মাহাবুবুর রহমান, কক্সবাজার :: সাগরে মাছের প্রজনন বৃদ্ধি এবং মাছের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য বর্তমানে সাগরে মাছ ধরা বন্ধ রয়েছে। ২০ মে থেকে শুরু করে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন বাংলাদেশের সব জেলার সব জেলেদের সাগরে যাওয়া নিষিদ্ধ। তাই কোন ধরনের নৌযান এখন সাগরে যাচ্ছে ফলে কক্সবাজারের ২ লাখ জেলে সহ সারা দেশের প্রায় ১৫ লাখ জেলে পরিবারে হাহাকার অবস্থা হলেও সাগর থেকে ঠিকই মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে বিদেশী জেলেরা। বিশেষ করে ভারতীয় জেলেরা ভারী বোট নিয়ে বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে বলে জানান বোট মালিক সহ জেলেরা। তাদের দাবী দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এমন তথ্য পাচ্ছেন তারা। এদিকে গতকাল রবিবার পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার বাংলাদেশের জলসীমা থেকে ভারতীয় ৩২ টি বোট সহ মাঝিমাল্লা আটক করেছে বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর পাওয়া গেছে বলে জানান কক্সবাজার বোট মালিক সমিতির নেতারা। এছাড়া ভোলা সহ অনেক জেলার জেলেরাও সরকারি নিষেধাজ্ঞা না মেনে সাগরে মাছ ধরছে বলে জানান তারা।
কক্সবাজার শহরের টেকপাড়া এলাকার বোট মালিক জয়নাল আবেদীন বলেন,আমি ৪০ বছর ধরে বোট মালিক হিসাবে মাছের ব্যবসার সাথে জড়িত এবারই প্রথম দেখলাম ৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরা বন্ধ। তবে এর জন্য আসলে কি লাভ হয়েছে সেটা সরকার ভাল জানবে। তবে পাথরঘাটা,পটুয়াখালী সহ বিভিন্ন জায়গায় ফোন করে জানা গেছে সেখানে মাছ ধরা বন্ধ নেই। অনেকে সরকারি শীর্ষ নেতাদের প্রভাব খাটিয়ে সাগরে নিয়মিত মাছ ধরতে যাচ্ছে। শুধু কক্সবাজারেই সরকারের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হচ্ছে। এছাড়া আমাদের কাছে নিশ্চিত খবর আছে ভারতীয় জেলেরা প্রতিনিয়ত সাগরে মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে।তারা খুলনা সুন্দরবন,ভোলা সহ সব মোহনা থেকে বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। ইতি মধ্যে বহু সংবাদ মাধ্যমে এরকম ছবি সহ সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।
নুনিয়ারছড়া এলাকার সিরাজুল ইসলাম বলেন,সাগরে যেহেতু বাংলাদেশের বোট যাচ্ছে না তাই এখন বিদেশী বোট গুলো সেখানে ব্যাপক অপতৎপরতা চালাচ্ছে এমন খবর আমাদেরকে বিভিন্ন জেলার বোট মালিকরা প্রতিনিয়ত দিচ্ছে। কিন্তু আমাদের করার কিছুই্ নেই। তিনি বলেন, আমরা আগেও দাবী করেছিলাম আন্তর্জাতিকভাবে পার্শবর্তি কয়েক টি দেশ যে সময় মাছ ধরা বন্ধ করবে তখন আমাদেরও বন্ধ করলে প্রকৃত পক্ষে মাছের প্রজনন বাড়বে।
টেকপাড়া এলাকার বোট মালিক আমির হোসেন বলেন, বাংলাদেশের জলসীমার ভেতরে ঢুকে ভারতীয় জেলেরা মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে সেটা নতুন কিছুনা। এখন সাগরে মাছ ধরা বন্ধ আছে সে জন্য হয়তো তাদের বেশি দেখা যাচ্ছে কিন্তু খোলার সময়ও ভারতীয় জেলেরা আরো ব্যাপক ভাবে আমাদের ভেতরে ঢুকে মাছ ধরে নিয়ে যায় বরং তারা অনেক সময় আমাদের বোটকে ধাক্কা মেরে সাগরে ঢুবিয়ে দেয়।
খুরুশকুল এলাকার বোট মালিক নেজাম উদ্দিন বলেন, সরকার বাকঁখালীর মোহনা থেকে সাগরে বোট যেতে দিচ্ছে না। কিন্তু বাজারে অনেক ইলিশ মাছ,আইঁড় মাছ,চাঁদা মাছ সহ অনেক সাগরের মাছ পাওয়া যাচ্ছে সে গুলো আসছে কোথা থেকে। আমরা যতটুকু জানি পাটুয়ারটেক, টেকনাফ, বাহারছড়া শীলখালি অনেক স্থান থেকে সাগরে প্রতিনিয়ত বোট যাচ্ছে তারা এসব মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করছে। কিন্তু আমরা ঘরে বসে আছি। এছাড়া প্রায় সময় বিভিন্ন অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে দেখে আসছি ভারতীয় বোট বাংলাদেশের জলসীমায় এসে মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। যেমন গতকাল রবিবার পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার জলসীমা থেকে ভারতীয় ৩২ টি বোট আটক করা হয়েছে বলে জানান সেখানকার বোট মালিক আনিস মোল্লা। তিনি পটুয়াখালীর একটি অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে প্রচার হওয়া একটি লিংক এবং আটক বোটের ছবি ও পাঠিয়েছেন।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ভারতীয় অনেক দেশের বোট বাংলাদেশের জলসীমায় এসে মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে এই খবর আমরা প্রায় শুনছি। এছাড়া বড় সমস্যা হচ্ছে আমরা নিশ্চিত ভোলা, খুলনা, মহিপুর সহ অনেক স্থান থেকে প্রতিনিয়ত বোট সাগরে যাচ্ছে তারা সব সময় সাগর থেকে মাছ ধরে এনে উচ্চ মুল্যে বাজারে বিক্রি করছে। যার প্রমান দেশের প্রতিটি বাজারে এখন সাগরের মাছে ভরপুর। এছাড়া কিছুদিন আগে কুতুবদিয়ার মোহনা থেকে বেশ কিছু বাইরের জেলার বোট আটক করেছিল কোস্টগার্ড। পরে তাদের জরিমানা করে ছেলে দেওয়া হয়েছে। মোট কথা ঘরে বন্দি আছে কক্সবাজারের সমস্ত বোট। বাইরের জেলার বোট সরকারের বড় বড় নেতাদের প্রভাব খাটিয়ে ঠিকই সাগরে যাচ্ছে। এছাড়া কক্সবাজারের বাকঁখালী মোহনা বন্ধ করা হলেও বেশ কয়েকটি মোহনা থেকে ঠিকই বোট সাগরে যাচ্ছে তার প্রমান কক্সবাজারের প্রতিটি ছোট বড় বাজারে সাগরের মাছ পাওয়া যাচ্ছে।
এদিকে তথ্য সূত্রে নিয়ে পটুয়াখালী কলাপাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার ভুমি অনুপ দাশ দৈনিক কক্সবাজারকে জানান,কোষ্টগার্ড বেশ কয়েকটি বোট আটক করেছে সব গুলো বোটই ভারতীয় এবং প্রত্যেকটি বোটে ১৫-১৮ জন মাঝিমাল্লা রয়েছে। সেই মাঝি মাল্লাও ভারতের ২৪ পরগনার বাসিন্দা। এ বিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
প্রকাশ:
২০১৯-০৭-০৯ ০৮:৫০:১৩
আপডেট:২০১৯-০৭-০৯ ০৮:৫০:৪১
- মিলেমিশে চলছে সোনাদিয়া দ্বীপ ধ্বংসের প্রতিযোগিতা
- চকরিয়ায় আঞ্চলিক সড়কে যানবাহনে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে পুলিশের জালে
- চকরিয়ায় মসজিদের নামে অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎ
- নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিতে চকরিয়ায় কৃষিজমির সর্বোচ্চ ব্যবহার বাড়ানোর তাগিদ
- চকরিয়ায় বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ
- ইসলামের বৃহৎ স্বার্থে চকরিয়া জামায়াতে ইসলামীর সাথে একটেবিলে বসতে চায়
- চকরিয়ায় চিংড়িঘের দখল নিয়ে দু-গ্রুপে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ১, অস্ত্রসহ ৪ সন্ত্রাসী আটক
- চকরিয়ায় পৌরশহরের তিনটি আবাসিক হোটেল ও চারটি রেস্টুরেন্টে অভিযান
- কিশলয় শিক্ষা নিকেতন স্কুলে বিলুপ্ত কমিটির স্বাক্ষর নিয়ে বিল ভাউচার করার অভিযোগ
- শীতের কম্বল দিতে বেড়িয়ে পড়েন চকরিয়ার মানবিক ইউএনও আতিকুর রহমান
- চকরিয়ায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইউপি মেম্বারসহ আহত ৪
- শীতের কম্বল দিতে বেড়িয়ে পড়েন চকরিয়ার মানবিক ইউএনও আতিকুর রহমান
- চকরিয়ায় পৌরশহরের তিনটি আবাসিক হোটেল ও চারটি রেস্টুরেন্টে অভিযান
- খুটাখালীতে শতাধিক পরিবারে শীতবস্ত্র বিতরণ
- চকরিয়ায় বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ
- পেকুয়ায় রব্বত আলী পাড়া সড়কে গাড়ি চলে না ২০ বছর!
- চকরিয়ায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণরর মামলার অন্যতম আসামি ফারুককে গ্রেফতার করেছে র্যাব
- কক্সবাজার সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আকতার চৌধুরী
- কিশলয় শিক্ষা নিকেতন স্কুলে বিলুপ্ত কমিটির স্বাক্ষর নিয়ে বিল ভাউচার করার অভিযোগ
- ইসলামের বৃহৎ স্বার্থে চকরিয়া জামায়াতে ইসলামীর সাথে একটেবিলে বসতে চায়
- চকরিয়ায় মৎস্য অধিদপ্তরের উদোগে নৌযান মালিক ও সারেং দের নিয়ে কর্মশালা
- চকরিয়ায় চিংড়িঘের দখল নিয়ে দু-গ্রুপে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ১, অস্ত্রসহ ৪ সন্ত্রাসী আটক
পাঠকের মতামত: