ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

কক্সবাজারে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে হন্ডি ব্যবসায়িরা

কক্সবাজার প্রতিনিধি ::   কক্সবাজারে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অসংখ্য হুন্ডি ব্যবসায়ি। দেশের সব ব্যাংক অনলাইন ব্যাংকিং এর আওতায় আসার পরও এখনো কক্সবাজারে কমেনি হন্ডি ব্যবসায়িদের দৌরাত্ম।

বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক প্রবাসীদের টাকা অবৈধ ভাবে লেনদেনের মাধ্যমে সরকারের বিপুল টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে নিজেদের আখের গোছিয়ে বিপুল টাকা আয় করছে এসব হুন্ডি ব্যবসায়িরা। এছাড়া তারা ইয়াবা সহ অনেক অবৈধ টাকার লেনদেন করে বলে জানান প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
কক্সবাজারের বেশ কয়েকটি উপজেলা এবং মধ্যপ্রাচ্য সংশ্লিষ্ট কিছু এলাকা থেকে নেওয়া আইন-শৃংখলা বাহিনির তথ্যমতে এখনো অসংখ্য হন্ডি ব্যবসায়ি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কক্সবাজারে। তারা প্রতি নিয়ত কোটি কোটি টাকা অবৈধ ভাবে লেনদেন করে সরকারের বিপুল টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে একই সাথে হন্ডি ব্যবসার আড়ালে চালাচ্ছে আরো অনেক অবৈধ লেনদেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে পিএমখালী ইউনিয়নের মধ্যে সব চেয়ে বড় হন্ডি ব্যবসায়ি হচ্ছে মোহাম্মদ শরীফ প্রকাশ মাশি, তার সব চেয়ে বিশ^স্ত হিসাবে কাজ করে একই্ ইউনিয়নের আবদুস সালাম এবং বাংলাবাজার এলাকার নুরুল হুদা যে বর্তমানে কয়েকটি ডাম্পারগাড়ীর মালিক। এছাড়া সুইস গেইট এলাকার নুরুল আমিন এবং নুরুল আজিম সহ কয়েকজন হুন্ডি ব্যবসার সাথে জড়িত। এছাড়া ডিকপাড়া এলাকার সব চেয়ে বড় হুন্ডি ব্যবসায়ি হচ্ছে নজির সওদাগর এবং রমজান চেরাংঘর বাজারের একটি দোকান থেকে এখনো প্রকাশ্য হন্ডি ব্যবসা করছে তারা।

এছাড়া শহরের বড় বাজার এলাকার আবদুল গফুরের নাম হুন্ডি ব্যবসায়ির তালিকায় উর্ধে আছে। একই সাথে সাতকানিয়া লোহাগাড়ার মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী ভিত্তিক আরো কয়েকজন হন্ডি ব্যবসায়ি আছে বলে জানা গেছে। এছাড়া ঈদগাও ইসলামাবাদ এলাকার মোস্তাক আরেকজন বড় হুন্ডি ব্যবসায়ি। কয়েক বছর আগেও যে মোস্তাকের কিছুই ছিলনা বর্তমানে তার কয়েক শত কোটি টাকার সম্পদ। সাধারণ মানুষের ধারনা মানবপাচার থেকে শুরু করে অনেক অবৈধ পথে টাকা আয় করছে এই মোস্তাক। এছাড়া ফরিদ আহাম্মদের ছেলে মিজান এবং ইসলামাবাদ এলাকার তৈয়ব, আজিম ফরাজী সহ বেশ কয়েক জনের নাম হন্ডি ব্যবসায়ির তালিকায় আছে। এদিকে মহেশখালী থেকে মাতারবাড়ী ইউনিয়নের মগডেইল এলাকার আতাউল্লাহ, আবুল ফজল, ছোট মহেশখালী এলাকার হেলাল উদ্দিন সহ বেশ কয়েক জনের নাম উঠে এসেছে হুন্ডি ব্যবসায়ী হিসেবে।
এদিকে টেকনাফ এবং উখিয়া উপজেলার প্রায় ৪০ জনের বেশি হুন্ডি ব্যবসায়ির তালিকা করেছে সরকার। ইতি মধ্যে তাদের আইনের আওতায় আনার ও প্রকৃয়া শুরু হয়েছে বলে জানান আইনশৃংখলা বাহিনির কর্মকর্তারা।
এদিকে এক সময় হন্ডি ব্যবসা শুধু মাত্র বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর মধ্যে সিমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে ইয়াবা সহ মাদকের টাকা লেনদেন হচ্ছে এই হন্ডির মাধ্যমে।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার সদর থানার ওসি ফরিদ উদ্দিন খন্দকার বলেন, হুন্ডি একটি অবৈধ কাজ। হুন্ডির মাধ্যমে টাকা লেনদেন হলে সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হয়। তবে আগে হন্ডির মাধ্যমে বিদেশ থেকে টাকা আনা নেওয়ার কাজ করলেও বর্তমানে অনেকে ইয়াবা সহ মাদকের টাকা নিরাপত্তার জন্য এই হুন্ডির মাধ্যমে লেনদেন করছে। তাই হুন্ডি ব্যবসায়িদের আইনের আওতায় আনার জন্য আমাদের প্রচেস্টা সব সময় অব্যাহত আছে।
কক্সবাজারের সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আদিবুল ইসলাম বলেন,ঈদের সময় হন্ডি ব্যবসায়িদের দৌরাত্ব বেড়ে যায়। আর হন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠানো কখনো আইন সম্মান নয়। তাই এই মাধ্যমে যারা লেনদেন করবে সবাই অপরাধী। তাই সমস্ত হুন্ডি ব্যবসায়িদের আইনের আওতায় আনার জন্য আমাদের টিম কাজ করছে।

পাঠকের মতামত: