ঢাকা,শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

ফুলছড়ি বনের পাহাড়ে এত মধু!

সেলিম উদ্দীন, ঈদগাঁহ কক্সবাজার :: কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফুলছড়ি রেঞ্জের আওতাধিন ফুলছড়ি বনবিট এলাকায় নির্বিচারে পাহাড় কাটার পরও ঘুম ভাঙ্গছেনা সংশ্লিষ্ট বনবিভাগের। বনায়নের জমিতে বসত ঘর তৈরি ও পাহাড় কেটে সমতল করা হচ্ছে। এছাড়া রাতের অন্ধকারে বাগানের শত শত গাছ কেটে বিভিন্ন স্থানে পাচার অব্যাহত রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এ কর্মকান্ড চললেও সংশ্লিষ্ট বন বিভাগ এ ব্যাপারে কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। স্থানীয় প্রভাবশালীদের আস্করায় নুরজাহান বেগম নামের কতিপয় ভূমিদস্যু ও বনখেকো এ অপকর্ম চালাচ্ছে। এতে করে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দারা।

প্রাপ্ত তথ্য প্রকাশ, কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের আওতাধীন ফুলছড়ি বনবিটের খুটখালী পূর্ব নয়াপাড়া আবুশামা পাহাড় এলাকার বাসিন্দা শফিউল আলমের স্ত্রী নুরজাহান বেগম বনবিভাগকে ম্যানেজ করে বিগত এক সপ্তাহ ধরে নির্বিচারে পাহাড় কাটা অব্যাহত রেখেছে। বৃষ্টির সুযোগে বেশ ক’জন শ্রমিক দিয়ে দিনরাত পাহাড় কেটে মাটি পাচার করায় স্থানীয় বাসিন্দারা চরম আতংকে দিনাতিপাত করছে বলে জানা গেছে।

এলাকাবাসিরা জানান, যে কোন মুর্হুতে কাটা পাহাড় ধ্বসে প্রাণহানির মত বড় দূর্ঘটনার অশংকা রয়েছে। সম্প্রতি পাহাড় কেটে মাটি অন্যত্র সরাতে গিয়ে পাশ^বর্তী ছিদ্দিক আহমদের বসত ভিটায় গিয়ে পড়ে। এসময় বৃষ্টির পানিতে পলি মাটি সরে গিয়ে তাদের বসতভিটা, গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। বিষয়টি তাকে মৌখিকভাবে বলা হলে সে উল্টো ছিদ্দিক আহমদের পরিবারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।

তারা আরো জানায়, স্থানীয় বাসিন্দারা বারবার নিষেধ করা সত্বেও নুর জাহান বেগম পাহাড় কাটা বন্দ করছেনা। তাদের প্রশ্ন ফুলছড়ি বনের পাহাড়ে এত মধু!

এদিকে পাহাড় কেটে মাটি পাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় গত ৩০ জুলাই ছিদ্দিক আাহমদের পুত্র সোহেল রানার বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছে বলে জানা গেছে।

অভিযুক্ত কক্সবাজার সরকারী কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সোহেল রানা জানায়, সম্প্রতি তাদের বসতভিটার পাশে পাহাড় কেটে মাটি তাদের বসতভিটায় ফেলা হচ্ছে। এমনতর খবর পেয়ে তিনি নিজে নুরজাহান বেগমকে তাদের বসত ভিটায় মাটি ফেলতে নিষেধ করেন। এসময় নুরজাহান তার কথার কোন তোয়াক্কা না করে ৪/৫ জন শ্রমিক দিয়ে পাহাড় কেটে মাটি পাচার চালিয়ে যাচ্ছে। একপর্যায়ে সে লোকজন নিয়ে তার দিকে তেড়ে আসে। এসময় স্থানীয়রা তাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলে তাদেরকেও লাটি সোটা নিয়ে হামলার চেষ্টা চালায়। এসময় নুরজাহান তার দলবল নিয়ে তাকে জানে মেরে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হবে বলে হুমকি ধমকি দেয়।

বিষয়টি তিনি তাৎক্ষনিক স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করে। পরে সচুতুর নুরজাহান তাকে অভিযুক্ত করে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে।

সোহেল রানার অভিযোগ, স্থানীয় প্রভাবশালী ভূমিদস্যুদের সহযোগিতায় নুরজাহান বেগম পাহাড় কেটে বসতঘর নির্মাণ করে আসলেও সংশ্লিষ্টদের উচ্ছেদে বন কর্তৃপক্ষ কোনো ভূমিকা রাখছে না। অপরদিকে এলাকার দুষ্কৃতিকারী বনখেকোরা বনায়নের পাহাড় কেটে মাটি ও রাতে ট্রাক ভর্তি করে শত শত গাছ পাচার করলেও ভুক্তভোগীরা কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না।

পাহাড় কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে ফুলছড়ি বনবিটের স্টাফ নুহ আলম বলেন, পাহাড় কাটার খবর পেয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট এলাকা পরিদর্শন করে মাটি পাচার বন্দ করে দিয়েছেন। পাহাড় কাটার সাথে যারা জড়িত তাদের খোঁজ-খবর নিয়ে আাইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

অভিযোগের ব্যাপারে ফুলছড়ির রেঞ্জার সৈয়দ আবু জাকারিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ ধরনের কোন অভিযোগ তিনি এখনো পাননি। সুনির্দিষ্টভাবে কেউ অভিযোগ দিলে তিনি বিধিমতে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

পাঠকের মতামত: