ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

জোয়ারে ভাসছে মগনামা ১৫গ্রামে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট

ৃুুুুইমরান হোসাইন. পেকুয়া :::
অমাবস্যার অস্বাভাবিক জোয়ারে ভাসছে পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের ১৫গ্রামের মানুষ । এসব এলাকার মানুষ কোনভাবে আশ্রয় খোঁজে নিলেও পানীয় জলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে ।

পাউবোর বিলিন হওয়া বেড়িবাঁধের অংশ দিয়ে কুতুবদিয়া চ্যানেলের পানি সরাসরি লোকালয়ে প্রবেশ করায় ইউনিয়নে উত্তর অংশের দু’টি ওয়ার্ড়ের ১৫টি গ্রাম এখন পানিতে নিমজ্জিত হয়ে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছে। অধিকাংশ বাড়িঘর পানির নিচে তলিয়ে গেছে। রাস্তাঘাট পানির নিচে থাকায় এসব এলাকার যাতায়ত বন্ধ রয়েছে। পানিবন্দি মানুষ নৌকা নিয়ে চলাচল করছে। এসব এলাকায় মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বাড়িঘর লোনা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ঘরে চুলায় আগুন জ্বলছেনা। নলকুপও পানির নিচে ডুবে রয়েছে। ক্ষুর্ধাত মানুষ ও পরিবারের সংখ্যা দিনদিন চক্রবৃদ্ধি হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রচন্ড লবনাক্ততার কারনে ওই দু’ওয়ার্ড়সহ এ ইউনিয়নের বিপুল অংশে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এমন কোন পুকুর নেই যে গুলোতে লবনাক্ত পানি ঢুকে পড়েনি। পয়নিস্কাশন ও দৈনন্দিন গৃহস্থলি কার্যক্রমে কাজে চরম ভোগান্তি দেখা দিয়েছে।

গতকাল শনিবার সরেজিমন গিয়ে দেখা যায়, বাজারপাড়া, শরতঘোনা, পশ্চিম বাজারপাড়া, হারঘরপাড়া, হারুন মাতবরপাড়া, লালমিয়া পাড়া, দরদরিঘোনা, মটকাভাঙ্গা, চেরাংঘোনা, কালারপাড়া, শুদ্ধখালী পাড়া, ডলিন্যাপাড়া ও কাকপাড়াসহ ১৫গ্রামে জোয়ারের সময় পানি ঢুকছে। কিন্তু জোয়ারের উচ্চতা কমে আসলেও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে আছে অন্তত শতাধিক নলকূপ। এসব এলাকায় খাওয়ার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

শরতঘোনা এলাকার গৃহিনী হামিদা আক্তার বলেন, প্রতিদিন দুইবার জোয়ারের পানি ঘরে ঢুকছে। বুকসমান পানিতে কি বসবাস করা যায়। তাই পাশ্ববর্তী বাঁধের উচুস্থানে পলিথিন টাঙ্গিয়ে আশ্রয় নিয়েছি। বাড়িতে থাকা নলকূপে জোয়ারের পানি ঢুকে লবণাক্ত হয়ে পড়ায় এখন খাওয়ার পানি নিয়ে তীব্র সংকটে রয়েছি।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা, জোয়ার-ভাটার আতঙ্কে ইউনিয়নের অন্তত ২০হাজার মানুষের চোখে ঘুম নেই। এলাকায় বিশুদ্ধ খাওয়ার পানির তীব্র সংকট। তাই জরুরি ভিত্তিতে বিশুদ্ধ খাওয়ার পানির ব্যবস্থা না করলে স্থানীয় লোকজন ডাইরিয়া ও পানিবাহিত রোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হবে।

মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শারাফত উল্লাহ ওয়াসিম বলেন, অমাবস্যার জোয়ারের পানি কমতে শুরু হলেও প্লাবিত ১৫গ্রামের পানীয় জলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এতে দুই শতাধিক ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে প্রায় দু’হাজারের বেশি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। এরপরও প্রতিনিয়ত দুইবার জোয়ার-ভাটায় প্লাবিত হচ্ছে। এলাকার আরও কয়েকটি স্থানের বেড়িবাঁধ ঝুঁকির মুখে রয়েছে।

উপজেলা চেয়ারম্যান শাফায়াত আজিজ রাজু বলেন, লবণাক্ত জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় ওই এলাকার পাতকূয়া ও নলকূপগুলোর পানি গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার ও খাওয়ার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। জোয়ারে পানি কমে গেলে ব্যবহার উপযোগি করে তুলা সম্ভব হবে এর আগে নয়।

পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মারুফ রশীদ খান বলেন, ১৫গ্রামের প্রায় সাড়ে আট শতাধিক বাড়িঘর বুকসমান পানির নিচে ডুবে রয়েছে। সেখানে চলছে পানীয় জলে তীব্র সংকট ও তাদের রান্নাবান্না বন্ধ থাকায় লোকজন না খেয়ে থাকছে। তাই ক্ষতিগ্রস্থ লোকজনের মধ্যে খাবার ও পানি বিতরণের চেষ্টা চলছে।

পাঠকের মতামত: