ঢাকা,শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

পেকুয়ায় ত্রাণ বিলি না করায় ইউপি কার্যালয় ঘেরাও

পেকুয়া প্রতিনিধি :: কক্সবাজারের পেকুয়ায় সরকারী ত্রাণ বিলি না হওয়ায় ঘেরাও করা হয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়।আজ  ৫ এপ্রিল (রবিবার) দুপুরে উপজেলার শিলখালী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে সরকারী ত্রাণ নিয়ে তুলকালাম কান্ড সংঘটিত হয়েছে। এ সময় ত্রাণ বিতরণ না করায় স্থানীয় ইউপির চেয়ারম্যান নুরুল হোছাইনের বিরুদ্ধে নানান ধরনের বক্তব্য দিতে দেখা গেছে। ইউপির চেয়ারম্যান নুরুল হোছাইন এ পরিস্থিতি এড়াতে ইউপি কার্যালয় থেকে সটকে পড়ে।

স্থানীয় সুত্র জানায়, সরকার সারা দেশে স্যানিটাইজার পণ্য সরবরাহ দিচ্ছেন। রোগ বালাই থেকে সুরক্ষিত থাকতে হাত ধোঁয়ার জন্য সাবান বরাদ্ধ দিয়েছেন। শিলখালী ইউনিয়নের জন্য সরকার ৮ কাটন (প্রায় ১৫০০) পিস লাক্স সাবান বরাদ্ধ দিয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইওর) কার্যালয় থেকে এ সব পণ্য গত ৮ মাস আগে শিলখালী ইউনিয়ন পরিষদের জন্য প্রেরণ করে। ইউপির চেয়ারম্যান ওই পণ্য তার কার্যালয়ে মওজুদ করেছে। তবে এ সব পণ্য জনগনের কাছে বিলি করেননি।

সুত্র জানায়, ইউনিয়ন পরিষদের আওতাধীন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টানে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিলির জন্য সরকারী নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু বিএনপি থেকে নির্বাচিত ওই চেয়ারম্যান সরকারী এ সব ত্রাণ বিলি না করে নিজেই আত্মসাৎ করার পায়তারা করছিলেন। ইউপি কার্যালয়ে সাবানের মওজুদ রয়েছে। এ সম্পর্কিত বিষয় জনগনের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে। ওই দিন সকালে এর প্রতিবাদে শতাধিক লোকজন ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে জড়ো হয়।

এ সময় ইউপির কার্যালয়ে সাবানের মওজুদ দেখতে তারা তৎপর হন। খবর পেয়ে পেকুয়ার গণমাধ্যম কর্মীরা শিলখালী ইউপি কার্যালয়ে পৌছেন। এ সময় ইউপির সচিব আল-আমিনসহ গন্যমান্য ব্যক্তিরা সাবানের কাটন ও মওজুদ সরাসরি প্রত্যক্ষ করেছেন। ইউপির সচিব আল আমিন জানান, ত্রাণ শাখা থেকে ৭/৮ মাস আগে কাটন ভর্তি এ সব সাবান আমরা পেয়েছি। তবে বিলি করার এখতিয়ার আমার নেই। আমি ম্যাসেজটি উর্ধতন মহলকে দিয়েছি। ইউপির সদস্য লুৎফুর রহমান ও শাহাব উদ্দিন জানান, সরকারী ত্রাণ অবশ্যই অনেক আগেই বিলি করার প্রয়োজন ছিল।

চেয়ারম্যান একক ক্ষমতায় পরিষদ চালান। এখানে আমরা গুরুত্বহীন। শিলখালী উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আসাদ্জ্জুামান চৌধুরী জানান, এটি চরম অন্যায়। সরকারী ত্রাণ জনগনের জন্য পাঠানো হয়েছে। আপনি চেয়ারম্যান তাই আপনার কাছে এসেছি। এটি জনগনের সাথে চরম প্রতারনা।

প্রশাসন ও সরকারকে আহবান করছি এ সবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। ইউনিয়ন আ’লীগের নেতা বাহাদুর, আবদু সালাম, ফিরোজ আহমদ, জয়নাল আবদীন, মনুসহ অনেকে জানান, আ’লীগ সরকারের রিলিফ পর্যন্ত ঘৃণা করে এ চেয়ারম্যান। এটির চুড়ান্ত প্রমাণ হচ্ছে সরকারী ত্রাণ গোদামে রেখে মেয়াদ নষ্ট করে দেয়া।

ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি ওয়াহিদুর রহমান ওয়ারেচী জানান, খুবই লজ্জাজনক বিষয়। একজন চেয়ারম্যান জনগনের ত্রাণ নষ্ট করে ফেলবে সেটি অবাক কান্ড। পেকুয়ার সহকারী কমিশন ভূমি মিকি মারমা জানান, বিষয়টি আমি জেনেছি। আসলে এটি খুবই অন্যায় কাজ। এ বিষয়ে জানতে পেকুয়ার ইউএনও সাঈকা শাহাদাতের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল হোছাইনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়। রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া যায়নি।

স্থানীয় সরকার বিভাগের কক্সবাজারের পরিচালক ও এডিসি শ্রাবন্তী রায় জানান, সরকারী ত্রাণ কেন তিনি বিতরণ করেননি। সেটি খতিয়ে দেখা হবে। সাবান গুলির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলে বিতরণ করা যাবেনা। আমি ইউএনও এর সাথে কথা বলব। এরপর করনীয় বিষয়টি নির্ধারণ করব।

পাঠকের মতামত: