ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় যুবলীগ নেতার বাধা ।। টেন্ডার সিডিউল জমা দিতে পারেননি ঠিকাদাররা

indexনিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::

কক্সবাজারের পেকুয়ায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রায় ২০ লাখ টাকামূল্যের তিনটি কাজের দরপত্র জমা দিতে পারেননি ঠিকাদারেরা। গত সোমবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত দরপত্র জমা দিতে প্রায় ৭০ জন ঠিকাদার উপস্থিত হলেও স্থানীয় যুবলীগ নেতাদের বাধায় ঠিকাদারেরা দরপত্রের সিডিউল বাক্সে ফেলতে পারেননি। এমনকি বাধাপ্রাপ্ত ঠিকাদারেরা দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির চেয়ারম্যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকেও বিষয়টি মৌখিক এবং লিখিতভাবে জানালেও রহস্যজনক কারণে তিনি কোন উদ্যোগ নেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধুমাত্র যুবলীগ নেতারাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তিনটি প্রকল্পের বিপরীতে তিনটি সিডিউল বাক্সে ফেলতে পেরেছেন।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সিডিউল জমা দিতে যাওয়া ঠিকাদার জাকের উল্লাহ চকোরীসহ ক্ষুদ্ধ ঠিকাদারেরা বলেন, ‘সকাল ৯টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত তিনটি কাজের বিপরীতে দরপত্রের সিডিউল বাক্সে ফেলার সময়সীমা নির্ধারিত ছিল। কিন্তু তার আগে থেকেই এলজিইডি অফিসকক্ষে বসানো বাক্স ঘিরে রাখে যুবলীগের নেতাকর্মীরা। এতে নেতৃত্ব দেন পেকুয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম।’

জাকের উল্লাহ চকোরী বলেন, ‘এ সময় আমি সিডিউল জমা দিতে চাইলেও যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর বাঁধ সাধেন। বলেন, আমরা ছাড়া আর কেউ সিডিউল জমা দিতে পারবে না। এখান থেকে চলে যান। এ সময় উপজেলা প্রকৌশলী জাহেদুল ইসলাম তার দপ্তর ছেড়ে ইউএনওর কক্ষে গিয়ে বসে থাকেন।’

জানা গেছে, প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে এলজিইডি সম্প্রতি দরপত্র (বিজ্ঞপ্তি নং) আহবান করে। ২০১৫১৬ অর্থ বছরের জিওবি ফান্ডের অর্থায়নে এবং এডিপি থোক বরাদ্দের কাজগুলো হলো পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন মেরামত, উপজেলা হলরুম মেরামত ও উপজেলা পরিষদের সংযোগ সড়ক সংস্কার। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর এসব কাজের বিপরীতে ২১০টি সিডিউল ক্রয় করেন ৭০ জন ঠিকাদার।

সিডিউল জমা দিতে বাধা প্রদান প্রসঙ্গে পেকুয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম দৈনিক চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘আসলে বাঁধা দেওয়ার কোন ঘটনা ঘটেনি। অল্প টাকার কাজ যুবলীগের ছেলেরা করতে চেয়েছে। তাই আমি ঠিকাদারদের অনুরোধ করেছিলাম তারা যাতে সিডিউল জমা না দেয়। এর পরও যেসব ঠিকাদার সিডিউল ক্রয়ে আর্থিক ব্যয় করেছেন তা ফেরত দেওয়া হবে।’

উপজেলা প্রকৌশলী জাহেদুল ইসলাম চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘ঠিকাদারেরা যথাসময়ে যাতে দরপত্রের সিডিউল বাক্সে ফেলতে পারেন সেজন্য আমাদের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়। এমনকি সিডিউল ফেলার বাক্স একেবারে উম্মুক্ত রাখা হয়। তবে কেউ বাঁধা দিয়েছেন কীনা তা আমার জানা নেই। যারা দরপত্র জমা দিয়েছেন তাদেরকে কার্যাদেশ দেওয়া হবে।’

এ ব্যাপারে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির চেয়ারম্যান এবং পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইএনও) মো. মারুফুর রশিদ খান চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘কোথায়, আমার কাছে তো এ ধরণের কোন তথ্য নেই। কোন ঠিকাদারও আমার কাছে এ ধরনের অভিযোগ করেননি। এর পরও ঠিকাদারেরা যাতে নির্বিঘ্নে দরপত্রের সিডিউল জমা দিতে পারেন সেজন্য প্রয়োজনীয় সকল উদ্যোগ নেওয়া হয়। বাইরে যদি কেউ বাঁধা দেয় তাহলে আমার কিছুই করার নেই।’

পাঠকের মতামত: