাড়াও প্রতিটি পশুর হাটে বিক্রি হচ্ছে অস্বাভাবিক পদ্ধতিতে মোটাতাজা করা গরু।

কক্সবাজার জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, জনস্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক এমন কোরবানি পশু বাজারজাত রোধে এ বছর সরকারের পক্ষ থেকে আগের চেয়ে বেশি সতর্ক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গত ১৪ আগস্ট মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা সূত্র জানায়, স্টেরয়েড ব্যবহার করে গরু মোটাতাজাকরণ নিয়ে জনমনে শঙ্কার প্রেক্ষাপটে কোরবানির পশুর গুরুত্বপূর্ণ হাটগুলোতে মেডিকেল টিম কাজ করবে। আর এমন নির্দেশনার প্রেক্ষিতে কক্সবাজার জেলায়ও ৪৪টি হাটে নজরদারীর জন্য মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এছাড়া খামারি পর্যায়েও নজর রাখা হয়েছে।

এব্যাপারে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, কোরবানি পশু বিক্রির হাট নির্ধারণের পাশাপাশি পশু জবাইয়ের জন্য স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। পশু জবাইয়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। যাতে নির্দিষ্ট স্থানে মানসম্মতভাবে পশু জবাই করা হয়। এতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতাও করা হবে।

কক্সবাজার পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ বলেন, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পশুর হাটসহ সর্বস্তরে পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। পশুর হাট ও মার্কেটে বসানো হবে জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন। পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা সাদা পোশাকে মাঠে থাকবে।

পাঠকের মতামত: