চকরিয়া নিউজ ডেস্ক ::
প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বিলম্বিত হওয়ায় রোহিঙ্গাদের জন্য জাতিসংঘ সুরক্ষিত স্বশাসিত অঞ্চল প্রতিষ্ঠার দাবি তুলেছে বিদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা। দোহাভিত্তিক আলজাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্কের অনলাইনে গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত “রোহিঙ্গা নিড অ্যান ‘অটোনোমাস রিজিওন’, নট রিপ্যাট্রিয়েশন” (রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নয়, স্বায়ত্তশাসন প্রয়োজন) শীর্ষক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
গত বছরের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নিধন শুরুর পর ছয় মাস পূর্ণ হতে চলেছে। নিপীড়নের মুখে এই সময়ের মধ্যে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে। সীমান্তবিহীন চিকিৎসক দল (এমএসএফ) গতকাল এক প্রতিবেদনে বলেছে, মিয়ানমার থেকে এখনো বাংলাদেশে রোহিঙ্গা আসা অব্যাহত রয়েছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক বার্মিজ রোহিঙ্গা অর্গানাইজেশনের প্রধান তুন খিন গত সপ্তাহে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শিবির সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেছেন, ‘অনেকে আমাকে প্রশ্ন করেছেন যে কিভাবে আমরা ওই স্থানে (রাখাইনে) ফিরে যেতে পারি। এটি একটি মসকরা। প্রত্যাবাসন নিয়ে কথা বলার সময় এটি নয়।’
যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত মিয়ানমারের সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ সম্প্রদায় ও সামরিক পরিবারের সদস্য মং জার্নি বলেন, ‘তুন খিনের সম্প্রদায়ের (রোহিঙ্গা) সঙ্গে আমার সম্প্রদায় (বৌদ্ধ) যা করছে, আমি তার ঘোর বিরোধী।’
যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে রোহিঙ্গা ইস্যুতে তুন খিন ও মং জার্নির বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে। তুন খিন আলজাজিরাকে বলেছেন, রোহিঙ্গা হিসেবে তিনি ও তাঁর সম্প্রদায় গণহত্যার শিকার। ১৯৭৮ সাল থেকে এটি হচ্ছে। পশ্চিমারা জানে মিয়ানমারে কী হচ্ছে। ইয়াঙ্গুনে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য দূতাবাসে এসংক্রান্ত সব তথ্য-উপাত্ত আছে। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনের মিয়ানমার সফরে তিনি খুশি। তবে গণহত্যা থামাতে যুক্তরাজ্য সরকার এখনো কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
তুন খিন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিমিনাল কোর্টকে কিভাবে কাজে লাগানো যায় তা খতিয়ে দেখতে হবে। মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি ও সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং মিলে গণহত্যা চালিয়েছে। রোহিঙ্গারা নিরাপত্তা ও সুরক্ষা চায়। তাই তাদের রাখাইনে ফেরার জন্য জাতিসংঘ সুরক্ষিত অঞ্চল প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন।’
মং জার্নি বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য স্বশাসিত অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। জাতিসংঘ, প্রতিবেশী বাংলাদেশসহ অন্য দেশগুলোর দ্বারা ওই অঞ্চল সুরক্ষিত থাকলে রোহিঙ্গারা নিরাপদ বোধ করবে। এর বাইরে আর কোনো সমাধান তাঁর জানা নেই।
পাঠকের মতামত: