কক্সবাজার প্রতিনিধি :: রোহিঙ্গাদের জন্য আনা ‘ভেজাল’ চালের চালান আটকের পাঁচদিন পর খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা নড়েচড়ে বসেছেন। ঘটনা তদন্তে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য অফিসের কর্মকর্তারা গতকাল সোমবার কক্সবাজারে ছুটে এসেছেন। তবে এর আগে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক তদন্তের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
খাদ্য বিভাগ দাবি করছে, আটক চালের চালানটি তাদের। অথচ ১৪ ফেব্রুয়ারি চালানটি আটক হওয়ার পর থেকে গতকাল পর্যন্ত খাদ্য কর্মকর্তারা রহস্যজনক কারণে চুপ ছিলেন। দুদকের তদন্ত থেকে রেহাই পেতে খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে ভেজাল সিন্ডিকেটের সদস্যরাও দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস এম তাহসিনুল হক সোমবার কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে কাগজপত্র জমা দিয়ে জানান, আটক ‘ভেজাল’ চাল বিশ্ব খাদ্য সংস্থার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের সরবরাহ দিতে খাদ্যগুদামে আনা হচ্ছিল। তিনি বলেন, ‘এটি তেমন গুরুতর বিষয় নয়। সাংবাদিকরাই ঘটনা বড় করেছেন।’
অপরদিকে কক্সবাজার খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থোয়াইমং প্রু মারমা এ প্রতিবেদকের কাছে ভেজাল চাল সরবরাহের কিছু ঘটনার সত্যতা রয়েছে বলে স্বীকার করে বলেন, ‘ভাই দয়া করে আর লেখালেখি না করলেই বাঁচি।’
চট্টগ্রাম থেকে গতকাল কক্সবাজারে এসেছেন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাহবুবুর রহমান ও সহকারী আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক চন্দ্রশেখর মল্লিক। গতরাতে ঘটনার বিষয়ে চন্দ্রশেখর মল্লিক বলেন, ‘আমরা ভেজাল চাল কেলেংকারির ব্যাপারে গুরুত্ব নিয়ে তদন্তে এসেছি। খাদ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়াও কক্সবাজার খাদ্য অফিসের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, ‘রোহিঙ্গাশিবিরে উন্নতমানের চালের পরিবর্তে ভেজাল চাল সরবরাহের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থ্থা নেওয়ার জন্য সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ইতোমধ্যে বলা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন খাদ্য গুদামে ৪০০ বস্তার ২০ মেট্রিক টন ‘ভেজাল’ চাল বোঝাই একটি ট্রাক আটক করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। চট্টগ্রামের আসাদ ট্রেডিং নামে একটি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান দেওয়ানহাট সিএসডি খাদ্য গুদামের সহকারী ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ বেলাল স্বাক্ষরিত চালান নিয়ে ট্রাকটিতে এসব চাল বোঝাই করে কক্সবাজার খাদ্য গুদামে সরবরাহ দিচ্ছিল। একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট ভেজাল চাল সরবরাহ করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকেে জাতীয় দৈনিকে ‘ভেজাল’ চাল নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়ে আসছে।
পাঠকের মতামত: