ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

পেকুয়ায় কক্সবাজারের মাদ্রাসা ছাত্রী অপহৃত

রিয়াজ উদ্দিন, পেকুয়া ::  পেকুয়ায় কক্সবাজার শহরের দশম শ্রেনীর এক মাদ্রাসা ছাত্রী অপহৃত হয়েছে। গত ৬ দিন ধরে অপহৃত মাদ্রাসা ছাত্রী নিখোঁজ রয়েছে। পিতা ও নিকট স্বজনরা নিখোঁজ ছাত্রীকে উদ্ধারসহ প্রয়োজনীয় আইনগত প্রতিকার পেতে পেকুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ প্রেরণ করেছে। তবে গত ৬ দিন ধরে নিখোঁজ থাকায় অপহৃত ছাত্রীর পরিবারের মধ্যে উৎকন্ঠা ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ৫ জুন বিকেল ৩ টার দিকে পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর মেহেরনামা থেকে ওই ছাত্রী অপহৃত হয়েছে।

অপহৃত ছাত্রীর নাম নাজমা খানম জেসী (১৪)। মেয়েটি কক্সবাজার আদর্শ বালিকা মাদ্রাসার দশম শ্রেনীর ছাত্রী। পিতা মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন কক্সবাজার ঝিলংজার পশ্চিম লারপাড়ার বাসিন্দা ও নাজিম ফুড প্রোডাক্টসের স্বত্তাধিকারী।

এ ব্যাপারে ছাত্রীর পিতা মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বাদী হয়ে পেকুয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করে। পেকুয়া থানার ওসি কামরুল আজম অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এ বিষয়টি তদন্ত চলছে। লিখিত অভিযোগ সুত্র জানায়, ওই দিন বিকেলের দিকে নাজিম ফুড প্রোডাক্টসের স্বত্তাধিকারী ব্যবসায়ী মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের মেয়ে নাজমা খানম জেসী (১৪) কে অপহরণ করা হয়েছে।

কক্সবাজার ঝিলংজা ইউনিয়নের পশ্চিম লারপাড়ার ইসলামাবাদ এলাকার আবদু রশিদের পুত্র ইয়াসির আরাফাত (২৫) সহ ৩/৪ জনের অপহরণকারী চক্র ওই দিন বিকেলের দিকে পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর মেহেরনামা থেকে ওই ছাত্রীকে তারা নিয়ে যায়। ছাত্রীর পিতা ব্যবসার সুবাধে পেকুয়ায় কারখানা ও বাসাভাড়ায় থাকেন। তবে পূর্ব থেকে অপহরণকারী ইয়াসির আরাফাত ও নাজিম উদ্দিনের পরিবারের মধ্যে পরিচিতি ছিল। নাজমা খানম জেসীর প্রাইভেট শিক্ষক ছিলেন ইয়াসির আরাফাত। পড়ার সময় ওই ছাত্রীকে প্রায় সময় কু-প্রস্তাবসহ ফুঁসলিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এমনকি ওই ছাত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানিসহ নানান ধরনের ইভটিজিং করতেন।

ঘটনার দিন বিকেলে ইয়াসির আরাফাত কক্সবাজার থেকে তার কয়েকজন অনুগত লোককে নিয়ে জেসীদের ভাড়া বাসার আশপাশে অবস্থান নেয়। এ সময় ওই ছাত্রীর গতিবিধি লক্ষ্য করে পূর্ব থেকে উৎপেতে থাকা ইয়াসির আরাফাতসহ ৩/৪ জনের চিহ্নিত চক্র দশম শ্রেনীর ছাত্রী জেসীকে জোরপূর্বক টানা হ্যাঁচড়া করে একটি সিএনজিতে তুলে অজ্ঞাত স্থানের দিকে নিয়ে যায়। নাজমা খানম জেসীর পিতা কক্সবাজার ঝিলংজার মৃত হাজী মোজাফ্ফর আহমদের ছেলে ও পেকুয়ায় নাজিম ফুড প্রোডাক্টসের মালিক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন জানান, আমার মেয়েকে ইয়াসির আরাফাত নামক ওই বখাটে অপহরণ করেছে। সে মেয়েকে প্রাইভেট পড়াত। তার গতিবিধি ও উদ্দেশ্য কু-দৃষ্টি ছিল। আমি মেয়েকে প্রাইভেট পড়া থেকে বিরত রাখি। এমনকি একবার আমার ছোট্ট মেয়েটিকে যৌন হয়রানি করার চেষ্টা করায় আমি তার বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় ৩০ মে ২০ ইং তারিখে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। সেখানকার পুলিশ ইভটিজিং সম্পর্কে নিশ্চিত ধারনা পেয়েছিল। তার বাড়িতে গিয়েছিল পুলিশ। এরপর দ্বিতীয় দফায় ৫ জুন বিকেল ৩ টার দিকে তারা আমার মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। ইয়াসির আরাফাতের পিতা আবদু রশিদ ও মাতা রেহেনা বেগমকে তার ছেলে সম্পর্কে ধারণা পোষণ করি। এমনকি আমার ছোট্ট মেয়ের জীবন বিপন্ন না করতে ছেলেকে বারন করতে বলেছি। তবে তারা বখাটে ছেলেকে আমার মেয়ে বিবাহ করাতে বার বার প্রেরণা যুগিয়েছে। আমার অর্থ বিত্তের উপর ছেলে ও পিতা-মাতার লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে। এর সুত্র ধরে এ কান্ড ঘটিয়েছে। ৩ লাখ টাকা ও ৬ ভরি স্বর্ণালংকারও তারা আমাদের অনুপস্থিতিতে ভাড়া বাসা থেকে নিয়ে গেছে।

জেসীর মা শাহীন আক্তার জানান, আমার গর্বের ধনকে তারা নিয়ে গেছে। আমিতো ব্যাকুল হয়ে গেছি। মেয়েটি অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক। মাদ্রাসার ১০ম শ্রেনীর ছাত্রী। নিশ্চিত তাকে অপহরণ করেছে। এখন কোথায় আছে কি করছে কোন অবস্থায় আছে সেটি জানা যাচ্ছেনা। আমি প্রশাসনের কাছে আন্তরিক হস্তক্ষেপ চাই। আমার মেয়েকে আমার বুকে ফিরিয়ে দেওয়া হউক। বিয়ের নামে কোন প্রতারণা আমরা মানতে রাজি নয়।

 

 

পাঠকের মতামত: