ককসবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঈদগাঁও এলাকার তিন টেক-বাঁক ককসবাজারমুখী লোকজনদের মরণ ফাঁদে পরিণত হয়ে পড়েছে। কোথাও ডানে মোড়,আঁকাবাঁকা রাস্তা বা সতর্কীকরণ চিহ্ন না থাকায় প্রায়শঃ এসব এলাকায় দ্রুতগামী যানবাহন দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। এতে করে ঘটছে প্রাণহানির ঘটনা।
সূত্র মতে, ককসবাজার বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার সময় মহাসড়কে ছোটবড় প্রায় একাধিকটি টেক-বাঁক রয়েছে। তৎমধ্যে মেহেরঘোনা, ঢালার দোয়ার ও নাপিতখালীর ড্যাঞ্জার জোন খ্যাত টেক বাঁক। দুর থেকে এসব স্থানে টেক-বাঁকগুলি দেখা না যাওয়ার কারণে এ সকল টেক-বাঁকে যানবাহন দূর্ঘটনার আশংকা করছেন স্থানীয় চালকরা। তাছাড়া মহাসড়কে অসংখ্য বাঁকের পাশাপাশি চারটির অধিক হাটবাজার থাকায় এটি গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে কালিরছড়া বাজার, মেহেরঘোনা কমিউনিটি সেন্টার, কলেজ গেইট, ঈদগাঁও বাসষ্টেশন, তেতুলতলা ফকিরা বাজার, নাপিতখালী বটতল ও নতুন অফিস বাজার অন্যতম। এসব ষ্টেশন ও বাজারে জীপ,মাইক্রো ও টেক্সী দাঁড় করিয়ে রাখার কারণে যানজটের কবলে পড়তে হয় প্রতিক্ষণে প্রতিমুহুর্তে। এতে করে দূর-দূরান্তের লোকজনদের মহাসড়কে অপেক্ষা করতে হচ্ছে ককসবাজার কিংবা চট্টগ্রাম পৌঁছতে। পাশাপাশি মহসড়কে রয়েছে অসংখ্য খানা খন্দক। চট্টগ্রাম ককসবাজার মহাসড়কের গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। বর্তমানে অন্যতম ব্যস্ত মহসড়ক হিসাবে পরিচিতি পেলেও টেক-বাঁক, খানা খন্দক ও ষ্টেশন ভিত্তিক বাজার এবং ঝুঁকিপূর্ণ অংশের কোন কাজ করা হচ্ছেনা। বেশ কয়েকজন দূরপাল্লার যানবাহন চালকের মতে, নাপিতখালী আর ঢালার দোকান নামক মোড়ের বাঁকটি বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। দ্রুতগতিতে গাড়ি চালিয়ে বাঁকে আসলে গতি নিয়ন্ত্রণ করা যায়না সহজে। যার কারণে দূর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় লোকজনের মতে, ঈদগাঁও স্টেশন থেকে বাজারে নামার মুখে ডান পাশে রিক্সা, সিএনজি ও বাম পাশে রয়েছে সারি সারি রিক্সা। অন্যদিকে ঈদগড় সড়কের মাথায় রিক্সা, যাত্রী চাউনি এলাকায় জীপগাড়ি ও ষ্টেশনের পূর্বপাশে রয়েছে মাইক্রো ষ্টেশন। ফলে দফে দফে যানজট নিত্যব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে বাস ষ্টেশনে। এদিকে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আনসার সার্বক্ষনিক যানজট নিরসনে কর্তব্যরত থাকলেও ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় তা একার পক্ষে সামাল দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ঈদগাঁওতে সাপ্তাহিক শনি ও মঙ্গলবার হাট বসায় উক্ত দিনগুলোতে ঈদগাঁওয়ের পার্শ্ববর্তী পোকখালী , চৌফলদন্ডী, ইসলামপুর, ইসলামাবাদ, জালালাবাদ, খুটাখালী , ভারুয়াখালী ইউনিয়নগুলোর প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষগুলো গরু-মহিষ বেচাকেনার জন্য ঈদগাঁও স্টেশন সংলগ্ন মহাসড়কের উভয় পাশের হাটে চলে আসে। উক্ত দিনগুলোতে মহাসড়কের উভয় পাশে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে গরু বেচা কেনা। অসংখ্য গরু রাস্তার উভয় পাশে দাঁড় করানোর ফলে চলাচলের জায়গা সংকীর্ণ হয়ে পড়ে। যার কারণে গরু ক্রেতা ও সাধারণ মানুষসহ দূরপাল্লার যানবাহন ও ছোটখাট অসংখ্য গাড়ী মহাসড়কের উপর দিয়ে চলাচল করে। এতে মহাসড়কে যানজট ঘটে। সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে নানা কর্মসূচি ও উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও কোন অবস্থাতেই থামানো যাচ্ছে না এই দুর্ঘটনা। এতে প্রায়শঃ অকালেই প্রাণ হারাচ্ছে সব বয়সী মানুষ, পঙ্গুত্ব বরণ করছে অসংখ্য যাত্রী। এসব বিপজ্জনক মোড়ে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে দৃশ্যমান নেই কোন সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড বা নির্দেশনা। এতে যে কোন গাড়ি মোড় ঘুরতেই বিপরীত দিক থেকে দ্রুতগতিতে আসা অপর যানবাহনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। তাই ককসবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে টেকবাঁকে দ্রুততম সময়ে সতর্ক চিহ্ন বসিয়ে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা সময়ের দাবী।
পাঠকের মতামত: