ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

পেকুয়ায় স্বামীর বাড়ি থেকে গৃহবধুর লাশ উদ্ধার, স্বামী-শ্বাশুড়ি আটক

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::   কক্সবাজারের পেকুয়ায় স্বামীর বসতঘর থেকে জনুয়ারা বেগম (২২) নামের পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের করিয়ারদিয়া বাইন্যা পাড়া এলাকা থেকে পেকুয়া থানা পুলিশ ওই গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করে।

শাশুড় বাড়ির লোকজন ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে দাবি করলেও নিহতের মায়ের অভিযোগ, যৌতুকের জন্য নির্যাতন চালিয়ে স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজন পরিকল্পিতভাবে আমার মেয়ে জনুয়ারা বেগমকে হত্যা করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী রিদুয়ান ও শ^াশুড়ি ছকিনা বেগমকে আটক করেছে।

পেকুয়া থানা সূত্রে জানাগেছে, সোমবার রাত ১১টার দিকে উজানটিয়া ইউনিয়নের করিয়ারদিয়া বাইন্যা পাড়া এলাকায় এক গৃহবধুর আত্মহত্যার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পেকুয়া থানার ওসির নির্দেশে এসআই সুমন সরকার ঘটনাস্থলে পৌছে নিহত গৃহবধুর লাশটি উদ্ধার করে।

লাশ উদ্ধারে যাওয়া পেকুয় থানার এস.আই সুমন সরকার বলেন, নিহতের বসতঘর থেকে গৃহবধুর লাশটি আমরা গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় উদ্ধার করি। গৃহবধুর পিতা ও মায়ের অভিযোগ থাকায় স্বামী রিদুয়ান ও শ্বাশুড়ী ছকিনা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।

নিহত জনুয়ারা বেগমের মা সাদিয়া বেগম সাংবাদিকদের জানান, বছর আগে উজানটিয়া ইউনিয়নের করিয়ারদিয়া বাইন্যা পাড়া এলাকার আমিরাত প্রবাসী মোহাম্মদ রিদুয়ানের সাথে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক আমার মেয়ে জনুয়ারা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছু দিনের মধ্যে স্বামী প্রবাসে চলে যায়। স্বামীর অবর্তমানে শ্বাশুড়ী প্রায় সময় আমার মেয়েকে যৌতুকের দাবী তুলে নির্যাতন চালিয়ে মারধর করতো। একপর্যায়ে মারধরের ঘটনা জানতে পেরে তার স্বামী বিদেশ থেকে চলে আসে।

এরই মধ্যে মেয়ে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। মেয়ের আপ্রাণ চেষ্টা ছিল তার স্বামীর সাথে সুখে সংসার করা। গত ১৫দিন পূর্বে স্বামী রিদুয়ান সাথে তার মা যোগসাজসে যৌতুকের জন্য আবারও মারধর ও নির্যাতন করে। সর্বশেষ সোমবার রাতে ওইদিন বিশ হাজার টাকা দাবীকৃত যৌতুকের টাকা আনতে না পারায় সেদিন মেয়েকে প্রচুর মারধর করা হয়। এরপর রাত সাড়ে ১১টার দিকে মেয়ের স্বামী রিদুয়ান খবর দেয় আমার মেয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তবে আমি নিশ্চিত আমার মেয়ে জনুয়ারা আত্মহত্যা করেনি তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে।

পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.জাকির হোসেন ভূঁইয়া বলেন, গৃহবধুর লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী ও তার শ্বাশুড়ীকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। সুরুতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: