মাহাবুবুর রহমান, কক্সবাজার ::
কক্সবাজারে সরকারি বিএডিসির ধানের বস্তা স্থানীয় নি¤œমানের ধান ঢুকিয়ে দিয়ে বিক্রি করছে বীজ ডিলাররা। এতে ডিলাররা বিপুল টাকার লাভবান হলেও চরম ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সাধারণ চাষীরা। দীর্ঘদিন ধরে জেলার বেশির ভাগ বিএডিসির ধানের ডিলার এই অনিয়ম দূর্নীতির আশ্রয় নিলেও তা দেখার কেউ নেই। গত ১৭ জুন রামু কাশেম বীজ ভান্ডারে সরকারি বিএডিসি ধানের বস্তাতে নি¤œমানের স্থানীয় বীজ ধান বিক্রি কালে ৩৯ বস্তা নকল সরকারি বীজ ধান উদ্ধার করেছে কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনার পরে জেলার অনেক চাষী অভিযোগ করেন বীজ ডিলারদের কাছ থেকে উচ্চ মূল্যে বীজ সংগ্রহ করে জমিতে রোপন করে অনেকবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। এছাড়া তারা সারেও ভেজাল সার মিশিয়ে বাজারে বিক্রি করে এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি আমরা সাধারণ চাষীরা।
রামু কাওয়ারখোপ এলাকার চাষী রমিজ আহামদ বলেন, আমি প্রতি মৌসুমে ১০ কানির উপরে জমিতে ধান চাষ করি। এবারে রামু চৌমুহনির একটি বীজের দোকান থেকে সরকারি ধান কিনে জমিতে দেওয়ার পর দেখি যে পরিমান বীজ থেকে চারা হওয়ার কথা সে পরিমান চারা হয়নি। এছাড়া পরে রোপন করতে গিয়ে দেখি চারার মান খুবই খারাপ। আমি তখন বুঝতে পারি বীজে সমস্যা ছিল। পরে আমি বিভিন্ন ভাবে জানতে পারি বস্তাতে সরকারি লেভেল থাকলেও বীজ ধানে ছিল স্থানীয় খুবই নি¤œ মানের বীজ।
এদিকে রামুর বেশ কয়েকজন চাষী অভিযোগ করেন রামুতে যে ২টি বীজ এবং সারের ডিলার আছে তার মালিক আবুল কাশেম। তিনি সরকারি বীজ ধান কিনে সেখানে স্থানীয় ধান মিশিয়ে দেয়। আবার কিছু আছে সরাসরি সরকারি বস্তাতে স্থানীয় ধান ঢুকিয়ে দিয়ে বিক্রি করে। আর সরকারি ধানের মূল্য ১০ কেজি বস্তার সর্বোচ্চ ৩৮৫ টাকা কিন্তু তিনি মাঝে মধ্যে ৫০০ টাকাও নেয়। এছাড়া তিনি সারেও প্রচুর ভেজাল মিশিয়ে আলাদা প্যাকেট করে বিক্রি করে। এদিকে ১৭ জুন রাত ৮ টায় রামু ফকিরা বাজারের সেই কাশেম বীজ ভান্ডারে অভিযান চালিয়ে ৩৯ বস্তা(৩৯০ কেজি) নকল সরকারি ধান জব্ধ করে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রনয় চাকমা,সিনিয়র সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহ জালাল উদ্দিন(বিএডিসি), রামু উপজেলা কৃষি অফিসার মাসুম ছিদ্দিকি,সহকারি পরিচালক (বীজ) কামরুন্নাহার। এ ব্যাপারে জেলা বিএডিসি কর্মকর্তা শাহ মোঃ শাহ জালাল উদ্দিন বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রামু কাশেম বীজ ভান্ডারে অভিযান চালিয়ে সরকারি বিএডিসির বস্তাতে স্থানীয় জাতের হরি ও পাইজাম বীজ ধান বিক্রি কালে ৩৯ বস্তা বীজ উদ্ধার করা হয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা প্রায় খবর পাই অনেক প্রান্তিক পর্যায়ের বীজ ডিলার এ ধরনের প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে। ফলে বিএডিসির সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে আর কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। যদিও আমাদের জনবল সীমিত তাই এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিস সহ সংশ্লিষ্ঠদের প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে কাশেম বীজ ভান্ডারের মালিক আবুল কাশেম বলেন, কিছু সরকারি বস্তা খালী পড়ে থাকায় আমি সেখানে স্থানীয় জাতের ধান বিক্রি করছিলাম এটা সত্য।
এদিকে গতকাল মহেশখালী পৌর এলাকার চাষী নজরুল ইসলাম বলেন, মহেশখালীতে যে কয়েকটি বীজ বা সারের দোকান আছে সেগুলোতে প্রতিনিয়ত এ সমস্ত অনিয়ম চলে,আর আমরা দোকানে গিয়ে সরকারি বীজ ধান কিনতে চাইলে দোকান মালিকরা আমাদের নিরুৎসাহিত করে বেশি দামে স্থানীয় ধান কিনতে বলে তাদের লাভের জন্য। অনেক চাষী বেশি দাম দিয়ে স্থানীয় জাতের ধান কিনলেও আমি কিনিনা। আমি সরকারি ধানই ব্যবহার করি। এছাড়া সারের ডিলাররা আরো বেপরোয়া তারা প্রতিটি প্যাকেটে নকল সার মিশিয়ে দিয়ে অনেক সময় কৃষকরা খেতে সেই ধান বা সার ব্যবহার করে ক্ষতিগ্রস্থ হলে দোকানে এসে অভিযোগ করলে উল্টো খারাপ ব্যবহার করে। তাই সব ধান এবং সারের ডিলারের বিষয়ে সঠিক ভাবে খোঁজ খবর নেওয়া দরকার।
এদিকে চকরিয়া হারবাং ইউনিয়নের প্রান্তীক কৃষক আকবর আলী বলেন, গত বছর হারবাং ধান ডিলারের দোকানে নকল ধান বিক্রির অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে সেখানে সরকারি বিএডিসির বস্তাতে নকল স্থানীয় ধান বিক্রির অভিযোগে ১ মাসের জেল দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এর পরও কোন পরিবর্তন হয়নি। আর আমরা সাধারণ কৃষকরা কোথায় যাব, যদি চকরিয়া থেকে বীজ বা ধান সংগ্রহ করতে যায় তাহলে অনেক টাকা যাতায়ত বা পরিবহণ ভাড়া চলে যাবে তাই বাধ্য হয়ে কাছের ডিলারের দোকান থেকে কিনে আনি। কিন্তু সেখানে সরকারি ধানের বস্তাতে অনেক পাঁচ মিশালি ধান থাকে যেটা জমিতে দিলে ধানের চারা হয় একেকটি একেক রকম। আর সার দিলেও কাজ হয়না কারণ সারও নকল। এসব বিষয়ে ভাল করে তদারকি করা দরকার।
প্রকাশ:
২০১৯-০৬-১৯ ০৯:৫৫:০৫
আপডেট:২০১৯-০৬-১৯ ০৯:৫৫:০৫
- চকরিয়ায় বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ
- ইসলামের বৃহৎ স্বার্থে চকরিয়া জামায়াতে ইসলামীর সাথে একটেবিলে বসতে চায়
- চকরিয়ায় চিংড়িঘের দখল নিয়ে দু-গ্রুপে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ১, অস্ত্রসহ ৪ সন্ত্রাসী আটক
- চকরিয়ায় পৌরশহরের তিনটি আবাসিক হোটেল ও চারটি রেস্টুরেন্টে অভিযান
- কিশলয় শিক্ষা নিকেতন স্কুলে বিলুপ্ত কমিটির স্বাক্ষর নিয়ে বিল ভাউচার করার অভিযোগ
- শীতের কম্বল দিতে বেড়িয়ে পড়েন চকরিয়ার মানবিক ইউএনও আতিকুর রহমান
- চকরিয়ায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইউপি মেম্বারসহ আহত ৪
- কক্সবাজার সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আকতার চৌধুরী
- পেকুয়ায় রব্বত আলী পাড়া সড়কে গাড়ি চলে না ২০ বছর!
- চকরিয়ায় বাস চাপায় বৃদ্ধ নিহত
- চকরিয়ায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণরর মামলার অন্যতম আসামি ফারুককে গ্রেফতার করেছে র্যাব
- জমজম হাসপাতালে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু ডাক্তারের বক্তব্য
- খুটাখালীতে শতাধিক পরিবারে শীতবস্ত্র বিতরণ
- শীতের কম্বল দিতে বেড়িয়ে পড়েন চকরিয়ার মানবিক ইউএনও আতিকুর রহমান
- চকরিয়ায় পৌরশহরের তিনটি আবাসিক হোটেল ও চারটি রেস্টুরেন্টে অভিযান
- চকরিয়ায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণরর মামলার অন্যতম আসামি ফারুককে গ্রেফতার করেছে র্যাব
- পেকুয়ায় রব্বত আলী পাড়া সড়কে গাড়ি চলে না ২০ বছর!
- ইসলামের বৃহৎ স্বার্থে চকরিয়া জামায়াতে ইসলামীর সাথে একটেবিলে বসতে চায়
- চকরিয়ায় মৎস্য অধিদপ্তরের উদোগে নৌযান মালিক ও সারেং দের নিয়ে কর্মশালা
- কক্সবাজার সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আকতার চৌধুরী
- চকরিয়ায় রেল স্টেশন মাস্টারকে ছুরিকাঘাত করেছে দুবৃর্ত্তরা
- কিশলয় শিক্ষা নিকেতন স্কুলে বিলুপ্ত কমিটির স্বাক্ষর নিয়ে বিল ভাউচার করার অভিযোগ
পাঠকের মতামত: