ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়া-পেকুয়ায় শতকোটি টাকার চোরাই কাঠ দিয়ে তৈরী হচ্ছে অর্ধশত বোট

জাকের উল্লাহ চকোরী, কক্সবাজার থেকে ::  কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলায় মাতামুহুরী নদী ও সাগর তীরবর্তী এলাকায় চোরাইকাঠ দিয়ে তৈরী হচ্ছে অর্ধশত কার্গো, ফিশিং বোট ও নৌকা সাম্পান। এসব বোট তৈরীতে ব্যবহৃত হচ্ছে সরকারের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের অন্তত শতকোটি টাকার মূল্যবান কাঠ। এ দু’টি উপজেলার প্রতিটি গ্রামে কোন ধরণের বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ব্যাঙের ছাতারমত গজে উঠেছে,২শতাধিক স’মিল। রাতদিন গিলে খাচ্ছে বনের কোটি কোটি টাকার মূল্যবান কাঠ এসব স’মিলে। চকরিয়া উপজেলার ১৮ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা ও পেকুয়া উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে রয়েছে ২’শতাধিক অবৈধ স’মিল। এসব স’মিল থেকেই বোট নির্মানের যাবতীয় কাঠ সরবরাহ দেয়া হয়।

বিশেষত চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের বারবাকিয়া ও চুনতি রেঞ্জের বরইতলী বিটের মূল্যবান গর্জন গাছ গুলো ব্যবহৃত হচ্ছে চোরাই বোট তৈরীর কাজে। অনুরূপ ভাবে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের মেধাকচ্ছপিয়া বিটের শতবর্ষী মাদার ট্রি (গর্জন) গাছ গুলোর অর্ধেকই উজাড় হয়ে গেছে চোরাই বোট তৈরীর কাজে। ওই বিটের পূর্বেকার অপরাধ রেজিষ্ট্রার ও কর্তনকৃত গাছের গোড়ালি গুলো খতিয়ে দেখা হলে কি পরিমান মূল্যবান গাছ এসব বিট থেকে পাচার হয়েছে তা থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে। এ অভিযোগ এলাকাবাসীর।

অভিযোগ উঠেছে, চট্টগ্রাম বন সার্কেলের নিয়ন্ত্রানাধীন লামা,চট্টগ্রাম উপকূলীয় বনবিভাগ, চট্টগ্রাম দক্ষিণ ও কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের কতিপয় দূর্নীতি পরায়ন বনকর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যোগ সাজসে সংরক্ষিত ও রক্ষিত বনাঞ্চল থেকে শতবর্ষী মার্দারট্রি (গর্জন)সহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে লম্বা তক্তা, বাহাসহ বিভিন্ন উপকরনের সাইজ করে সড়ক ও নৌ পথে বিনাবাঁধায় পৌঁছে যাচ্ছে এসব কাঠ বোট নির্মাতাদের কাছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চকরিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল, বিএমচর, পূর্ববড় ভেওলা, সাহারবিল, ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমাট, ডুমখালী,কাটাখালী, সায়রাখালী, খুটাখালী, বদরখালী, বরইতলীর জেলে পাড়া, কোনাখালী ও পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী,বারবাকিয়া, পেকুয়া সদর, মগনামা ও উজানটিয়া ইউনিয়নে মাতামুহুরী নদী ও সাগর চ্যানেলে নির্মিত হচ্ছে এসব বোট।

এলাকার পরিবেশ সচেতন জনগন অভিযোগ করেছেন, বোট নির্মাতাদের কাছে স্থানীয় ফাঁড়ি ও থানা পুলিশের টোকেন রয়েছে। বন বিভাগের দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে অবৈধ চোরাই কাঠকে বৈধ কাঠ হিসেবে দেখিয়ে বোট নির্মাণে সহযোগিতা করে যাচ্ছে।

বদরখালী বাজারের স’মিল সংলগ্ন এলাকায় ত্রিপল ঢেকে দিয়ে নির্মিত হচ্ছে ৩টি ফিশিং বোট। বিএমচর ইউনিয়নের কুরুইল্যারকুম এলাকায় নির্মিত হচ্ছে বড় সাইজের ৩টি কার্গোবোট। অনুরূপ ভাবে উল্লেখিত এলাকায় এ ভাবে অর্ধশত বোট নির্মিত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে এলাকাবাসী পরিবেশ ও বনমন্ত্রানালয়ের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

পাঠকের মতামত: