নুরুল আমিন হেলালী, কক্সবাজার ::
মুসলমানদের বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে সদর উপজেলার অন্যতম বৃহৎ কোরবানির পশুর হাট ঈদগাঁও বাজারে কেনা-বেচা জমে উঠেছে । সরেজমিনে দেখা যায়, ঈদগাঁও বাসষ্টেশন থেকে প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে মহাসড়কের উপর স্থানীয় ও দূর-দূরান্ত থেকে আগত ব্যবসায়ীদের নিয়ে আসা গরু, মহিষ, ছাগলে জমজমাট পশুরহাট। এমনকি বেড়েছে প্রচুর ক্রেতা সমাগমও। সদর উপজেলায় প্রায় ৮টি স্থানে কোরবানীর গরু-ছাগলের হাট বসলেও দেখে মনে হচ্ছে এটিই হচ্ছে বড় পশুরবাজার। সবচেয়ে বৃহৎ বাজারটিতে যেমনিভাবে গরুসমাগম, তেমনিভাবে রয়েছে দুর-দুরান্ত থেকে আগত ক্রেতাও। তবে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাজারে বেশি রয়েছে দেশীয় গরুর চাহিদা। অপরদিকে চাহিদার সাথে পাল্লাদিয়ে বাজারে গরু-মহিষ যথেষ্ট পরিমাণ থাকলেও ক্রেতাদের অভিযোগ বিক্রেতারা গতবছরের চেয়ে দাম হাঁকাচ্ছে অনেক বেশী। সদর উপজেলায় ঈদগাঁও ও খরুলিয়ায় উপজেলা প্রশাসন থেকে বৈধভাবে প্রায় কোটি টাকায় বাজার ইজারা নিলেও সদরের বিভিন্ন জায়গায় ঈদুল আজহাকে ঘিরে অবৈধভাবে আরও প্রায় ৬টি স্থানে পশুর হাট বসার অভিযোগ ঈদগাঁও ইজারাদার রমজানুল আলম কোম্পানীর। বাজার ঘুরে গরু ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বৃহত্তর ঈদগাঁও ছাড়াও পাশ^বর্তী ঈদগড়, রামু, চৌফলদন্ডী, জোয়ারিয়ানালা, উখিয়া-টেকনাফ, খুটাখালী, ডুলাহাজারা, চকরিয়া, পেকুয়া, চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী, আনোয়ারা, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চন্দনাইশ, পার্বত্য লামা-আলীকদমসহ প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে এ বাজারে কোরবানীর পশু ক্রয়ের জন্য ক্রেতারা ভীড় জমাচ্ছে। বড়, মাঝারী, ছোট আকৃতির গরু-মহিষের বিপুল সংগ্রহ রয়েছে এ বাজারে। সাপ্তাহিক ২দিন শনিবার ও মঙ্গলবার গরু বেচা-কেনা হয় এ বাজারে। ৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার থেকে পুরোদমে কোরবানীর পশু ক্রয়-বিক্রয় শুরু হয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। গরুর পাশাপাশি মহিষ, ছাগল, ভেড়াও বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর কোরবানির পশুর দাম একটু বেশি। বাজারে সবচেয়ে বড় স্থানীয় বড়তলী পাড়া থেকে আনা নুর হোসেনের পালিত গরুটির দাম হাঁকানো হয়েছে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা। বড় গরুর চেয়ে মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা ক্রেতাদের মাঝে বেশি। এ জন্য মাঝারী ও ছোট সাইজের পশুর দাম বেড়ে আকাশচুম্বি বলে অভিযোগ মধ্য ও নি¤œ আয়ের ক্রেতাদের। ঈদগাঁও গরু বাজার ইজারাদার রমজান কোম্পানী জানান, ক্রেতা-বিক্রেতাদের সুবিধার্থে পর্যাপ্ত লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। লেনদেনে জাল নোটের ছড়াছড়ি রোধ কল্পে জাল টাকা সনাক্ত করণের মেশিন বসানো হয়েছে। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ অসুস্থ কিংবা কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা পশু নির্ণয়ের জন্য হাটে পশু চিকিৎসক না থাকায় তারা একটু হলেও সঙ্কিত। অন্যদিকে ঈদগাঁও বাজারে পশু ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের কাছ থেকে হাসিল নেওয়ার অভিযোগ ক্রেতাদের। ইজারাদার এ অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, আমরা প্রতিটি বিক্রিত গরু-মহিষ থেকে সমান হারে রশিদ সহকারে হাসিল নিচ্ছি তবে শতকরা হিসেবে নিলে আরও বেশি আসত। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো:শাহিনুর ইসলাম বলেন, বাজারে পশু চিকিৎসক রাখার জন্যে ইজারাদারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং ক্রেতাদের কাছ থেকেও হাসিল নেয়ার বিধান রয়েছে। ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এস আই দেবাশিষ সরকার জানান, পশুর হাটে যে কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা প্রতিহত করতে পুলিশের পক্ষ থেকে সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পাঠকের মতামত: