ঢাকা,শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

দখলের অভিযোগে চকরিয়ায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা

এম.জাহেদ চৌধুরী, চকরিয়া ::  কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল এহেছান চৌধুরী সাইফুলসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা হয়েছে। আপন চাচা ডা.আনোয়ারুল হক চৌধুরীর পৈত্রিক সম্পত্তি জবরদখল পরবর্তী দখল ছাড়তে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলাটি রুজু করেছেন হুমায়ুন কবির নামের একব্যক্তি। বাদি হুমায়ুন কবির চট্টগ্রাম মহানগরের হালিশহর সোনাশাহ মাজার সড়কের বাসিন্দা। তিনি আমোক্তারনামামুলে ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে বর্তমানে ভুক্তভোগী আনোয়ারুল হক চৌধুরীর সহায় সম্পদ দেখাশুনা করছেন।

আদালতের বিচারক বাদির অভিযোগটি আমলে তদন্ত পুর্বক প্রতিবেদন দিতে পুলিশ ব্যুারো অব ইনভেস্টিগেশন (পিআইবি) কক্সবাজারকে নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদিপক্ষের আইনজীবি মো.হেফাজ উদ্দিন। তিনি বলেন, আগামী ১৩ অক্টোবর মামলার পরবর্তী শুনানীর দিনধায্য করেছেন আদালত।

মামলার বাদি হুমায়ুন কবির শনিবার দুপুরে চকরিয়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ তুলেছেন, চাচা ডা.আনোয়ারুল হক চৌধুরীর সম্পত্তি জবরদখল পরবর্তী দখল ছাঁড়তে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় গত ১৭ জুলাই তিনি আদালতে মামলা করেন। তারপর থেকে অভিযুক্ত বিবাদি চেয়ারম্যান সাইফুলের লোকজন তাকে মামলা তুলে নিতে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।

বাদি হুমায়ুন কবির বলেন, চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের পশ্চিম মাইজপাড়া গ্রামের মরহুম বশির আহমদের ছেলে ডা.আনোয়ারুল হক চৌধুরী একজন প্রখ্যাত চিকিৎসক। তিনি দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামে থাকেন। সেই সুবাদে তাঁর অংশের পৈত্রিক সকল সহায় সম্পদ আপন ভাতিজা ডুলাহাজারা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুলকে রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্ব দেন। অপরদিকে ২০০৮ সালের ২০ নভেম্বর গ্রামের এলাকার হরি রঞ্জন নাথ নামের একব্যক্তির কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে একটি দোকানঘর ক্রয় করেন আনোয়ারুল হক চৌধুরী। সেটিও রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্ব দেন ভাতিজা সাইফুলকে।

মামলার আর্জিতে বাদি বলেন, হরি রঞ্জন নাথ থেকে কেনা দোকানঘরটি ২০১৮ সালের পহেলা ডিসেম্বর স্থানীয় একজনকে সেলামির ভিত্তিতে ভাড়া দেন মালিক আনোয়ারুল হক চৌধুরী। কিন্তু পৈত্রিক সম্পদের পাশাপাশি ওই দোকানটিও জোরপুর্বক দখলে রেখেছেন চেয়ারম্যান সাইফুল। পরবর্তীতে দোকানটি ছেঁেড় দিতে গেলে চাচার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন সাইফুল।

মামলার বাদি হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে চকরিয়া প্রেসক্লাবে উপস্থিত আনোয়ারুল হক চৌধুরীর ভাই আজিজুল হক চৌধুরী বলেন, ভাতিজা সাইফুলকে ছোটবেলা থেকে অদ্যবদি সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার পেছনে আনোয়ারুল হক চৌধুরী তাঁর অর্থবিত্ত, মেধা শ্রম বির্সজন দিয়েছেন। নিজের ছেলে সন্তান না থাকায় তিনি ভাতিজাকে সেইভাবে ভালোবাসতেন। অথচ সেই সাইফুল এখন প্রতিদান ভুলে চাচার সম্পদ দখলে মেতে উঠেছে।

আজিজুল হক চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, সাইফুল বর্তমানে আনোয়ারুল হক চৌধুরীর পাশপাশি আমার সহায় সম্পদও জবরদখলের চেষ্ঠা চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে আমার পৈত্রিক অংশের বেশ কিছু জায়গা অবৈধভাবে দখলে নিয়েছে। তাঁর নানা ধরণের হুমকি-ধমকির মুখে প্রায় একবছর যাবত আমি এলাকায় যেতে পারছিনা।

অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমিনুল এহেছান চৌধুরী সাইফুল বলেন, আমাদের পরিবারের মধ্যে পৈত্রিক সহায় সম্পদের এখনো ভাগ-বন্টন হয়নি। বৈঠকে বসলে দেখা যাবে আনোয়ারুল হক চৌধুরী আমাদের অংশের তুলনায় অনেকবেশি জমি-জমা নিজের নামে খতিয়ান করে নিয়েছেন। তাকে স্থানীয়ভাবে ও পারিবারিকভাবে বৈঠকে বসতে অনুরোধ করলেও তিনি পাশ কাটিয়ে যাচ্ছেন। পক্ষান্তরে কতিপয় মহলের ইন্ধনে আমার নামে ভিত্তিহীন অভিযোগে মামলা করছেন।

চাচার সম্পত্তি দখল ও চাঁদা দাবির অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, দোকানঘরটি আমার কেনা। এটি আমি বৈধভাবে ভোগদখলে আছি। আমাদের পরিবারের সবার মতো আমি এখনো আমার চাচাকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু তিনি পরিবারের অন্যদের বঞ্চিত করে একাই সাতকানি পরিমাপের একটি পুকুর নিজের নামে লিখে নিয়েছেন। তারপরও আমি চাই একটি সুষ্ঠ সমাধান।

পাঠকের মতামত: