ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

চারদিকে উৎসবের আমেজ, ঈদের চাঁদ দেখো গেলে কাল ঈদ

মোরশেদ তালুকদার, চট্রগ্রাম ::

‘এই ঈদ বিধাতার কি যে শুভ উদ্দেশ্য মহান, হয় সিদ্ধ, বুঝে না তা স্বার্থপর মানব সন্তান। এ ত নহে শুধু ভবে আনন্দ উৎসব ধুলা খেলা। এ শুধু জাতীয় পুণ্যমিলনের এক মহামেলা’। কবি কায়কোবাদ তাঁর ‘ঈদ আবাহন’ কবিতায় এভাবেই বর্ণনা দিয়েছেন ঈদের।
আনন্দের বার্তা নিয়ে এসেছে খুশির ঈদ। আজ চাঁদ দেখা গেলে কালই পালিত হবে পবিত্র ঈদুল ফিতর। অত:পর ঈদের আনন্দ সবার হৃদয়ে ভুলিয়ে দিবে প্রীতি-প্রেম আর শান্তির পরশ, চোখে আনবে সমতা ও করুণার স্নিগ্ধতা। রচনা করবে প্রীতি ও মিলনের সম্মিলন। ঘরে ঘরে আনন্দ উল্লাসে বেজে উঠবে, ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ, তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে, শোন আসমানি তাগিদ।’
আজকের সুনীল আকাশে হয়তো সুক্ষ্ম বুনন শাড়ির আঁচলের মতো দেখা যাবে এক ফালি রূপালি চাঁদ। সারাবছরই চাঁদ উঠে আকাশে। কিন্তু শাওয়াল মাসের এই চাঁদ দেখার জন্য যেভাবে সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়বেন তা বছরের অন্য সময়ে খুব একটা দেখা যায় না। কারণ চাঁদের হাসির মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয় প্রত্যাশার আলো, মনকে পরিশুদ্ধ করার একটা আনন্দ। শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষ ঈদের চাঁদকে বরণ করে জীবনের একটা প্রতীক হিসেবে।
শব্দগতভাবে ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। ঈদ শব্দের আরেক অর্থ হল বার বার ফিরে আসা। যেহেতু আনন্দের বার্তা নিয়ে ঈদ প্রতি বছর বার ফিরে আসে তাই এ আনন্দ উৎসবের নাম ঈদ। বেহেস্তের আলোকবার্তা নিয়ে আসা ঈদকে বলা হয় ইসলামী কৃষ্টি কালচারের অনন্য বহিঃপ্রকাশ।
প্রিয়জনের সাথে ভাগাভাগি করতে পারলে আরো বহুগুণে বেড়ে যায় ঈদের আনন্দ। এ জন্যই গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বাস ও ট্রেন স্টেশনগুলোতে ছিল প্রচণ্ড ভিড়। বাড়ি ফিরতে পরিবহনের একটি টিকেট পাওয়ার জন্য সবার মাঝেই ছিল ব্যাকুলতা। যত কষ্টই হোক পিছু হটতে রাজি নয় কেউ। এ যেন প্রিয়জনকে এক নজর দেখার যুদ্ধ। ঈদের কয়েকদিন বাকি থাকতেই ‘ঈদ আনন্দে’র হাওয়া লক্ষ্য করা গেছে জনমনে। তাই সবাই এখন ঘরমুখো। প্রিয়জনদের সাথে ঈদ করতে ছুটে যাচ্ছেন স্ব স্ব এলাকায়। ধীরে ধীরে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে নগরী। সবাই নাড়ির টানে ছুটছেন বাড়ির পানে।
এদিকে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। শুভেচ্ছো জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহীবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
নগরবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ.জ.ম.নাছির উদ্দীন। তিনি গতকাল এক বিবৃতিতে চসিক পরিচালিত সকল কর্মকাণ্ডে নগরবাসীর অব্যাহত সহযোগিতাসহ ঈদ উৎসব উপলক্ষে নগরবাসীর সুখ-স্বাচ্ছন্দ, নিরাপত্তা ও সুখী-সমৃদ্ধ জীবন কামনা করেন।
এছাড়া সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, নগর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খান, সাবেক মেয়র মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, সাবেক মন্ত্রী আফছারুল আমীন এমপি, সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, এম এ লতিফ এমপি, দিদারুল আলম এমপি, মোহাম্মদ সামশুল হক এমপি, মঈন উদ্দিন খান বাদল এমপি, আবু রেজা মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন নদভী এমপি, নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারি এমপি, মোস্তাফিজুর রহমান এমপি, নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ চট্টগ্রামবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিছেন।
এবার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় নগরীর জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদের মাঠসহ নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে ১৬৪টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ঈদের দিন সকাল ৮টায় জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ মাঠে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রথম ও প্রধান জামাত এবং সকাল ৯টায় দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে মসজিদ প্রাঙ্গণ পুরোপুরি নিরাপত্তা চাদরে ঢাকা থাকবে। পুরো এলাকা ২১টি সিসিটিভির আওতায় আনা হবে।

পাঠকের মতামত: