ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

ঈদগাঁওতে সোনালী ধানের শীষে কৃষকের হাঁসি!

সেলিম উদ্দীন, ঈদগাঁও, কক্সবাজার প্রতিনিধি ::    কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও’র বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে সবুজ ধানের সোনালী শীষের সমারোহ। ধান ক্ষেতগুলোর সবুজের সমারোহ দেখলে ধনে ধানে পুষ্পে ভরা, আমাদের এই বসুন্ধরা কথাটির স্বার্থকতা খুঁজে পাওয়া যায় ওই আমন ধানের সোনালী শীষ দেখে। যতদূর চোখ যায় ততদূর মাঠে মাঠে হাওয়ায় দোল খাচ্ছে অক্লান্ত পরিশ্রমী কৃষকের হাতের ছোঁয়ার ধানগাছ। কৃষি প্রধান দেশ বাংলাদেশ। অর্থনৈতিক দিক থেকে কৃষকই বাংলাদেশকে অনেকটাই টিকিয়ে রেখেছে। তারই লক্ষে বাংলাদেশ সরকারের ঘোষিত উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করার ভাবনাটা সার্থক হতে চলেছে কৃষকের মাঠে সবুজে শ্যামলে ভরা ধান ক্ষেতে। চলমান রয়েছে সরকারের কৃষি বান্ধব কর্মসূচী, সাথে কৃষকের অক্লান্ত পরিশ্রম, অনুকূল আবহাওয়া, সার, কীটনাশকসহ বাজারে কৃষি উপকরণের পর্যাপ্ত সরবরাহ, সহনশীল দাম, সহজলভ্যতা ও সেচের জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের সরবরাহসহ আবাদ উপযোগী পরিবেশ ইত্যাদি বিবেচনায় চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা।

সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার বৃহত্তর ঈদগাঁও’র ৬টি ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এসব জমিতে উৎপাদিত ধানের সোনালী শীষ এখন বাতাসে দোল খাচ্ছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ধান কাটা-মাড়াই শুরু হবে বলে জানা গেছে এবং অনেকেই ধান কেটে বাড়িতে নিতে শুরু করেছে। নতুন ধান উঠবে কৃষকের গোলায়। সোনালী ধান ঘরে তোলার স্বপ্নে চাষিরা এখন বিভোর। গৃরস্থ আর কৃষাণ-কৃষানিরা গোলা, বাড়ির আঙ্গিনা পরিষ্কার করার জন্য ব্যস্ত সময় পার করছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষক ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা এ বছর বাম্পার ফলনের আশা করছেন। উৎপাদনেও লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রমের প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের। অনেক কৃষকরা এবার আমন ধানের বীজতলা করেছে আধুনিক পদ্ধতিতে। আলোর ফাঁদ দিয়ে সনাক্ত করেছে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় ক্ষেতের পোকামাকড়। কৃষি অফিসের অত্যন্ত জরিপ কার্যক্রমের আওতায় আনা হচ্ছে পিছিয়ে পড়া কৃষকদের। ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে পার্চিং পদ্ধতির ব্যবহার বলে জানা গেছে। উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক পর্যবেক্ষণ আর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে বাড়ছে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা।

প্রান্তিক কৃষক সদরের জালালাবাদ ইউনিয়নের মোহনভিলার গ্রামের কবির, ফরাজি পাড়া গ্রামের মো: আলী, এ বছর ৪ কানি মত জমিতে আমন আবাদ করছেন। তারা জানান, ধান ক্ষেতের পাশে দাঁড়ালে বুক জুড়িয়ে যায়। দেখলে মনে হয় সোনালী শীষে যেনো স্বপ্নের হাঁসি ফুটে ওঠে সকল কৃষকদের। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গত বছরের তুলনায় এবার অধিক ফলন হবে বলেও আশা করছেন তারা। তারা আরও বলেন, সেচ খরচ এবং শ্রমের অধিক মূল্য ও কৃষি শ্রমিকের কিছু সমস্যা থাকলেও অনুকূল আবহাওয়ায় সঠিক সময়ে পর্যাপ্ত সার, কীটনাশক ও বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়ায় এ বছর আমন ধানের ফলন খুবই ভাল হবে বলে আশা করেন। তাছাড়া বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল বাড়ি নিয়ে গোলা ভর্তি করা পর্যন্ত অনেক খরচ তাই ধানের বাজার দামটাও বেশি আশা করছেন কৃষকেরা সংশ্লিষ্টদের কাছে।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে অর্জিত লক্ষ্যমাত্রার কথা উল্লেখ করে বলেন, আমন ধানের বাম্পার ফলন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে আমরা মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন ধরণের কাজ করেছি, এখনও করে যাচ্ছি। কৃষকরা যাতে লাভবান হতে পারে এবং কোন প্রকার সমস্যায় না পড়েন এ জন্য আমরা সার্বক্ষণিক নজর এবং পরামর্শ দিয়েছি। আশা করি বিগত মৌসুমের মতো এবারও আমন ধানের বাম্পার ফলন হবে।

পাঠকের মতামত: