কক্সবাজারের উখিয়ায় সন্ত্রাসী হামলায় কলেজ ছাত্রলীগ নেতা সহ ৭জন হতাহত হয়েছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত ৩জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উখিয়া সদরে ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এ ঘটনায় থমথমে পরিস্থিতি মোকাবেলায় উপজেলা সদরে অতিরিক্ত পুলিশ, বিজিবি ও আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলা সদরে এ সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে উপজেলা সদরের উখিয়া উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠে চলমান তাঁত শিল্প ও বস্ত্র মেলায় কেনাকাটাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ফলিয়াপাড়া গ্রামের মোঃ কালু হাজির ছেলে উখিয়া কলেজের ২বর্ষেও ছাত্র ও কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ন আহবায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন শাহীন (১৯) ও গরু বাজার এলাকার দুবাই প্রবাসি মোঃ কালুর মাদকাসক্ত ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের সাথে কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটে। ওই সময় মেলা কর্তৃপক্ষ উভয় শান্ত করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে তুলে। পরবর্তীতে রাত ১টার দিকে মেলা শেষে বাড়ী ফেরার পথে উখিয়া সদরের ছালাম বিল্ডিংয়ের সামনে পুর্ব থেকে উৎপেতে থাকা সশস্ত্র সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীর আলম (২৩) পেছন থেকে দৌড়ে এসে ছাত্রলীগ নেতা শাহীনকে এলোপাতাড়ী ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। এসময় গুরুতর রক্তাক্ত অবস্থায় ছাত্রলীগ নেতাকে স্থানীয় লোকজন দ্রুত উখিয়া হাসপাতাল হয়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়। অন্যদিকে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী জনতা সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীর আলম ও তার সহযোগিদের ধাওয়া করে ধরে গণপিঠুনী দেয়।
এসময় স্থানীয় তাদেরও উদ্ধার করে কক্সবাজার হাসপাতালে প্রেরণ করেন। তৎমধ্যে গুরুতর আহত ঘিলাতলি গ্রামের ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ নুর নিশান (১৯), নাছির উদ্দিন (২০), মিজানুর রহমান (২০), সুশান্ত দাশ ছানি (১৬), সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীর আলম (২৩)কে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও কক্সবাজার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে। উখিয়া ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন মিথুন ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইউপি সদস্য সরওয়ার কামাল পাশা বলেন, ছাত্রলীগ নেতার হত্যাকারী জাহাঙ্গীর আলম একজন পেশাদার মাদকাসক্ত ও বখাটে। সে মা-বাবার অবাধ্য ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির। উক্ত সন্ত্রাসীকে আটক করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবী জানান। এ ঘটনায় উখিয়া উপজেলা সদরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গতকাল শুক্রবার সকালে উখিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল মালেক মিয়া, উখিয়া আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক, ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। যে কোন ধরনের অনাকাঙ্গিত পরিস্থিতির মোকাবেলায় উপজেলা সদরে অতিরিক্ত পুলিশ, আনসার ও বিজিবি টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুর ২ টার দিকে নিহত ছাত্রলীগ নেতার লাশ ময়না তদন্ত শেষে ফলিয়াপাড়া গ্রামের বাড়ীতে আনা হলে অসংখ্য শোকাহত ছাত্রলীগ নেতাকর্মী, সাধারণ লোকজন ভীড় করে। শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে উখিয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে নিহত ছাত্রলীগ নেতার জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি এবং ঘটনার সাথে জড়িতদের তদন্ত পুর্বক গ্রেফতারের জোর তৎপরতা চালানো হচ্ছে উখিয়া থানার ওসি জানিয়েছেন।
পাঠকের মতামত: