ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

পেকুয়ায় হচ্ছে বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটি মহাসড়ক, ৩৬১ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন: বদলে যাবে উপকূলীয় জনপদ

মুহাম্মদ গিযাস উদ্দিন, পেকুয়া :: কক্সবাজারের উপকূলীয় সম্ভাবনাময় উপজেলা পেকুয়ায় হচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে ‘‘বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটি মহাসড়ক’’। ইতিমধ্যেই সড়কটি নির্মাণের জন্য ১৬১ কোটি ২২ লাখ টাকার একটি প্রকল্প জাতীয় অর্থনীতি পরিষদের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় (একনেকে) অনুমোদিত হয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যেই সড়কটি নির্মাণের জন্য দরপত্র আহবান করা হবে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগ। চলতি মাসের ৫ নভেম্বর একনেক সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্টিত বর্তমান সরকারের ১৯তম একনেক সভায় জনগুরুত্বপূর্ন ’’বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটি মহাসড়ক’’ প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

মগনামা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম বলেন, ‘বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটি মহাসড়কটি হলেই বদলে যাবে পেকুয়া উপকূলীয় মগনামা জনপদ। জাতীয় মহাড়কের সাথে যুক্ত হবে এক সময়ের অবহেলিত অঁজ পাড়া গাঁ পেকুয়ার মগনামা ইউনিয়ন। ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিম বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটি মহাসড়ক নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়ায় মানণীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি মগনামাবাসীদের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২০১৭ সালের ১২ মার্চ আনুষ্টানিকভাবে চট্টগ্রাম নেভাল বার্থে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘বিএনএস শেখ হাসিনা নৌ ঘাঁটি’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। আর সেটি স্থাপিত হচ্ছে উপকূলীয় শহর কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার কুতুবদিয়া চ্যানেলের পূর্বপাশের্^ মগনামা ইউনিয়নে। মগনামায় শেখ হাসিনা সাব মেরিন নৌঘাঁটি নির্মাণের জন্য কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের মাধ্যমে গত ২০১৫ সালের দিকে বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী মগনামা ইউনিয়নে প্রায় চার’শ একর জমি অধিগ্রহণ করে। পরে অধিগ্রহণকৃত জায়গায় নৌ-বাহিনীর প্রধানসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল একাধিকবার মগনামায় নির্মাণাধীন বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটি পরিদর্শন করেন।

এদিকে জমি অধিগ্রহণ করার পর নৌঘাঁটি থেকে মগনামা লঞ্চঘাট হয়ে মগনামা-একতাবাজার পর্যন্ত সওজের মালিকানাধীন সড়টি মহাসড়কে রূপান্তরিত করার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। ইতিপূর্বে বেশ কয়েকবার সড়টিতে সমীক্ষা চালানো হয়েছে। সর্বশেষ প্রকল্পটি চলতি মাসের ৫ নভেম্বর একনেকের সভায় অনুমোদন হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নে নির্মাণাধীন বানৌজা শেখ হাসিনা নৌঘাঁটি থেকে মগনামা লঞ্চঘাট হয়ে মগনামা-চকরিয়ার একতাবাজার পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার মহাসড়ক হলেই বদলে যাবে পুরো পেকুয়া উপকুলের চেহারা। পেকুয়ার মগনামা যুক্ত হবে জাতীয় মহাসড়ের সাথে। মৎস্য ও লবণ সমৃদ্ধ উপজেলা পেকুয়া অর্থনৈতিকভাবে আরো এগিয়ে যাবে। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় এতদ:ঞ্চলের বাসিন্দারা আরো একধাপ এগিয়ে যাবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে সড়ক ও জনপথ (সওজ) এর কক্সবাজার জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমার সাথে যোগযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘একনেকে সবেমাত্র অনুমোদন হয়েছে ‘বানৌজা শেখ হাসিনা নৌ-ঘাঁটি মহাসড়ক’। কিছু প্রক্রিয়া এখানো বাকী রয়েছে। সব প্রক্রিয়া শেষ করতে কয়েক মাস সময় লাগবে। সব প্রক্রিয়া শেষ হলেই আগামী বছরের জানুয়ারীর দিকে বানৌজা শেখ হাসিনা নৌ-ঘাঁটি মহাসড়ক নির্মাণের জন্য দরপত্র আহবান করা হবে। দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ হলেই সড়কের কাজ উদ্বোধন করা হবে।’

মগনামা-পেকুয়া বাজার-পেকুয়া চৌমুহুনী ষ্টেশন-একতাবাজার সড়কের দুই পাশের্^ গড়ে উঠা সড়ক বিভাগের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘উচ্ছেদ করতে অনেক টাকার প্রয়োজন হয়। এখন যদি উচ্ছেদ করি, পরে দখলদাররা আবার স্থাপনা করবে। তাই মহাসড়ক নির্মাণের কাজ শুরুর প্রথম দিকেই মগনামা থেকে পেকুয়া বাজার-পেকুয়া চৌমুহুনী ষ্টেশন হয়ে একতাবাজার পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে গড়ে উঠা সকল প্রকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, পেকুয়া উপজেলার বৃহত্তম বানিজ্যিক কেন্দ্র পেকুয়া আলহাজ¦ কবির আহমদ চৌধুরী বাজার থেকে পেকুয়া উপজেলা সদর চৌমুহুনী ষ্টেশন পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে সড়কের জায়গাতে শত শত অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। সড়ক বিভাগের জায়গায় পাকা দোকান, বহুতল ভবনসহ ও বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্টান গড়ে তুলে দীর্ঘদিন ধরে অবৈভাবে ব্যবসা-বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।

পাঠকের মতামত: