এস এম এনামুল হক। ঘটনার ১০ দিনের মাথায় ১৭ নভেম্বর ৫৮টি বন্য পাখি উদ্ধারের ঘটনায় উদ্বিগ্ন সচেতন মহল।উভয় ক্ষেত্রে বন্যপ্রাণী উদ্ধারে বাহাদুরি থাকলেও শিকারী গ্রেফতারে রয়েছে লুকোচুরি! ফলে জীব বৈচিত্র্য হুমকীর মুখে পড়েছে দাবী বন সংশ্লিষ্টদের। যদিও সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় অবমুক্ত পাখি ও হনুমানগুলো।
উখিয়ার থাইংখালী বনবিট কর্মকর্তা বিকাশ দাশ সাংবাদিকদের জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক কিছু দুষ্কৃতকারী সংঘবদ্ধ হয়ে স্থানীয় পাহাড় ও জলাভূমিতে ফাঁদ পেতে পাখি ধরে বাজারে বিক্রি করছিল। খবর পেয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বালুখালী বাজার এলাকায় অভিযান করা হয়। অভিযানের খবর পেয়ে খাঁচা ভর্তি পাখি বাজারে রেখে পালিয়ে যায় শিকারীরা। সেখান থেকে বিভিন্ন জাতের পাখিগুলো উদ্ধার করে বনবিভাগ।
বনবিট কর্মকর্তা বিকাশ দাশ আরো বলেন, উদ্ধার করা পাখিগুলো উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে নিয়ে আসেন বনকর্মীরা। সেখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) জারীন তাসনিম তাহসিন পাখিগুলোকে মুক্ত আকাশে অবমুক্ত করেন।
উখিয়া উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী শফিউল আলম জানান, শীত মৌসুমের শুরুতে ফাঁদ পেতে পাখি নিধন কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন শিকারীরা।
তিনি জানান, অতিথি পাখি নিধন কাজে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার জন্য নিয়মিত অভিযান চালানো হবেও জানান রেঞ্জ কর্মকর্তা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) যারীন তাসনিম তাসিন সাংবাদিকদের বলেন, অতিথি পাখি ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী যারা প্রাকৃতিক সম্পদ ও বন্যপ্রাণী নিধনের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার কক্সবাজারের মহেশখালীতে ‘পরিত্যক্ত বসতঘর’ থেকে বিলুপ্তপ্রায় ১২ টি মুখপোড়া হনুমান উদ্ধার করে বন বিভাগ। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার শাপলাপুর বনবিটের বারিয়াপাড়ায় এ অভিযান চালানো হয় বলে জানান, বনবিভাগের মহেশখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা এস এম এনামুল হক।
তিনি জানান, তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন মহেশখালীর বন থেকে বিলুপ্তপ্রায় ১২টি বন্য হনুমান উদ্ধার করা হয়েছে। খাঁচায় বন্দি করে পাচারের উদ্দেশ্যে রাখা পাহাড়ের একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে এসব বন্য হনুমানগুলো উদ্ধার করে বন বিভাগ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে শাপলাপুরের বারিয়ারছড়ি পাহাড়ি এলাকার একটি বাড়ি রাখা হয়েছিল এসব প্রাণী।
মহেশখালীর শাপলাপুর বিট কর্মকর্তা নুরে আলম মিয়া নাহিদ জানান, বারিয়ারছড়ি এলাকার পাহাড়ের ভেতরে একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে বিলুপ্তপ্রায় পাচারের উদ্দেশ্যে খাঁচায় আটকে রাখা অবস্থায় অভিযান চালিয়ে বাচ্চাসহ ১২টি হনুমান উদ্ধার করে।
নাহিদ বলেন, হনুমান পাচার চক্রে কারা জড়িত তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বন বিভাগের এই কর্মকতা জানান, মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর ও ছোট মহেশখালী পাহাড়ি এলাকায় এখনো বন্যপ্রাণীর বিচরণ রয়েছে। পাহাড় কাটা এবং বন্যপ্রাণী নিধনের কারণে পাহাড়ের জীববৈচিত্র্য বিলুপ্ত হয়ে পড়েছে বলেও মন্তব্য করেন নাহিদ।
পাঠকের মতামত: