ঢাকা,সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

উচিতারবিলে সংরক্ষিত বনে পাহাড় কাটার ঘটনাস্থল ও ইটভাটা পরিদর্শন পরিবেশ অধিদপ্তরের

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের উচিতারবিল মৌজায় সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতর পাহাড় কাটার অকুস্থল পরিদর্শন করেছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি দল। এ সময় তারা সেখানে একাধিক পয়েন্টে পাহাড় সাবাড় করার চিত্র সরজমিন প্রত্যক্ষ করেন। এছাড়াও সেখানে বন উজাড় করে গড়ে তোলা পরিবেশ ছাড়পত্রহীন অবৈধ ইটভাটাও পরিদর্শন করেন দলটি। ইটভাটা পরিদর্শনের সময় সেখানে জ্বালানী হিসেবে বন উজাড় করে সংগ্রহকৃত বিপুল পরিমাণ লাকড়ির স্তুপের দৃশ্যও দেখতে পান।

বৃহস্পতিবার দুপুর বারোটার দিকে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের ওই দল উচিতারবিল পরিদর্শন করেন। এতে নেতৃত্ব দেন কক্সবাজার কার্যালয়ের পরিদর্শক জাহানারা ইয়াছমিন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পাহাড় কাটার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসা পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের পরিদর্শক জাহানারা ইয়াছমিন উপরোক্ত বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

পরিদর্শক জাহানারা ইয়াছমিন চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘উচিতারবিলে পাহাড় নিধনের সংবাদ পেয়ে সরজমিন পরিদর্শন করতে গিয়েছিলাম। এ সময় একাধিক স্থানে পাহাড় কাটার দৃশ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া সেখানে জনৈক গিয়াস উদ্দিনের জিএলবি নামক ইটভাটাও পরিদর্শন করা হয়। এ সময় সেখানে লাকড়ির স্তুপ দেখা গেছে। যা জ্বালানী হিসেবে ইটভাটায় ব্যবহৃত হবে।

বনের ভেতর এই ইটভাটার পরিবেশ ছাড়পত্র নেই জানিয়ে পরিদর্শক বলেন, সরজমিন পরিদর্শনকালে পাওয়া তথ্যাদি সচিত্র সহকারে লিখিতভাবে ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করা হবে। এর পর প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত গত মঙ্গলবার চকরিয়া নিউজ ডটকম সহ বিভিন্ন পত্রিকায় উচিতারবিল মৌজার উচিতারবিলের বিশাল পাহাড় কেটে মাটি ডাম্পার ভর্তি করার সময় দুই শ্রমিক আহত হন। নিচে অবস্থান করে একদল শ্রমিক ওই পাহাড়ের মাটি কাটার সময় ওপর থেকে পাহাড়ের আস্ত একটি অংশ ধসে পড়লে সেখানে চাপা পড়েন তিন শ্রমিক। এ সময় অন্য শ্রমিকরা দ্রুত তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
তবে পাহাড়খেকোরা আইনি ঝামেলায় পড়তে পারেন বিধায় আহত দুই শ্রমিককে হাসপাতালে ভর্তি না রেখে দ্রুত নিজেদের হেফাজতে নিয়ে যান।
আহত দুই শ্রমিক হলেন ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ভেণ্ডিবাজার গ্রামের মোবারক আলীর ছেলে আবুল বশর (৩০) ও নয়াপাড়ার আবুল হাসেমের ছেলে মো. জুবায়ের (২৮)।

এলাকাবাসী ও পরিবেশ সচেতন লোকজনের অভিযোগ, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের উচিতারবিল মৌজার ও নয়াপাড়ার অন্তত সাতটি স্থানে দেদারসে চলছে পাহাড় কাটা।

পরিবেশ বিধ্বংসী এই কর্মকাণ্ডে সরাসরি জড়িত রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিনের গাড়িচালক আবদুল হামিদসহ পাহাড় খেকো চক্র।

 

পাঠকের মতামত: