ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

পেকুয়ায় নদী ভরাট করে প্রবাসীর মার্কেট নির্মান

পেকুয়া প্রতিনিধি :: 
কক্সবাজারের পেকুয়ায় নদী ভরাট করে নির্মিত হচ্ছে মার্কেট। স্থাপনা নির্মান কাজ বাস্তবায়ন করতে সৌদি প্রবাসী এক বিত্তশালী ব্যক্তি এবার প্রবাহমান জোয়ার-ভাটার নদী ভরাট করছেন। নদীর জেগে উঠা চর জবর দখল করে ওই ব্যক্তির নেতৃত্বে চলছে অবৈধ স্থাপনা নির্মান কাজ। বহুতল ভবন নির্মানের জন্য ওই ব্যক্তি টইটং খালের বিশাল অংশে মাটি ভরাট করেছেন। উপজেলার টইটং ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড়ের নাপিতখালী গ্রামে চর দখলের মহোৎসব চলছে। নাপিতখালী-মৌলভী বাজার ব্রীজ সংলগ্ন খালের উত্তর পয়েন্টে প্রবাসীর নেতৃত্বে মার্কেট নির্মান কাজ চলমান রয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, টইটং ইউনিয়নের নাপিতখালী গ্রামের মৃত.নুরুল ইসলামের ছেলে সৌদি প্রবাসী বেলাল উদ্দিন ও তার ভাই হেলাল উদ্দিন মার্কেট নির্মান কাজ বাস্তবায়ন করছেন। তারা সরকারি জায়গা জবর দখল করে ব্রীজের লাগোয়া জায়গায় সম্প্রতি মাটি ভরাট কাজ শেষ করেছেন। টইটং খালের খর¯্রােতা নদীর প্রবাহমান অংশে ওই চক্র পাইলিং করে মাটি ভরাট করেছে। জায়গা পাউবোর মালিকানাধীন। পশ্চিম টইটং অংশের এ জায়গাটি অত্যন্ত মুল্যবান।
স্থানীয়রা জানায়, জায়গাটি সরকারি হলেও এর বর্তমান বাজার মুল্য প্রায় ২০ লাখ টাকা। রাজাখালী আরবশাহ বাজার ও পেকুয়া বাজার সড়কের মৌলভী বাজার গুরুত্বপুর্ন মোকামে এর স্থিতি অবস্থান। ওই জায়গার প্রতি লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে সৌদি প্রবাসি বেলাল উদ্দিনের।
নাপিতখালী লোকজন জানায়, বেলাল উদ্দিন শিবিরের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিল। এক সময় জামাত-শিবিরের অর্থের যোগানও দিতেন। বর্তমানে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় এক চেয়ারম্যানের ছত্রছায়ায় শিবিরের সাবেক এ নেতা সরকারী জায়গা জবর দখলে মেতেছে। টইটং খালটি জোয়ার ভাটায় রুপান্তর। পাহাড়ি ছরা থেকে এর উৎপত্তি। উজানের দিকে বহমান এ নদী বঙ্গোপসাগরের কুতুবদিয়া চ্যানেলে মিশেছে। ফসল উৎপাদন ও পানি নিস্কাশনের জন্য টইটং, বারবাকিয়া ও চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালীর আংশিকসহ বিপুল অঞ্চল এ নদীর সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। বেলাল উদ্দিন মৌলভী বাজার পয়েন্টে ব্রীজ লাগোয়া স্থানে মাটি ভরাট করায় নদীর ¯্রােতধারা সংকোচিত হয়েছে। চরের পাশাপাশি ভরাট করেছে নদীর প্রবাহমান অংশেও।
মাটির ক্ষয়রোধ করতে উপকুলীয় বনবিভাগ ওই স্থানে ম্যানগ্রোভ বাগান সৃজন করে। নদীর চরে শত শত সবুজ বেষ্টুনীর মাদার ট্রি উজাড় করে ওই ব্যক্তি জায়গাটি খালি করেছে। প্রায় ১০ শতক জায়গায় ভরাট করা হয়েছে মাটি। পাউবোর বেড়িবাধের দক্ষিন ও উত্তর অংশ উভয় পাশে বেলাল উদ্দিন মাটি ভরাট করেছেন। লোকালয় অংশে আগে মাটি ভরাট কাজ শেষ করেছেন। ওই অংশে এখন নির্মান কাজ চলমান রয়েছে। মার্কেট নির্মানের জন্য মাটির তলদেশে আরসিসি পিলার উঠে গেছে। বেড়িবাধের বাহিরের অংশটি নতুন করে ভরাট করছে। জায়গা বর্ধিতকরন করতে এ প্রক্রিয়া সম্প্রতি নিয়েছেন। মুল্যবান জায়গায় স্থাপনা নির্মান কাজ অব্যহত থাকলেও আইনগত ব্যবস্থা নেই সংশ্লিষ্ট বিভাগের।
ব্যবসায়ীরা জানায়, জায়গাটি এমনি জবর দখল হচ্ছেনা। তারা মোটা টাকা দিয়ে কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করেছে। স্থানীয় প্রভাবশালীদেরও টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করেছে। এক সময় ছিলেন শিবিরের দুর্ধর্ষ ক্যাডার। এখন তারা চেয়ারম্যান ও এমপির অনুগত। তারা কিছুই তোয়াক্কা করছেনা।
এ ব্যাপারে বেলাল উদ্দিনের ভাই হেলাল উদ্দিন জানায়, সমস্যা নেই। আমরা সব ঠিকঠাক করে কাজ আরম্ভ করেছি। তিনি জানান আ’লীগ নেতা আবু হেনা মোস্তফা কামাল চৌধুরী আমাদেরকে অনেক আগে থেকে সহযোগিতা করেছেন। এখন ওনাকেও বলেছি, টইটংয়ের চেয়ারম্যানকেও বলেছি। নিউজ লিখলে সমস্যা নেই।
পেকুয়ার ইউএনও সাঈকা শাহাদত জানান, বিষয়টি আমি জেনেছি। অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সরকারী জায়গা জবর দখলকারীদের ফৌজধারী আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে।

পাঠকের মতামত: