ঢাকা,শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় গণধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীসহ দুই নারী

চকরিয়া প্রতিনিধি ::  কক্সবাজারের চকরিয়ায় বখাটে কর্তৃক ৬ষ্ঠ শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রী (১২) গণধর্ষনের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় ওই স্কুলছাত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে এক বিধবা নারীও (৩৬) গণধর্ষনের শিকার হয়। গত বুধবার (১৭ জুলাই) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা হারবাং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর হারবাং ইছাছড়ি হায়দারঘোনা এলাকার এ গণধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও স্থানীয় চেয়ারম্যান বিচারের আশ্বাস দিয়ে ধামাচাপা দেয়ায় বিষয়টি এতদিন গোপন থাকে। বুধবার রাতে হারবাং ইউনিয়নে স্কুলছাত্রীসহ দুই নারী গণধর্ষনের শিকার হওয়ার বিষয়টি শনিবার (২০ জুলাই) সকালে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে তৎপর হয় পুলিশ। পরে পুলিশ ওই এলাকায় অভিযান শুরু করে।

এদিকে গণধর্ষনের শিকার স্কুলছাত্রীকে বৃহস্পতিবার সকালে তার স্বজনরা চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ধর্ষনের শিকার স্কুলছাত্রীকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ওয়ান ষ্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসিতে) রেফার করেন। বর্তমানে স্কুলছাত্রটি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছে। অপরদিকে বখাটে কর্তৃক ৬ষ্ট শ্রেণীতে পড়–য়া স্কুলছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় স্থাণীয় আজিজনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও পার্শ্ববর্র্তী আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষার্থীরা এক বিশাল মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে। মানববন্ধনের দুইস্কুলের শিক্ষার্থীরা ছাড়াও শিক্ষক-শিক্ষিকাগন অংশ নেয়। এসময় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে বখাটেদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবী জানায়।

গণধর্ষনের শিকার ওই স্কুলছাত্রীর ভাই জানায়, চকরিয়া উপজেলা হারবাং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর হারবাং ইছাছড়ি হায়দারঘোনা এলাকার পাশাপাশি দুইটি বাড়ি ছাড়া আর কোন বাড়ি নেই। তৎমধ্যে একটি বাড়িতে বৃদ্ধ মা-বাবা ভাইবোনসহ আমরা থাকি এবং অপর বাড়িতে বিধবা নারী (৩৬) তার সন্তান নিয়ে থাকেন। গত ১৭ জুলাই পার্শ্ববর্তী বাড়ির বাসিন্দা ওই বিধবা নারীর সন্তান অন্যত্র বেড়াতে যাওয়ায় তিনি একা হয়ে পড়েন। পরে রাতের বেলায় আমার বাবা-মা’কে বুঝিয়ে তার সাথে থাকার জন্য আমার স্কুল পড়–য়া ছোটবোনকে নিয়ে যায়। ওই সময় বাড়িতে আমার বৃদ্ধ বাবা-মা ছাড়া আর কেউ ছিলনা। এদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় ছাবের আহমদের ছেলে মো আসিফ এর নেতৃত্তে ৫-৬ জন স্থানীয় বখাটে আমাদের বাড়িতে ঢুকে আমার স্কুল পড়–য়া ছোট বোনকে খুঁজতে থাকে। এসময় বখাটেরা আমার ছোট বোনের সন্ধান দেয়ার জন্য বৃদ্ধ বাবা-মাকে মারধর শুরু করলে তাদের চিৎকারে পার্শ্ববর্তী বাড়ির বাসিন্দা বিধবা নারীর ঘুম ভেঙ্গে যায়। পরে তিনি দরজা খুলে আমাদের বাড়ির দিকে আসতে চাইলে তিনজন বখাটে ওই বাড়িতে ঢুকে আমার ছোট বোনকে কোলে তুলে পার্শ্ববর্তী একটি পরিত্যাক্ত ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে বখাটেরা আমার ছোট বোনকে পালাক্রমে গণধর্ষন করে। এসময় ওই নারী তাদের বাঁধা দিলে অপর বখাটেরা তাকেও গণধর্ষন করে পালিয়ে যায়।

গণধর্ষনের শিকার ওইস্কুল ছাত্রীর ভাই আরও জানায়, ঘটনার পরদিন সকালে বিচারের আশ্বাস দিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালায়। বুধবার রাতে হারবাং ইউনিয়নে স্কুলছাত্রীসহ দুই নারী গণধর্ষনের শিকার হওয়ার বিষয়টি শনিবার (২০ জুলাই) সকালে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে পিছু হটে পড়ে ইউপি চেয়ারম্যান। তবে স্থানীয় হারবাং ইউপি চেয়ারম্যান তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগটি অস্বীকার করে বলেন, বখাটে কর্তৃক স্কুলছাত্রীসহ দুই নারী গণধর্ষনের বিষয়টি অত্যান্ত দুঃখ জনক। হারবাংয়ে গণধর্ষনের বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ শনিবার বিকাল থেকে অভিযান চালালেও বখাটে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

পাঠকের মতামত: