ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

পেকুয়ার পর এবার কুতুবদিয়া দ্বীপেও ‘ছেলেধরা’ আতংক!

atongkগিয়াস উদ্দিন, কুতুবদিয়া থেকে ফিরে :::

কক্সবাজারের কুতুদিয়ায় গ্রামে-গঁঞ্জের সর্বত্র হঠাৎ ছেলে ধরা আতংক বিরাজ করছে। গত কয়েকদিন ধরে এধরনের একটি গুজব উপজেলায় ছড়ালেও গুরুত্ব দেয়নি কেউই। কিন্তু এলাকায় বোরকা পরিহিত অচেনা কিছু মহিলার আনাগোনা এ আতংককে দ্বিগুণ হারে বাড়িয়ে দিয়েছে। স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা অভিযোগ তাদের অভিভাবকদের।

 গত ১৭ এপ্রিল উপজেলার বড়ঘোপ ইউনিয়নের অমজাখালী এলাকায় ছেলা ধরা সন্দেহে এক মহিলাকে বেদড়ক পিঠিয়েছে এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর ঐ মহিলার ব্যাগে খেলনার জিনিসপত্রসহ চকলেট, আচার ,আয়না ও পারফিউম পেয়েছে।

 গত ১৪ এপ্রিল বড়ঘোপের মুরালিয়া গ্রামে “ছেলা ধরা এসেছে” ধরনের গুজব ছড়ালে স্কুল থেকে শিক্ষার্থীরা পালিয়ে যাচ্ছে বলে খবর আসে। এসময় মুরালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানা যায় এধরনের কিছু হয়নি,শিক্ষার্থীরা টিপিন ছুটিতে গেছে।

 গত ১৮ এপ্রিল বড়ঘোপ মগডেইল এলাকায় ঘটেছে এধরনের আরেকটি ঘটনা। অচেনা অর্ধ পাগলী এক মহিলাকে ছেলে ধরা মনে করে মারধর করার সময় স্থানীয় এক ইউপি সদস্য তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ মহিলার পরিচয় নিতে গিয়ে পড়তে হয় নানা বিড়ম্বনায়। একেক সময় একেক পরিচয় দেয়ায় সঠিক কোন ঠিকানা পাওয়া যায়নি মহিলার।

 এতে সন্দেহ বেড়ে দ্বিগুণ হয় এলাকাবাসীর। তাদের ধারনা এ মহিলা পাগল বেশে কোন একটি দুষ্কৃতিকারী দলের সোর্স হয়ে কাজ করছে এবং সুযোগ বুঝে গ্রামের সহজ-সরল গৃহবধূদের বশে এনে নিয়ে যাচ্ছে স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র। পরে এ মহিলারা দুস্কৃতিকারীদের মাধ্যমে গ্রামের স্বচ্ছল ব্যাক্তি কিংবা তাদের ছেলেদের অপহরন করিয়ে আদায় করছে বড় অংকের মুক্তিপন।

 দক্ষিণ ধুরুং এলাকার হাছিনা নামের এক গৃহবধূ জানান, কিছুদিন আগে অপরিচিত এক মহিলা দুপুরে বাড়িতে ডুকে অসহায়ভাবে ভাত খেতে চায়। আর গৃহবধূ হাছিনাও সরল বিশ্বাসে পেঠ পুরে খেতে দিয়ে অনেক গল্পগুজব করে একটু বিশ্রাম নিতে বলে মহিলাকে। এর ফাঁকে হাছিনা গৃহাস্থলীর কাজে ঘরের বাহিরে গেলে অপরিচিত এ মহিলা ঘরের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে চম্পট দেয়।

 ফলে এলাকায় অপরিচিত মহিলা দেখে সন্দেহ হলেই অমানবিক পেঠাচ্ছে এলাকাবাসী। তবে এলাকার সচেতন অনেকেই বলেছেন, সমাজে দিনদিন পারিবারিক আশান্তি ও স্বামী-স্ত্রীর সংসারিক দ্বন্ধের কারনে পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারাচ্ছে মহিলারা।

 স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকদের নির্যাতনের কারনে অসহ্য হয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছে এসব নারী। এদিকে ছেলে ধরা আতংকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিশুদের উপস্থিতি কমেছে বলে জানা গেছে।

তাছাড়া ছেলে ধরা আতংক বিরাজ করছে কুতুবদিয়া দ্বীপের সর্বত্র। সন্দেহের বশে অপরিচিত এসব মহিলাকে না পিঠিয়ে সঠিক পরিচয় বের করতে অভিমত দিয়েছেন বিষেজ্ঞমহল। প্রয়োজনের পুলিশের সাহায্য নিতে বলেছেন তারা।

পাঠকের মতামত: