ঢাকা,রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

ওরা ধর্ষক আমরা দর্শক!

:: মাহবুবা সুলতানা শিউলি ::  আমরা দর্শক তাই ধর্ষকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে পারিনা। পারিনা একটু শান্তিমত ঘুমাতে। তাই আমাদের আতংকের মাঝেই দিনগুলো অতিবাহিত করতে হচ্ছে। যে কোনো কাজে বের হলেও আতংকে থাকতে হয় আমার ছোট্ট মেয়েটা এখন কি করছে! ঠিক আছে তো! গোসলে ঢুকলে তখনও ভাবি আমার মেয়েটা না বলে ছাদে একাকী চলে গেলো কি ! ক্লান্তিতে বিছানায় একটু গা এলিয়ে দিলে চোখ বন্ধ করার আগেই আতংকিত হয়ে উঠে যেতে হয়, মেয়েটা কোথায় গেলো !!! এটা কি ধরণের শাস্তি আমাদের উপর! মেয়ে সন্তান জন্ম দিয়ে আজ এদেশের বাবা-মায়েরা কি অপরাধ করেছে যে একটু শান্তিমত ঘুমাতেও পারবেনা আর সারাটাক্ষণ এক অজানা আতংকে আতংকিত থাকতে হবে!?

গত ৫ জুলাই’১৯ শুক্রবার, সন্ধ্যার পর শিশু সায়মার খোঁজ পাচ্ছিল না তার পরিবার। আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নবনির্মিত ভবনটির নবম তলার ফাঁকা ফ্ল্যাটের ভেতরে ৭ বছরের শিশু সায়মাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। খবর পেয়ে রাত ৮টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ওই ভবনের ছয় তলায় পরিবারের সঙ্গে থাকতো সায়মা। বাবা আব্দুস সালাম ঢাকা নবাবপুরের একজন ব্যবসায়ী। দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে সবার ছোট সায়মা। ওয়ারী সিলভারডেল স্কুলের নার্সারিতে পড়ত সে।

আব্দুস সালাম বলেন, ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সায়মা তার মাকে বলে, ‘আমি উপরে পাশের ফ্ল্যাটে যাচ্ছি, একটু খেলাধুলা করতে (সে উপরের ফ্ল্যাটে প্রায়-ই মাসহ/মাছাড়াও নিয়মিত যেত খেলতে) এরপর থেকে নিখোঁজ হয় সায়মা। অনেক খোঁজাখুঁজির পর নবম তলায় খালি ফ্ল্যাটের ভেতরে গলায় রশি দিয়ে বাঁধা ও মুখে রক্তাক্ত অবস্থায় মেয়েকে দেখতে পান।’

এরপর পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ বলেন, প্রাথমিকভাবে সায়মার শরীরে ধর্ষণের আলামত মিলেছে। ধর্ষণের পর তাকে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে শিশুটির উপর পাশবিক নির্যাতনের সব প্রমাণ পাওয়া গেছে।

পুলিশি তদন্তে ধর্ষক হিসেবে রঙমিস্ত্রি হারুনকে শনাক্ত করা হয়। গত ৭ জুলাই সায়মার বাবার দায়ের করা মামলায় তাকে তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার তিতাস থানার ডাবরডাঙ্গা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

প্রতিদিনই পত্রিকার পাতা খুললে দেখা যায়, প্রথম পাতায় বা কোনো না কোনো পাতায় ধর্ষণের ঘটনা নিত্যকার সাধারণ একটি সংবাদ শিরোনাম। এবছরের প্রথমদিনই অর্থাৎ ১/১/২০১৯, সোমবার দিবাগত রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় চার সন্তানের জননী পারুলকে গণধর্ষণ ও তার স্বামী ও সন্তানদের ব্যাপক মারধর করে নরপশু সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীনেতা ধর্ষক সোহেল ও বাকী ধর্ষকদের হয়ে যারা আইনী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে তাদের আমরা কি বলতে পারি? মানবিকতা আজ লুন্ঠিত তাই আতংকিত হয়ে দিনান্তিপাত করাটাই আমাদের প্রাপ্য। আমরা পারিনা ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি জনসম্মুখে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করাতে যাতে ধর্ষক নামক পশুগুলোর মনে সে স্পৃহা কখনো জেগে না ওঠে।
পত্রিকা মারফত জানতে পারি, গতবছর ৩৫৬ জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছিলো আর ২২ জন শিশু মারা যায় আর এবছর এসংখ্যাটি মধ্য জুনের ভিতরই তার অধিক হয়েছে। জানিনা বছর শেষে সংখ্যাটি দ্বিগুণ হবে কিনা!!! অর্থাৎ ৩৯৯ জন শিশু ২০১৯ এর জুন পর্যন্ত ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হয়েছে এবং ১৬ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে এরমধ্যে এক ছেলে শিশুও আছে। শিশু সায়মা ধর্ষণ ও হত্যার একই দিন টিভিতে নিউজ দেখি এক মাদ্রাসার হুজুরের দ্বারা ১২ শিশুর বলাৎকার। আমাদের দেশের ছেলে শিশুগুলোও ধর্ষক নামক নরকীট গুলোর থাবা থেকে রক্ষা পাচ্ছে না।

এখন একটা জরিপের পরিসংখ্যান পাঠক সমীপে পেশ করতে চাচ্ছি। বছরের প্রথম সাড়ে চার মাসে (জানুয়ারি থেকে ১৪ মে) ৩৪৬ জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এ সময় ১ হাজার ৪৯০ জন শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ৪৭০ জন শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। সাড়ে ৪ মাসে ৩৪৬ জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে এর মধ্যে ৩৮ জন শিশু গণধর্ষণের শিকার হয়। প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২২টি এবং ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা ঘটেছে ১৮টি। ১০ শিশু ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর আত্মহত্যা করে। এ ছাড়া ৩৮ শিশু ধর্ষণচেষ্টার শিকার হয়েছে। এগুলো হলো জরিপ চালানোর পর প্রাপ্ত তথ্য। ভিতরে ভিতরে আরও কতশত শিশু এ নির্মমতার শিকার হয়েছে তা কেবল ঐ শিশু ও তার পরিবারই জানেন।

এখন প্রশ্ন হলো, এ বিকৃত নরপশুদের থামাবে কে?

কতটুকু অশ্রু গড়ালে হৃদয় হবে জলে সিক্ত,
কত প্রদীপ শিখা জ্বালালেই জীবন আলোয় উদ্দীপ্ত।
কত ব্যথা বুকে চাপালেই তাকে বলি আমি ধৈর্য,
নির্মমতা কতদূর হলে জাতি হবে নির্লজ্জ।

আমি চিৎকার করে কাঁদিতে চাহিয়া
করিতে পারিনি চিৎকার।
বুকের ব্যথা বুকে চাপায়ে নিজেকে দিয়েছি ধিক্কার।।

নিয়তির ডাকে দিলি যে সাড়া,
ফেলে গেলি শুধু নীরবতা।
যার চলে যায় সেই বোঝে যে হায়,
বিচ্ছেদে কি যন্ত্রণা।
অবুঝ শিশুর অবুঝ প্রশ্ন, কি দিয়ে দেব সান্ত্বনা।
আমি চিৎকার করে কাঁদিতে চাহিয়া
করিতে পারিনি চিৎকার।
বুকের ব্যথা বুকে চাপায়ে নিজেকে দিয়েছি ধিক্কার।।

বিধাতা তোমারে ডাকি বারেবারে,
কর তুমি মোরে মার্জনা।
দুঃখ সইতে দাও গো শক্তি, তোমারি সকাশে প্রার্থনা।

চাহিনা সহিতে আমার মাটিতে,
মজলুমেরই আর্তনাদ।
বিষাদ অনলে পুড়ে বারেবারে
লুণ্ঠিত হবে স্বপ্নসাধ।
আমি চিৎকার করে কাঁদিতে চাহিয়া
করিতে পারিনি চিৎকার।
বুকের ব্যথা বুকে চাপায়ে নিজেকে দিয়েছি ধিক্কার

এবার আসি বিশ্লেষণে।
বিকৃত মানসিকতা ছাড়াও বিশেষ করে পারিবারিক বিরোধ, প্রতিহিংসা, লোভ-লালসা ও স্বার্থের দ্বন্দ্বের বলি হচ্ছে শিশু থেকে শুরু করে যেকোনো বয়সী নারীরা। এরকম ঘৃণ্যনীয় অপরাধ করার ব্যাপারে যে মনস্তাত্ত্বিক শক্তি দরকার, অপরাধীদের এই শক্তির জোগানদাতা কে? এই প্রশ্নটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বিকৃত যৌনাকাঙ্খা, যৌনাচার ও বিকৃত মানসিকতা ছাড়াও অধিকাংশ গণধর্ষণ কেসে বা একক ধর্ষণের পেছনে অপরাধীদেরকে শক্তি জোগায় তার রাজনৈতিক পরিচিতি অথবা আর্থিক শক্তির জোর। ধর্ষণ অপরাধের প্রণোদক আর্থিক শক্তিরও পেছনে সাহস জোগায় কালো টাকা ও রাজনৈতিক ক্ষমতা। এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী যৌন নির্যাতনের শিকার ও এর প্রতিবাদকারী সাহসী কন্যা নুসরাত জাহান রাফীকে আগুণে পুড়িয়ে নির্মমভাবে হত্যাকারীদের সঠিক বিচার কবে পাবো তা আমরা নিশ্চিত না।

আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি আকর্ষণ করছি। ধর্ষণকারীদের সর্বোচ্চ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি জনসম্মুখে মৃত্যুদন্ড দাবি করছি।

যদিও ধর্ষকরা ঠিকই আটক হয়। কিন্তু আমাদের সংশয় দূর হবেনা কোনভাবেই। কারণ অধিকাংশ সময় দেখা যায়, ধর্ষকরা রাজনৈতিক শক্তিতে বলীয়ান হয়ে এসব অপকর্ম করে নির্ভয়ে। আবার অধিকাংশ ধর্ষণ ও হত্যাকান্ডের ঘটনার সাথে রাজনীতি জড়িয়ে যায়। যার দরুন অনেক সময় এসব অপরাধের শাস্তি দেবার ক্ষমতা স্থানীয় প্রশাসনের থাকেনা।
আরো দেখা যায়, ধর্ষক বা ধর্ষকগোষ্ঠী কোনো না কোনোভাবে ক্ষমতাবান রাজনৈতিক শক্তির অংশীদার। ধর্ষক ভাবে, তার অপরাধ যাই হোক না কেন ক্ষমতা আর টাকার জোরে সে প্রচলিত আইন ও আদালতকে তার নিজের পক্ষে ব্যবহার করতে পারবে। এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় ধর্ষক বা ধর্ষকগোষ্ঠীর রাজনৈতিক, আর্থিক ক্ষমতার কাছে মাথা নত করে থানা, পুলিশ, তদন্ত কর্মকর্তা, প্রশাসন, আদালত, সাক্ষী, ধর্ষণ আলামত পরীক্ষাকারী চিকিৎসক ও হাসপাতাল। ফলে অপরাধীরা এক ধরণের দায়মুক্তি পেয়ে যায়।
আমাদের প্রত্যাশা, এ ধর্ষণের বিচারটিতে যেনো কোনো হেলাফেলা করা না হয়। বঙ্গমাতা আপনার কাছে আহবান জানাই, দ্রুত বিচারকার্যের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করুন। আপনার স্বপ্নের এ সোনার বাংলাকে কলংকিত হতে রক্ষা করুন। এখনই উপযুক্ত সময়। হে অগ্নিকণ্যা, আপনার সুশাসনের চূড়ান্তরুপ আমরা আগেও দেখেছি, এখনও দেখতে চাই হে বাংলার মাতা।

নারীরা আজ কোথাও নিরাপদ নয়। পরিবারের সদস্য, শ্বশুরালয়, কর্মস্থলের সহকর্মী ও গৃহকর্তা-কর্ত্রী কারো কাছেই যেন নিরাপদ নয় নারী-সমাজ। আমরা এক সামাজিক অস্থিরতার মধ্যে প্রতিনিয়ত বিচরণ করছি। ধর্ষণের বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান থাকলেও সে বিধান কার্যত বাস্তবায়ন হচ্ছেনা ধর্ষকের ক্ষেত্রে। একজন খুব সহজেই মুক্ত হওয়ার পর আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে ধর্ষকগোষ্ঠী। এভাবে সহসা বিনা বিচারে ধর্ষণকারীরা পার পেয়ে যাওয়ার ফলে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে ধর্ষণের ঘটনা।
এ ধরনের পাশবিকতায় আমাদের সামাজিক নিরাপত্তার সংকট কতোটা প্রকট, তার ইঙ্গিত দেয় ভারতে ঘটে যাওয়া হৃদয়বিদারক, অবর্ণনীয় স্বরণকালের ধর্ষণ অপরাধের মাইলফলক, সর্বোচ্চ বিকৃত মানসিকতার ইতিহাসের আঁতকে ওঠা লোমহর্ষক ধর্ষণের শিকার ৮ বছরের শিশু আসিফার ওপর ঘটে যাওয়া পাশবিকতা..!!!

বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হওয়ায় ধর্ষণ অপরাধ আরো প্রকট বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সমাজপতিরা ধর্ষকের সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করেন। আবার অনেক সময় রক্ষকই ভক্ষকের ভুমিকা নেয়। তাই অনেকক্ষেত্রে ঘটনার শিকার দরিদ্র পরিবারগুলো সামাজিক বাধ্যবাধকতা মানতে গিয়ে এমন নির্মমতার বিচার চাওয়ারও সাহস দেখান না।

নারী ও শিশু নির্যাতনের কঠোর আইন বাংলাদেশে বিদ্যমান আছে। কিন্তু সেগুলোর যথাযথ প্রয়োগ নেই। বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা, আইনের শাসনের অকার্যকারিতা, প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপ প্রভৃতি কারণে নারী ও শিশু ধর্ষণ বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না। এই জন্যই দিনে দিনে শিশু ও নারী ধর্ষণ বেড়েই চলেছে।
আর প্রতিনিয়ত এতটা নৃশংসতা আমাদের মানবিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এধরণের জঘণ্যতার শিকার নারীরা, আমাদেরই মা-বোনেরা, আমাদের নিষ্পাপ শিশুকণ্যারা, তোমরা আমাদের ক্ষমা করো…! তোমাদের জন্য আমরা কিছুই করতে পারছি না। আমরা কি পারি না ধর্ষণের অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করার জন্য আন্দোলন করতে! তবেই হয়তো আমাদের প্রতিদিন পত্রিকায় পাতায় দেশ ও বিদেশের কোথাও না কোথাও ঘটে যাওয়া এ ঘৃণ্য অপরাধের সংবাদ আর পড়ার সুযোগ হবে না বা আস্তে আস্তে কমে যাবে!

পরিশেষে বলতে চাই, আমাদেরকে আরো আরো বেশি মানবিক হতে হবে। যা আমাদের শিখাবে নিজ পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র। আর সেটা যদি শিখতে পারি তাহলে এরকম নির্মম নৃশংসতার শিকার হতে হবেনা আমাদের মা-বোনদের।

কাজেই, আসুন আমরা একত্রিত হই, একসুরে বলি, “ধর্ষণ অপরাধে সামাজিক আন্দোলন চাই ও দৃষ্টান্তমূলক আইনের প্রয়োগ চাই।”

মাহবুবা সুলতানা শিউলি
মেম্বার, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ
কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।
ইমেইল:[email protected]

পাঠকের মতামত: