ঢাকা,শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪

পেকুয়ায় আদালতের নির্দেশের পরও অপহৃত ছাত্রীকে উদ্ধার করতে পারেনি থানা পুলিশ!

মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া :: কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় আদালতের নির্দেশের ৫দিন অতিবাহিত হলেও অপহৃত ৭ম শ্রেনীর ছাত্রী রিনা আকতার (১৬) কে অপহরণকারীদের কবল থেকে উদ্ধার করতে পারেনি পেকুয়া থানা পুলিশ! অপরদিকে রিনা আকতার উদ্ধার না হওয়ায় তার পরিবারে বিরাজ করছে উদ্বেগ আর উৎকন্ঠা। পরিবারের সদস্যরা নাওয়া-খাওয়া ভূলে গিয়েছেন।
প্রাপ্ত তথ্যে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, পেকুয়া উপজেলার পেকুয়া সদর ইউনিয়নের শেখেরকিল্লা ঘোনা গ্রামের ফরিদুল আলমের কন্যা ও পেকুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেনীর ছাত্রী রিনা আক্তার ১৭ ডিসেম্বর ২০২০ ইংরেজী তারিখ বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বাড়ি থেকে কেনাকাটা করার জন্য পেকুয়া বাজার যাওয়ার পথে অপহৃত হন।
অপহৃত ছাত্রীর পিতা ফরিদুল আলম জানান, ঘটনার দিন পেকুয়া বাজারে যাওয়ার পথে তার কন্যাকে একই এলাকার আবদুল জলিলের পুত্র লালু প্রকাশ লালাইয়া ও তজুমিয়ার পুত্র আব্বাছ উদ্দিন জোর করে একটি সিএনজি অটোরিক্সাতে উঠিয়ে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে আটকে রেখেছে। এরপর থেকে তার কন্যার কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছেনা। তার কন্যা অপহৃতের পর পেকুয়া থানায় একটি সাধারান ডায়েরীও করেছিলেন। যার নং ৬১৪। থানায় জিডি হলেও পেকুয়া থানা পুলিশ তার কন্যা রিনা আকতারকে উদ্ধারে কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। পরে গত ২৮ ডিসেম্বর চকরিয়া বিচারিক হাকিমের আদালতে ফৌজধারী কার্যবিধি ৩৬৬ ধারা মোতাবেক একটি আবেদন করেন।
চকরিয়া বিচারিক হাকিমের আদালতের আইনজীবি শিহাব উদ্দিন জানান, তার মক্কেল ফরিদুল আলম তার কন্যাকে উদ্ধারের জন্য আদালতে ফৌজধারী আবেদন করলে আদালমের বিজ্ঞ বিচারক ফৌজধারী কার্যবিধির ২০০ ধারা মোতাবেক বাদীর অভিযোগ গ্রহণ করে পেকুয়া থানার ওসিকে ভিকটিম রিনা আকতারকে উদ্ধার করে তিন কার্য দিবসের মধ্যে আদালতকে অবহিত করার জন্য নির্দেশ দেন। একই সাথে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক পেকুয়া থানার ওসিকে ফৌজধারী কার্যবিধি ১৫৬ (৩) ধারা মোতাবেক অভিযোগকারী কর্তৃক আনীত অভিযোগের তদন্ত করে আগামী ১৫/০২/২০২১ ইংরেজী তারিখের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দেন।
ছাত্রীর পিতা ফরিদুল আলম অসহায় কন্ঠে এ প্রতিবেদককে বলেন, আদালতের নির্দেশের ৫ দিন পেরিয়ে গেলেও পেকুয়া থানা পুলিশ তার কন্যা রিনা আকতারকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়েছে। তার কন্যা উদ্ধার না হওয়ায় তিনি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও হতাশার মধ্যে রয়েছেন বলে তিনি জানালেন। উদ্ধারে বিলম্বিত হওয়ায় তার কন্যার জীবন নিয়েও তিনি শংকা প্রকাশ করেছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পেকুয়া থানার উপ-পরিদর্শক ছিদ্দিক এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে এ প্রতিবেককে তিনি বলেন, তিনি আদালতের নির্দেশনার পর ভিকটিম ছাত্রীকে উদ্ধার করার জন্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়েছেন, অভিযান চালিয়েছেন। কিন্তু ভিকটিমকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। আদালত গত ২৮ ডিসেম্বর থেকে তিন কার্য দিবসের মধ্যে ভিকটিমকে উদ্ধারে নির্দেশনার প্রসংগে জানতে চাইলে তিনি জানান, বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিচ্ছেন এবং ভিকটিমকে উদ্ধারে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে পেকুয়া থানা পুলিশ। তিন কার্য দিবসের মধ্যে ভিকটিমকে উদ্ধার করতে না পারায় তিনি বিষয়টি আদালতে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।

পাঠকের মতামত: