“একুশ মানে মাথা নত না করা”, “একুশ মানে মুক্ত চিন্তার খোলা জানালা”। এই চেতনা লালন করে ১৮ বছরে পর্দাপন করলো একুশে টেলিভিশন। এ উপলক্ষ্যে কক্সবাজারেও পালিত হয়েছে চ্যানেলটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
১৮ বছরে পর্দাপণ উপলক্ষ্যে শুক্রবার সকালে এক বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। উক্ত র্যালিতে নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য এডভোকেট তাপস রক্ষিত। র্যালিটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসন আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রায় মিলিত হয়।
পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে কেক কাটা ও শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু তাহের চৌধুরী।
একুশে টেলিভিশনের কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি আবদুল আজিজের সার্বিক সহযোগিতায় উক্ত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলার প্রবীন সাংবাদিক প্রিয়তোষ পাল পিন্টু, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ মাহবুবুর রহমান মাবু, সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহেদ সরওয়ার সোহেল, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের কেন্দ্রিয় সদস্য এডভোকেট আয়াছুর রহমানসহ স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ। এসময় উপস্থিত নেতৃবৃন্দরা একুশে টেলিভিশনের সাফল্য কামনা করেন।
উল্লেখ্য, পরিবর্তনের অঙ্গিকার নিয়ে একঝাঁক তরুণ সংবাদকর্মী ও নির্মাতাদের হাত ধরে যাত্রা শুরু করেছিল বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারী টেরিস্ট্রিয়াল চ্যানেল ‘একুশে টেলিভিশন’। লক্ষ্য ছিল বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দেয়া। কিছু স্বপ্নচারী মানুষের হাত ধরে পথচলা শুরু হয়েছিল একুশে টেলিভিশনের।
বস্তুনিষ্ঠ ও চমকপ্রদ সংবাদ আর দেশজ ব্যতিক্রমী বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে, ২০০০ সালের এই দিনে যাত্রা শুরু হয় একুশে টেলিভিশনের। বিশ্বের বুকে সঠিকভাবে তুলে ধরতেই একুশে হয়ে উঠে বাংলাদেশের জানালা।
১৯৯৮ সালে যখন বেসরকারী খাতে টেলিভিশন দিতে উদ্যোগী হয়েছে সরকার। টেন্ডারে অংশ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলার সুযোগ পান একুশে টেলিভিশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আবু সায়ীদ মাহমুদ। ভাষা আন্দোলনে অগ্রণী ভুমিকা রাখা এই সংগঠকের লক্ষ্য ছিল নিজের এবং সকলের মুক্ত চিন্তাগুলো একত্রিত করে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার।
সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কাজ শুরু হয় ভবন তৈরির। শুন্য থেকে নব উদ্যমে নতুন পথে চলার বৃহৎ এই উদ্যোগের কাজ যেন থেমে না যায় সেজন্য বনানীতে চলে অস্থায়ীভাবে অফিস গোছানোর কাজ। এরইমধ্যে চুক্তি সই হয় সরকারের সাথে।
বিশ্বমানের সংবাদ আর অনুষ্ঠান তৈরিতে খুঁজে আনা হয় একঝাঁক তরুণ নির্মাতা ও সাংবাদিক। বিবিসি টেকনিক্যাল সাপোর্ট যেমন দিয়েছে, তেমনি প্রশিক্ষণ দিয়েছে সংবাদ তৈরির প্রক্রিয়ায়। এ উদ্যোগকে জীবন্ত করে তুলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সাথে সম্পর্কিত বিশ্বখ্যাত সাংবাদিক সায়মন। নতুন দ্বার খুলে, নতুন সূর্যের আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে শুরু হয় একুশে টেলিভিশনের পথচলা। এরপর আর পেছনে তাকানো নয়, নির্ভীক সংবাদ আর বিনোদনের ডালি নিয়ে শুধুই সামনে এগিয়ে চলা।
পাঠকের মতামত: