মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া ::
কক্সবাজারের পেকুয়ায় প্রধান সড়ক লাগোয়া সওজ’র অধিগ্রহনকৃত জায়গায় বানিজ্যিক বহুতল ভবন নির্মাণ বন্ধ হযনি এখনো। এনিয়ে স্থানীয়রা খোদ প্রশাসনের বিরুদ্ধে রহস্যজনক নিরব নিষ্ক্রিয়তার গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। জানা যায়, গত দুই বছর আগে উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ প্রধান সড়ক হিসাবে পরিচিত পেকুয়া আলহাজ¦ কবির আহমদ চৌধুরী বাজারের বানিয়ারছড়া-বরইতলী-মগনামা সড়কের পূর্ব পয়েন্টে সওজের অধিগ্রহণকৃত জায়গায় একটি ডেপল্যাপমেন্ট কোম্পানী রোডস এন্ড হাইওয়ে আইন অমান্য করে বহুতল বানিজ্যিক বিপনী ভবন নির্মাণ কাজ আরম্ভ করে। ইতিমধ্যেই সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গা দখল করে প্রকাশ্যে ওই ডেভেলাপমেন্ট কোম্পানির লোকজন বানিজ্যিক ভবন নির্মানের কাজ বীরদর্পে চালিয়ে আসলেও তার বৈধতার বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়নি সড়ক বিভাগ। এখনো ঘুম ভাঙেনি স্থানীয় প্রশাসন ও সওজের কর্তাবাবুদের! যা নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে চরম চাঁপা ক্ষোভ ও বিরুপ তীব্র মিশ্র প্রতিক্রিয়া। আজ ২৭ জুলাই বিকালে সরোজমিন ঘুরে দেখা গেছে যে, উপজেলার প্রধান গুরুত্বপূর্ণ বানিজ্যিক বিপনী কেন্দ্র আলহাজ কবির আহমদ চৌধুরী বাজারের পূর্ব পাশে জমিদার আলহাজ¦ কবির আহমদ চৌধুরী বাড়ি লাগোয়া এলাকায় সওজে’র সড়ক জায়গায় অবৈধ স্থাপনা নির্মানের গতি বাড়িয়ে করা হয়েছে তীব্রতর। প্রায় ১০-২০জন শ্রমিক লাগিয়ে সেখানে ওই প্রতিষ্টানের তথাকথিত ক্ষমতাধর লোকজনদের বেপরোয়া দখলবাজীর ন্যাক্কারজনক ঘঠনার পাশাপাশি বহুতল ভবন নির্মানের কাজ চালানো হচ্ছে বেপরোয়া ভাবে। সরোজমিন পরিদর্শনকালে ঘটনায় জড়িত প্রতিষ্টানের লোকজনের সাথে আলাপচারিতায় তারা জানান, এলাকার কিছু প্রভাবশালীকে ম্যানেজ করেই তারা তাদের ভবন নির্মাণের কাজ দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করছেন। জায়গাটি তারা কবির আহমদ চৌধুরীর বাড়ীর ওয়ারিশদের কাছ থেকে খরিদ করে বানিজ্যিক ভবনের নির্মাণ কাজ চালাচ্ছেন। তবে, কোথায় সওজে’র জায়গা রয়েছে সেটা তাদের দেখা বা জানার বিষয় নই বলেও মন্তব্য করেন। সরোজমিন পরিদর্শনকালে আরো দেখা যায় যে, ভবন নির্মানে আনা বিভিন্ন উপকরণগুলোও ব্যস্ততম প্রধান সড়কের আশপাশে রেখে স্থাপনা নির্মাণ প্রক্রিয়া চালানোয় সেখান দিয়ে যান ও জন চলাচলেও দেখা দিয়েছে চরম ভোগান্তি ও মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা। খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে যে, বিগত ১৬/০২/২০১৩ইংরেজী সালে সওজ কর্তৃপক্ষ পেকুয়ার বানিয়ারছড়া-বরইতলী-মগনামা সড়কের উভয় পার্শ্বে ভবিষ্যতে সড়ক সম্প্রাসারনের সুবিধার্থে ৫০ফুট জায়গা অধিগ্রহন করে। পেকুয়া বাজারের পূর্ব পার্শ্বে পেকুয়া মৌজার বিএস খতিয়ান নং ১৩৮৬ এর বিএস দাগ নং ১৯৭৪ এর ৯৩ শতক জায়গাও তার মধ্যে রয়েছে। সুতারাং, সামস এস.এস.পি ডেভেলাপমেন্ট কোম্পানি পেকুয়া বাজারের পূর্ব প্রান্তের যেই জায়গায় বহুতল বানিজ্যিক ভবনের নির্মাণ কাজ চালাচ্ছে তার পুরো জায়গাটিই সড়ক বিভাগের অধিগ্রহণকৃত জায়গার মধ্যে রয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগ জরুরী ভিত্তিতে ওই জায়গায় বানিজ্যিক ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ না করলে ভবিষ্যতে সওজে’র সড়ক প্রশস্তকরনে চরম বাধা গ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বিদ্যমান রয়েছে। বিধায়, পেকুয়া বাজারের পূর্ব পাশের্^ উপজেলার জনগুরুত্ব প্রধান সড়ক লাগোয়া সড়ক বিভাগের জায়গায় বহুতল বানিজ্যিক ভবন নির্মান বন্ধ ও তার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানূগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের উর্ধ্বতন মহল ও সংশ্লি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষের জোরালো হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী। আজ বিকালে পুনরায় সরেজমিন ঘুরে সওজে’র জায়গা দখল করে বহুতল বানিজ্যিক ভবন নির্মাণের ন্যাক্কারজনক ঘটনার সত্যতা মিলেছে। এদিকে,পেকুয়ায় সড়ক বিভাগের জায়গা দখলের সাথে জড়িত সামস এস.এস.পি ডেভেলপাপম্যান্ট কোম্পানির নির্মিতব্য বহুতল বানিজ্যিক ভবন নির্মানের কাজের সার্বিক তদারকীর দায়িত্বে থাকা আনোয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জায়গাটি তার কয়েকজন ঘনিষ্ট বন্ধু পেকুয়া কবির আহমদ চৌধুরীর পুত্র আবুল কাসেম চৌধুরী গংয়ের সাথে আমমোক্তার নামা মূলে চুক্তি সম্পাদন করে বানিজ্যিক ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। তিনি দাবী করেছেন, ওই জায়গাটি সড়ক বিভাগের নয়, সেটি আবুল কাসেম চৌধুরী গংদের নিজস্ব খতিয়ান ভুক্ত জায়গা। নিয়ম অনুসরণ করেই ওই জায়গায় বানিজ্যিক ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে জানতে কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) এর নিবাহী প্রকৌশলী রানা প্রিয় বড়–য়ার সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, পেকুয়ার বানিয়ারছড়া-বরইতলী-মগনামা সড়কের উভয় পার্শ্বে সওজের জায়গা রয়েছে। কেউ ইচ্ছা করলেও সওজে’র জায়গায় স্থাপনা বা কোন ধরনের ভবন নির্মাণ করতে পারবেন না। তিনি আরো বলেন, পেকুয়া বাজারের পূর্ব পার্শ্বে সড়ক বিভাগের জায়গা দখলের বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করে সওজে’র জায়গা দখলের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পাঠকের মতামত: