ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

কক্সবাজারকে ভিক্ষুকমুক্তকরণ কর্মসূচি শুরু

ইমাম খাইর, কক্সবাজার :: কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা ও ইসলামাবাদের ৩৪ জন ভিক্ষুককে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে জীবিকার্জনের উপকরণ বিতরণের মাধ্যমে কক্সবাজারকে ভিক্ষুকমুক্তকরণ কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর উপহারস্বরূপ জীবিকার্জনের উপকরণ পেয়েছে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, শারীরিক প্রতিবন্ধী ও খেটে খাওয়া অসহায় মানুষেরা।
সোমবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসন পরিচালিত অরুণোদয় স্কুলের মাঠে তাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার উপকরণ বিতরণ করা হয়।
উপকরণসমূহের মধ্যে রয়েছে- রিক্সা, ছাগল, হাঁসমুরগি, সেলাইমেশিন ইত্যাদি। দেয়া হয়েছে হাঁস-মুরগি পালনের ঘর, ২ মাসের খাবার ও প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র।
তার আগে কক্সবাজার সদর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশকে ভিক্ষুকমুক্তকরণের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। সেই আলোকে পুরো জেলায় ভিক্ষুক শনাক্ত করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে কক্সবাজার সদর উপজেলার ২ টি ইউনিয়ন ঝিলংজা ও ইসলামাবাদকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টাকে অগ্রবর্তী করতে জেলার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের একদিনের বেতন দিয়ে দিয়েছেন। এখানে জমা হওয়া ৪৮ লাখ টাকার সাথে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া অনুদান ৫০ লাখ টাকা যুক্ত করে ৯৮ লাখ টাকা হয়। এ ফান্ড থেকেই প্রথম যাত্রায় ৩৪ জনের পেছনে খরচ হচ্ছে প্রায় ৯ লাখ টাকা। ধীরে ধীরে পুরো জেলায় এ কার্যক্রম ছড়ানো হবে। সদরের পরে কুতুবদিয়া, মহেশখালী, উখিয়া-টেকনাফে শুরু করবো এ যাত্রা।
তিনি বলেন, জেলায় এক হাজার ৫০১ জনকে ভিক্ষুক হিসেবে সনাক্ত করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সবাইকে আত্মকর্মসংস্থানমূলক কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসা হবে।
ডিসি বলেন, যাদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে তাদের তদারকি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগামী দু’বছর পর্যন্ত তাদের পেছনে সময় দিয়ে আর যেন ভিক্ষায় না ফেরে তা নিশ্চিত করা হবে। এভাবে কক্সবাজারকে ভিক্ষুক মুক্ত ঘোষনা করা যায়। পর্যটনের স্বার্থে এটি অতীব জরুরি। এ উদ্যোগে প্রশাসনের পাশাপাশি বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসতে অনুরোধ জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুরাইয়া আক্তার সুইটির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান মোল্লা, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল।
স্বনির্ভর বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যয়ে অনুষ্ঠানে কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হামিদা তাহের, জেলা জাসদের সভাপতি নইমুল হক চৌধুরী টুটুল, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল কর, বীর মুক্তিযোদ্ধা মনির আলম চৌধুরী, সাংবাদিক তোফায়েল আহমদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল আলম।
স্বাগত বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুরাইয়া আক্তার সুইটি বলেন, যে রিক্সার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছে তাকে রিক্সা আর হাঁসমুরগি পালনে ইচ্ছুকদের হাঁসমুরগি দেয়া হয়েছে। সবার চাহিদা অনুযায়ী তালিকা করা হয়েছে। সদরের কোথাও যেন ভিক্ষুক না থাকে সেভাবে আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।
যাদেরকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে রিক্সা, অটোরিক্সা প্রদান করা হবে তাদেরকে ফ্রি লাইসেন্স দেয়া হবে বলে অনুষ্ঠানে ঘোষণা দেন কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান।
অনুষ্ঠানে ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান, ইসলামাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর ছিদ্দিক, চৌফলদন্ডী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়াজ করিম বাবুল, পোকখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক আহমদ ও উপকারভোগীসহ তাদের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।

পাঠকের মতামত: