ঢাকা,বুধবার, ১ মে ২০২৪

পেকুয়ায় ‘হত্যাচেষ্টা’ মামলার প্রধান আসামীর প্রকাশ্যে সংবাদ সম্মেলন! এলাকায় তোলপাড়, গ্রেফতার দাবি

পেকুয়া প্রতিনিধি ::  কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে শিক্ষকসহ ৫জনকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামী কর্তৃক আয়োজিত প্রকাশ্যে সংবাদ সম্মেলন নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। আজ ১৭ফেব্রুয়ারী বিকাল ৫ টার দিকে পেকুয়া বাজারে অবস্থিত একটি রাজনৈতিক কার্যালয়ে উক্ত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সেখানে লিখিত বক্তব্যও পাঠ করেন শিক্ষকসহ ৫ জনকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় থানায় দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামী! এ ঘটনায় বিস্ময় ও হতাশা প্রকাশ করেছে মামলার বাদী।

জানা যায়, গত ৯ ফেব্রুয়ারী সকাল সাড়ে ৬ঘটিকার দিকে পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের বাইন্যা ঘোনা গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে স্থানীয় মো: কালুর ছেলে মনছুর আলমের নেতৃত্বে একদল সশস্ত্র দূর্বূত্ত পূর্ব পরিকল্পিতভাবে একই এলাকার মরহুম একরাম মিয়ার পুত্র সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাষ্টার আবদুল মজিদ, রশিদ আহমদ, আলহাজ¦ কামাল হোসেন, আবদুল মজিদের পুত্র এসএসসি পরীক্ষার্থী আশরাফুল মেহরাব মুহিব, রশিদ আহমদের পুত্র এরশাদ হোছাইনকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। ওই দিন ভোরে মাষ্টার আবদুল মজিদ স্থানীয় কবরস্থান থেকে তার মায়ের কবর জিয়ারত শেষ করে বাড়ী ফেরার পথে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ধারালো দা কিরিচ নিয়ে হামলা চালায় মনছুর আলমের নেতৃত্বে একদল দূর্বূত্ত। এ ঘটনায় শিক্ষক আবদুল মজিদসহ তার পরিবারের জন গুরুতর আহত হয়। আহতরা এখনো বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ঘটনায় গত ১৪ ফেব্রুয়ারী পেকুয়া থানায় রশিদ আহমদ বাদী হয়ে হামলাকারী দূর্বূত্ত মনছুর আলমকে প্রধান আসামী করে আরো ১১ জন হামলাকারীর বিরুদ্ধে পেকুয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ু ০৭। ধারা ১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩৭৯/৫০৬দ:বি।

এ ঘটনায় মনছুর আলমও বাদী হয়ে একই দিনে একই ধারায় একটি ভিত্তিহীন কাউন্টার মামলা আবদুল মজিদ গংয়ের বিরুদ্ধে দায়ের করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষক আবদুল মজিদ সহ তার পরিবারের ৫জনকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার পর মামলার প্রধান আসামী মনছুর আলম আত্মগোপনে চলে যায়। কিন্তু হঠাৎ পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে ১৭ ফেব্রুয়ারী বিকালে পেকুয়া বাজারে অবস্থিত একটি রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেললের আয়োজন করে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করে হামলার শিকার শিক্ষক পরিবার ও পেকুয়া থানা পুলিশের বিরুদ্ধে চরম বিষোদগার করেন। হত্যা চেষ্টা মামলার পলাতক প্রধান আসামী মনছুর আলম কর্তৃক প্রকাশ্যে সংবাদ সম্মেলন আয়োজনের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হামলার শিকার শিক্ষক আবদুল মজিদ ও তার পরিবার।

আবদুল মজিদ অভিযোগ করে জানান, তিনিসহ তার পরিবারের ৫জনকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে সন্ত্রাসী মনছুর আলম। তার পরিবার মনছুর আলমকে প্রধান আসামী করে থানায় হত্যাচেষ্টাসহ অন্যান্য ধারয় মামলা করেছেন। থানায় মামলার পর হত্যা চেষ্টা মামলার আসামী মনছুর আলম কিভাবে প্রকাশ্যে দিবালোকে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করতে পারে তা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেন? তিনি আরো জানান, মামলা তুলে নেওয়ার জন্য মনছুর আলম তার পরিবার-পরিজনকে প্রতিনিয়তই হুমকি দিচ্ছে। মামলা তুলে না নিলে মনছুর আলম তার প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত পিতা মো: কালুকে হত্যা করে তাদের মিথ্যা হত্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানী করবে বলে প্রকাশ্যে হুংকার দিচ্ছে। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবদুল মজিদ অবিলম্বে হত্যা চেষ্টা মামলার প্রধান আসামী মনছুর আলমকে গ্রেফতারপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য পুলিশ প্রশাসনের কাছে জোরালো দাবি জানান।

শিক্ষকসহ তার পরিবারের ৫জনকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় দারেরকৃত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পেকুয়া থানার উপ-পরিদর্শক সনজীত চন্দ্র নাথ এ প্রসঙ্গে জানান, মামলার প্রধান আসামী মনছুর আলম কর্তৃক প্রকাশ্যে সংবাদ সম্মেলন আয়োজনের বিষয়টি তার জানা নাই। তবে তিনি দ্রুত খোঁজ খবর নিচ্ছেন। তিনি আরো জানান, মনছুর আলমসহ মামলার অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

পাঠকের মতামত: