ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় গরু মালিকদের মাঝে আতঙ্ক: চোরচক্রের আস্তানা থেকে চারটি গরু উদ্ধার: মোটরসাইকেল জব্দ

সাহারবিল ইউনিয়নের কোরালখালীর সিন্ডিকেট ডিপো থেকে পুলিশ চোরাই গরু উদ্ধার ও মোটর সাইকেল জব্দ করেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::

চকরিয়ায় পুলিশের এসআই ও কৃষকের বাড়ির গোয়ালঘর থেকে অভিনব কৌশলে চারটি গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। লোকমুখে চুরি হওয়া গরুর অবস্থান জেনে গতকাল শুক্রবার সকাল দশটার দিকে গরুর মালিকেরা স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের কোরালখালীর আলোচিত গরু চোর সিন্ডিকেটের আস্তানা ঘেরাও করলে প্রথমে দুটি ও পরে চকরিয়া থানা পুলিশের চাপের মুখে আরো দুটি গরু ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় চুরিতে জড়িত সিন্ডিকেট চক্রটি।

ওইসময় উত্তেজিত জনতার গণপিটুনিতে থেকে বাঁচতে কৌশলে মোটর সাইকেল ফেলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছে চোর চক্রের মূলহোতা। পরে থানা পুলিশ তাঁর ফেলে যাওয়া একটি মোটর সাইকেল জব্দ করেছে। তাঁর আগে চোরচক্রের আস্তানায় গরু সনাক্ত করতে গিয়ে উল্টো চোরচক্রের হামলায় আলী মদন (৫৪) নামের এক গরু মালিক আহত হয়েছেন।

স্থানীয় লোকজন জানায়, শুক্রবার ভোররাতে উপজেলার বিএমচর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের খনাজুম এলাকার কৃষক আলী মদন ও জয়নাল আবেদীনের গোয়াল ঘর থেকে দুটি করে চারটি গরু চুরির ঘটনা ঘটে। স্থানীয় জনগন গোপনে জানতে পারে চুরি হওয়া এসব গরু পিকআপ গাড়িতে তুলে সাহারবিল ইউনিয়নের গরুচোরের আস্তানায় নিয়ে যায়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বিএমচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, তার ইউনিয়ন থেকে শুক্রবার ভোররাতে চুরি হওয়া চারটি গরু সাহারবিল ইউনিয়নের কোরালখালীর আলোচিত গরু চোর সিন্ডিকেটের ডিপোতে রয়েছে জানতে পেরে গরুর মালিকসহ স্থানীয় লোকজন সেখানে ঘেরাও করে। এ সময় উল্টো চোরচক্রের লোকজন গরুর মালিক আলী মদনকে পিটিয়ে আহত করে। এরপরও স্থানীয় লোকজনের চাপের মুখে আলী মদনের দুটি গরু ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় সিন্ডিকেট প্রধান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আরো দুটি চোরাই গরু উদ্ধার এবং একটি মোটর সাইকেল জব্দ করে।

ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘চোরাইকৃত চারটি গরু একই আস্তানায় ছিল এবং বিকেলে গরু দুটি এক নেতার মধ্যস্ততায় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে প্রথমে দুটি গরু ছেড়ে দেওয়ার পেছনে রহস্য রয়েছে। তা হচ্ছে, গরুর মালিক আলী মদনের এক সন্তান পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর। তার নাম কফিল উদ্দিন। সেটি জানার পর বাধ্য হয়েই গরু দুটি ছেড়ে দেয় অভিযুক্ত নবী হোছাইন।’

অভিযোগ উঠেছে, গরু চুরির ঘটনাটি ধামাচাপা এবং গরু চোর সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে মামলা না করতে সিন্ডিকেট চক্রের হোতা মোটা অংকের টাকায় আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী কয়েকজন নেতাকে দিয়ে পুলিশকে ম্যানেজ করার চেষ্ঠা করছেন। যাতে থানায় এ সংক্রান্ত কোন মামলা না হয়। গতরাত পর্যন্ত থানায় বিষয়টির আলোকে কোন মামলা হয়নি।

চকরিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মো. শফিকুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘বিএমচর থেকে চোরাইকৃত চারটি গরুই দুই দফায় উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় একটি মোটর সাইকেলও জব্দ করা হয়েছে। গরু চুরির পেছনে কারা জড়িত তাদেরকে শনাক্ত করা হচ্ছে। তবে গরুর মালিক থানায় লিখিত অভিযোগ না দিলে তা মামলা হিসেবে রুজু করা হবে।’

তবে অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত নবী হোছাইন। তিনি সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, এই ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা নেই। এমনকি পুলিশ তার বাড়ির বাউন্ডারির ভেতর থেকে কোন গরু উদ্ধার করেনি। তবে অদূর থেকে দুটি গরু উদ্ধার করেছে বলে তিনি শুনেছেন। ##

পাঠকের মতামত: