ডেস্ক নিউজ ::
রাষ্ট্রপরিচালনায় থাকলে সাধারণত জনপ্রিয়তা হ্রাস পায়, সেখানে বিগত বছরগুলোতে রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের যৌথ সভার সূচনা বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সাধারণত রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গেলে অনেক সময় সরকার ধীরে ধীরে মানুষের কাছ থেকে হারিয়ে যায় বা তাদের জনপ্রিয়তা হ্রাস পায়। কিন্তু আল্লাহর রহমতে আমরা আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে জনগণের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করেছি, জনপ্রিয়তা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।’
জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির কারণে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এবারের নির্বাচন-যেটা হয়ে গেল যদি নির্বাচনের দিক তাকান, দেখবেন সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছে। যেটা অতীতে কখনো দেখা যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘এবার সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ আওয়ামী লীগকে সমর্থন জানায়। এমনকি ব্যবসায়ী সম্প্রদায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছে। কৃষক, শ্রমিক, শিক্ষক, ছাত্র- সবচেয়ে বড় কথা যারা প্রথমবারের ভোটার, নবীন ভোটার-সকলেই আওয়ামী লীগ সরকারকে আবারা চেয়েছে, তাদের সেবা করার জন্য মানুষ ভোট দিয়েছে।’
নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের ভরাডুবির কারণ বলতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘নির্বাচনকে তারা (বিএনপি-জামায়াত) মনে করেছে ব্যবসা। টিকিট বেচে তারা কিছু পয়সা কামাই করে নিয়েছে কিন্তু নির্বাচনের প্রতি তাদের খুব একটা নজর ছিল না। জাতীয়-আন্তর্জাতিকভাবে যখন সার্ভে (জরিপ) করা হয়েছিল, সেই সার্ভেতে তখন থেকে স্পষ্ট যে আওয়ামী লীগকে জনগণ চায়। জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে এবং আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে। বাণিজ্য করার ওপর তারা গুরুত্ব দিয়েছে। যার জন্য তাদের এই হাল।’
বিএনপি-জামায়াত আমলের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ-এগুলোই ছিল তাদের কাজ। আজকে দেশের মানুষ অন্তত শান্তি পাচ্ছে।’
এবারের নববর্ষ সবাই উৎসাহ-উদ্দীপনায় উদযাপন করেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবার ব্যাপকভাবে নববর্ষ উদযাপন হয়েছে। শ্রেণি-পেশা নির্বিশেষে সকলে এই উৎসবটা করেছে। আমরা কিন্তু নববর্ষ ভাতাও দিচ্ছি। এ সময় বাংলাদেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
জাতির পিতার অবদানের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন দেশটা যখন জাতির পিতার নেতৃত্বে উন্নয়নের পথে যাত্রা শুরু করে তখনই ১৫ আগস্টের নির্মম ঘটনা ঘটে। নির্মমভাবে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করা হয়।’
১৫ আগস্ট-পরবর্তী ২১ বছরের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এরপর জাতির জীবনে নেমে আসে অমানিশার অন্ধকার। এ সময় মানুষের কোনো অগ্রগতি হয়নি। কেবলমাত্র আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখনই এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হতে শুরু করে।’
আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন প্রসঙ্গে টানা তিনবারসহ চারবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘৯৬ সালে প্রথম ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ, এরপর ২০০৮ সালে নির্বাচনে আবারো বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করি এবং এখন পর্যন্ত রাষ্ট্র পরিচালনা করছি। বাংলাদেশ আজকে ক্ষুধামুক্ত, বাংলাদেশ আজকে দারিদ্র্যমুক্ত হবার পথে। আমরা প্রায় ৪০ ভাগ থেকে ২১ ভাগে দারিদ্র্যের হার নামিয়ে এনেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নের ছোঁয়া আজকে গ্রামপর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। আজকে গ্রামের মানুষ দারিদ্র্যমুক্ত হচ্ছে, মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা বাড়ছে। এটাই জাতির জনকের স্বপ্ন ছিল, যেটা জাতির পিতা চেয়েছিলেন যে বাংলাদেশ হবে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ।’
সভায় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের প্রায় সকল সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
পাঠকের মতামত: