ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মাকে জবাই করে হত্যা

লাবণ্য রাণী পূজা,  চকরিয়া  ::   নিহত নাজমা আক্তারের এক মেয়ে সদ্য এসএসসি পাস করে কলেজে ভর্তি হয়েছে। ওই মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় একই এলাকার মো.হাসান নামের এক যুবক। হাসান পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী। নাজমা আক্তার ও কলিম উল্লাহ এই বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয় বখাটে হাসান। এতে প্রায় সময় নাজমা আক্তার ও কলিম উল্লাহকে হুমকি দিত সে।

ফলে নাজমা আক্তার তার মেয়ের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে হারবাং ইউনিয়নের গোদার পাড়াস্থ দাদার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। ওই ঘটনায় আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে রাজমিস্ত্রি হাসান। এর প্রতিশোধ নিতে সোমবার রাতে হারবাং মুসলিম পাড়ার নাজমা আক্তারের ঘরে ঢুকে সন্তানের সামনে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।

তদন্তে আরো উঠে এসেছে, হাসানের বাড়ি কক্সবাজার। সে হারবাংয়ের মুসলিম পাড়ায় মামার বাড়িতে থেকে রাজমিস্ত্রী কাজ করতো। এঘটনায় তার মামা-খালারাও জড়িত থাকতে পারে বলে পুলিশ সন্দেহ করছে। ঘটনার পর থেকে তার মামা ও খালারা পলাতক রয়েছে।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.হাবিবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চকরিয়া নিউজকে বলেন, মেয়ের বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বখাটে হাসান নাজমা আক্তারকে জবাই করে হত্যা করতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

তবে সন্দেহভাজন হাসানকে আটক করতে পারলে হত্যার  ক্লু উদঘাটন সহজ হবে বলে আশা করছি। পুলিশ সেভাবে কাজ করছে।

উল্লেখ্য, গতকাল  সোমবার রাত ৮টায় কক্সবাজারের চকরিয়ায় উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের মুসলিম পাড়ায় নাজমা আক্তার (৪৫) নামের এক গৃহবধুকে জবাই করে হত্যা করা হয়। নিহত নাজমা আক্তার ওই এলাকার কলিম উল্লাহর স্ত্রী। তবে এ ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গতকাল সোমবার রাতে ঘরে মায়ের সাথে ৮ম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছেলে পড়ালেখা করছিলো এবং নাজমা আক্তার ঘরের কাজ করছিলো। রাত ৮টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত অতর্কিত অবস্থায় ঘরে ঢুকে নাজমা আক্তারকে জবাই করে হত্যা করে পালিয়ে যায়। ওই সময় ঘরে থাকা ছেলে ভয়ে হতবিহবল হয়ে পড়ে।

ছেলের শোরচিৎকারে এলাকার লোকজন এগিয়ে আসলে নাজমার মৃতদেহ মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে। পরে থানা পুলিশকে খবর দিলে চকরিয়া থানার ওসি মো.হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে লাশ উদ্ধার করে।

স্থানীয় লোকজন আরো জানায়, নাজমা আক্তার ও কলিমউল্লাহর ২ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে। চাকুরীর সুবাদে বড় ছেলে চট্টগ্রামে ও ৭ম শ্রেণীতে পড়ুয়া এবং সদ্য এসএসসি পাস করা দুই মেয়ে দাদার বাড়িতে থাকে। কলিম উল্লাহ পেশায় একজন রিক্সাচালক।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.হাবিবুর রহমান চকরিয়া নিউজকে বলেন, নিহত নাজমা আক্তারের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এঘটনায় নিহতের স্বামী কলিম উল্লাহ বাদি হয়ে একটি এজাহার দায়ের করেছেন। এজাহারটি মামলা হিসেবে এন্ট্রি করা হবে। হত্যার ক্লু উদঘাটন ও আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে।

পাঠকের মতামত: