শাহেদ মিজান, কক্সবাজার ::
জনসম্পৃক্ত বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কাজের স্বচ্ছতা নিশ্চিতকল্পে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর জবাবদিহিতামূলক অনুষ্ঠান গণশুনানী এবার কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮) এপ্রিল কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের এড. শাহাব উদ্দীন মিলনায়তনে এই গণশুনানী অনুষ্ঠিত হয়। । সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলে এই শুনানী। এতে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুদক কমিশনার (তদন্ত) এ এফ এম আমিনুল ইসলাম। তার সঙ্গে গণশুনানীতে অংশ নেন কক্সবাজার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আশরাফুল আফসার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসাইন। এছাড়াও বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন।
দুদকের গণশুনানীতে সরাসরি অভিযোগ করতে স্বতঃস্পূর্ত উপস্থিতি ছিল বিপুল ভুক্তভোগি। দুদক কমিশনারের সামনে সরকারী-বেসরকারী দপ্তরের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী তাদের অভিযোগের ফিরিস্তি তুলে ধরেন। এসময় সংশ্লিষ্ট অনেক সরকারী-বেসরকারী অফিসের কর্মকর্তারা বিব্রত অবস্থায় পড়ে যান।
গণশুনানীতে ভূমি অধিগ্রহণ শাখা থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা উত্তোলনে হয়রানি, ক্ষতিপূরণের টাকা বিতরণে গরমিল, কক্সবাজার সদর হাসপাতালের অনিয়ম দুর্নীতি এবং রোগী ও স্বজনদের মারধর, দুর্ব্যবহার, বাঁকখালী নদী দখল, পুলিশ বিভাগের ঘুষ আদায় ও হয়রানি, কলাতলীতে বহুল আলোচিত ৫১ একরের পাহাড় কাটা ও জমি বিক্রি, বীচ ম্যানেজম্যান্ট কমিটির বিরুদ্ধে সৈকতে ঝুপড়ি দোকান বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগ, ভূমি অফিসে খতিয়ান ও নামজারীতে হয়রানি এবং অর্থ আদায়, পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনে ঘুষ আদায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
বিশেষ করে ভূমি অধিগ্রহণ শাখা, সদর হাসপাতাল, পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন, পুলিশ বিভাগের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগকারী সমবেত হন। কিন্তু সময় নির্দিষ্টতার কারণে সবার বক্তব্য শোনা যায়নি। একটি বিষয়ে সর্বোচ্চ পাঁচজন মতো ভুক্তভোগী তাদের অভিযোগ তুলে ধরতে সক্ষম হন। দুদক কমিশনারের নির্দেশে এসব অভিযোগের জবাব দেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতিনিধিরা। তবে সরাসরি নির্দিষ্টভাবে অভিযোগ পড়ায় প্রায় অভিযোগের সঠিক জবাব দিতে পারেননি। এই নিয়ে তারা বেশ বিব্রত অবস্থায় পড়ে যান। এর জন্য দুদক কমিশনার তাদেরকে তিরস্কার করেন।
অভিযোগের মধ্যে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের প্রতিনিধি ডা. বিধান পাল হাসপাতাল সম্পর্কে করা ১১টি অভিযোগের কোনোটির যুৎসই জবাব দিতে পারেননি। ভূমি অধিগ্রহণ শাখা নিয়ে বেশ পরিমাণ ভুক্তভোগী গণশুনানীতে অংশ নেন। এর মধ্যে পাঁচজন মতো ভুক্তভোগীর বক্তব্য নেয়া হয়। সব সমস্যা সমাধানের জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা দেওয়ান মওদুদ আহমদকে নির্দেশ দেন। স্বল্প সময়ের সব অভিযোগের নিষ্পত্তির জন্য নির্দেশ দুদক কমিশনার।
বক্তব্যে প্রধান অতিথি দুদক কমিশনার (তদন্ত) এ এফ এম আমিনুল ইসলাম বলেন, দেশটা সবার। সবাইকে মিলে কাজ করতে একটি সুন্দর বাংলাদেশ গঠনের জন্য। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বির্নিমাণ করতে হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। ঘুষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে।
তিনি আরও বলেন, অনিয়ম-দুর্নীতি না হলে শুধু শুধু এতগুলো অভিযোগ আসবে কেন। কিন্তু এখন থেকে অন্তত যারা সেবা প্রদান করবেন তাদেরকে সৎ মানসিকতা নিয়ে কাজ করতে হবে।
পাঠকের মতামত: