নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, সংরক্ষিত বনাঞ্চল দেখভাল এবং বনভূমি রক্ষার জন্য বনবিভাগ নামের একটি সরকারি সংস্থা থাকলেও তা কাগজে–কলমেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে। বন কর্মকর্তা–কর্মচারীদের যোগসাজসে এখানকার বনাঞ্চল দিন দিন বৃক্ষ শূন্য হওয়ার পাশাপাশি সংরক্ষিত বনাঞ্চল অবৈধ বসতি গড়ে উঠার পেছনে বনবিভাগের কর্মকর্তাদের আচরণ রহস্যজনক বলেও অভিযোগ উঠেছে পরিবেশ সচেতন মহলে।
সরজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চকরিয়া উপজেলার সংরক্ষিত বিশালায়তনের বনভূমি বলতে গেলে কার্যত অরক্ষিত হয়ে রয়েছে। সবুজের সমারোহের পরিবর্তে এখন কোথাও কোথাও আছে শুধু ন্যাড়া পাহাড়। আবার কোন কোন স্থানে বনদস্যু ও ভূমিদস্যুদের করাল গ্রাস থেকে ন্যাড়া পাহাড়ও রক্ষা করা যাচ্ছে না। সেখানে শত শত অবৈধ বসতি স্থাপনের পাশাপাশি পাহাড় কেটে সাবাড় করে বিক্রি করা হচ্ছে মাটি।
বনবিভাগ সূত্র জানায়, কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন ফুলছড়ি রেঞ্জের দুটি, ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের ৫টি, চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের চুনতি রেঞ্জের ৩টি, পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া রেঞ্জের ১টিসহ মোট ১১টি বনবিটের অধীনে প্রায় ৪০ হাজার একর বনভূমিতে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট ও সৃজিত বৃক্ষে পরিপূর্ণ ছিল এক সময়। এসব নান্দনিক বনরাজিতে পরিপূর্ণ চকরিয়া ছিল যেন সৌন্দর্য্যের অপূর্ব লীলাভূমি। বনাঞ্চলের গর্জন, চাপালিস, তেলসুর, চাম্পাফুল, জাম, গামারী, বৈলামসহ সৃজিত সেগুন প্রজাতির বৃক্ষ। এছাড়া হরেক প্রজাতির বাঁশ, বেতসহ লতা–পাতার সমারোহ। বর্তমানে বৃক্ষশূন্য পাহাড়গুলো কালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেও বেশিরভাগ বনভূমি উজাড় হয়ে গেছে। সরজমিন আরো দেখা গেছে, চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কের দুইপাশ জুড়ে কিছু গর্জন, সেগুন ও জাম গাছ দেখা গেলেও বনের ভেতরের দৃশ্য বড়ই বেদনাদায়ক। বৃক্ষশূণ্য পাহাড়গুলো দিনদিন বেদখল হয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে অসংখ্য পাড়ায় পরিণত হয়েছে পাহাড়ি জনপদ। বনদস্যু ও ভূমিদস্যুরা বিনাবাধায় বিক্রি করছে ন্যাড়া হয়ে পড়া সংরক্ষিত বনাঞ্চলের বিপুল পরিমাণ জায়গা। আবার অনেকে ইচ্ছেমতো পাহাড় নিধন করে বিক্রির জন্য মাটি নিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। বনবিভাগ এক সময় বন রক্ষায় সচেষ্ট থাকলেও বর্তমানে সেই তৎপরতা বনকর্মীদের নেই। তবে কালে–ভাদ্রে পাহাড়ে থাকা গাছগুলো প্রভাবশালী বনদস্যুরা লুট করে নিয়ে গেলে আদালতে মামলা দায়ের করা হয় চুনোপুটিদের বিরুদ্ধে। মূলত বনকর্মীরা তাদের দায়িত্বের প্রতি চরম অবহেলার অংশ হিসেবে প্রভাবশালী বনদস্যুদের বাদ দিয়ে চুনোপুটিদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে যান কর্মস্থল ত্যাগের আগে।
ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের ফাঁসিয়াখালী বিটের অধীনে রয়েছে বন্যহাতির অভয়াশ্রম। কিন্তু এখন সেখানে দেখা মেলবে ন্যাড়া পাহাড় আর পাহাড়। এতে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট বনে আজ থেকে তিন যুগ আগে শত প্রজাতির বন্যপ্রাণি থাকলেও বর্তমানে গুটিকয়েক হাতির পাল ছাড়া অন্যসব বন্যপ্রাণি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিশেষ করে হরিণ, বন মোরগ ও শিয়ালের চিৎকার আর শোনা যায়না। এ প্রসঙ্গে পরিবেশ সচেতন একাধিক ব্যক্তি বলেন, ‘সরকার বনজ সম্পদ রক্ষার জন্য যতই পদক্ষেপ গ্রহণ করুক না কেন, যদি বনবিভাগের কর্মকর্তাদের সৎ উদ্দেশ্য না থাকে তাহলে কোন অবস্থাতেই সংর িত বনাঞ্চল রক্ষা করা যাবে না।
ফাঁসিয়াখালী বিটের নিয়ন্ত্রণাধীন উচিতার বিল মৌজার কয়েকশত হেক্টর সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ন্যাড়া পাহাড়ে গত কয়েকবছর আগে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে সামাজিক বনায়নের অধীনে বাগান সৃজনের উদ্যোগ নেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে উপকারভোগী নির্বাচন করে পহ্মট আকারে বরাদ্দ দিয়ে সামাজিক বনায়নের অধীনে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে সামাজিক বনায়ন বরাদ্দ দেওয়া হয়। সেখানে রোপন করা হয় লাখ লাখ চারা। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধি, দখলবাজ–সন্ত্রাসীদের অপতৎপরতার মুখে মুখ থুবড়ে পড়েছে সেই সামাজিক বনায়ন। সেখানে এখন দেখা মেলবে শত শত অবৈধ বসতি ও পরিবেশ বিধ্বংসী ইটভাটার রাজত্ব। শুধু তাই নয়, আলোচিত উচিতার বিল মৌজার অন্তত অর্ধ শতাধিক পাহাড় কেটে সাবাড় করে সেই মাটি বিভিন্ন পরিবহনে করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিক্রির উদ্দেশ্যে।
পরিবেশ সাংবাদিক ফোরাম চকরিয়ার সভাপতি এম আর মাহমুদ বলেন, ‘বনবিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের দাপটের কারণে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। আবার সব কর্মকর্তা যে একেবারে সাধু তাও বলা দুষ্কর। এতে একদিকে প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধি ও বনদস্যুদের দাপটের পাশাপাশি বন কর্মকর্তাদের নীরব দর্শকের ভূমিকার কারণে চকরিয়ার সেই চিরচেনা সবুজের সমারোহ একেবারে লোপ পাচ্ছে। বিশেষ ডুলাহাজাা বিটের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কাঠ জ্বালানি হিসেবে ইটভাটা ও তামাক চুল্লিতে ব্যবহারের কারণে দিন দিন পাহাড়ি সমতল ভূমিতে এবং ন্যাড়া পাহাড়ে পরিণত হচ্ছে। তবে এসব ব্যাপারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য ডুলাহাজারা বিট কর্মকর্তাসহ বেশ কয়েকটি বনবিটের কর্মকর্তা এবং রেঞ্জ কর্মকর্তার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তারা এই বিষয়ে কোন বক্তব্য বা মন্তব্য করতে রাজি হননি।
- কুতুবদিয়ায় আলোচিত ৪ হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেফতার দাবিতে মানববন্ধন
- কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি প্রত্যাহার
- কক্সবাজারের বনে ১২ হনুমান উদ্ধারের ১০ দিন পর ৫৮টি বন্য পাখি উদ্ধার
- আ.লীগ নেতাদের সঙ্গে গায়েবি মামলার আসামি এবি পার্টির নেতা
- শান্তি-শৃঙ্খলা আনতে প্রয়োজন আল্লাহর আইন ও সৎ লোকের শাসন -চকরিয়ায় মাসুদ সাঈদী
- চকরিয়া শহর পরিস্কারের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের ১০১ দিবস উদযাপন
- চকরিয়ায় অবৈধ বালু উত্তোলন ও পাচার বন্ধে বনবিভাগের অভিযান, দুইটি ট্রাক জব্দ
- চকরিয়ায় প্যারাবন নিধনের মামলায় আসামি নিরীহ মানুষ
- পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট, চিকিৎসা সেবা ব্যাহত
- চকরিয়ায় সেনাবাহিনীর হাতে নারীসহ তিনজন গ্রেফতার
- মেরিন ড্রাইভ সড়কে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক নিহত
- চকরিয়ায় ব্যবসায়ীকে ডেকে নিয়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে দুই লাখ টাকা ছিনতাই
- কুতুবদিয়ায় গর্তে ১০ লক্ষ মণ পুরাতন লবন,লোকসানের শংকা চাষীরা
- শান্তি-শৃঙ্খলা আনতে প্রয়োজন আল্লাহর আইন ও সৎ লোকের শাসন -চকরিয়ায় মাসুদ সাঈদী
- পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকট, চিকিৎসা সেবা ব্যাহত
- চকরিয়া আসছেন চরমোনাই পীর মুফতি রেজাউল করিম
- রামুতে ল্যাপটপ পেলেন ৮০ নারী ফ্রিল্যান্সার
- চকরিয়া শহর পরিস্কারের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের ১০১ দিবস উদযাপন
- চকরিয়ায় সাবেক এমপি জাফর সাঈদি সহ আওয়ামী লীগের ২৮৭ জনের বিরুদ্ধে থানায় নতুন মামলা
- মেরিন ড্রাইভ সড়কে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক নিহত
- চকরিয়ায় সেনাবাহিনীর হাতে নারীসহ তিনজন গ্রেফতার
- চকরিয়ায় আওয়ামিললীগ ক্যাডার নজরুল সিণ্ডিকেটের দখলে ৩০ একর বনভুমি:
পাঠকের মতামত: