ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪

পেকুয়ায় ভিজিএফ’র চাল না পেয়ে উপকারভোগীদের বিক্ষোভঃ চাল লোপাটের অভিযোগ

মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া-কুতুবদিয়া প্রতিনিধি :: কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার শিলখালী ইউপি কার্যালয় থেকে বিপুল খাদ্যশস্য গায়েব হয়েছে। এর সুত্র ধরে উপজেলার শিলখালী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ব্যাপক প্রতিবাদ ও হট্টগোল দেখা দেয়। ভিজিএফ তালিকাভূক্ত প্রায় ৩ শতাধিক উপকারভোগী চাল বরাদ্ধ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। বঞ্চিত উপকারভোগীরা ভিজিএফ চাল পাওয়ার দাবীতে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে জড়ো হয়। এ সময় খালি বস্তা হাতে নিয়ে হতদরিদ্র উপকারভোগীরা ইউপি কার্যালয় ঘেরাওসহ  বিক্ষোভ করে। অপ্রীতিকর ও উদ্ভট পরিস্থিতি এড়াতে ইউপির চেয়ারম্যান নুরুল হোছাইন পরিষদ কার্যালয় থেকে কৌশলে সটকে পড়ে। এ সময় দায় এড়াতে ইউপির সাধারন সদস্য ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী সদস্যসহ গ্রাম পুলিশগনও ইউপি কার্যালয় থেকে সটকে পড়ে।

আজ  ৩০ মে বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার শিলখালী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে হট্টগোলসহ ভিজিএফ চাল নিয়ে ঘেরাও কর্মসুচী হয়েছে।

শিলখালী ইউনিয়ন পরিষদের সচিব নুরুল আমিন এ সম্পর্কে জানায়, আমি কিছুই জানি না। দু’দিন ধরে আমি কক্সবাজারে অবস্থান করছি। সরকারী একটি কর্মশালায় আমরা ট্রেনিং নিচ্ছি। আপনারা বিষয়টি গুরুত্বের সহিত নেন। এর বিরুদ্ধে ভাল করে নিউজ ছাপান।

স্থানীয় সুত্র জানায়, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরকার সারাদেশে বিশেষ ভিজিএফ কর্মসুচীর আওতায় চাল বরাদ্ধ দেয়। হতদরিদ্রদের জন্য ওই চাল বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১০ টা থেকে উপজেলার শিলখালী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে ভিজিএফ চাল বিতরন চলছিল। গত কয়েকদিন আগে ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিগন উপকারভোগী তালিকা চুড়ান্ত করে। প্রতিজন উপকারভোগীর অনুকুলে ১৫ কেজি খাদ্যশস্য বিলি করার নিয়ম রয়েছে। ৪ নং ওয়ার্ডে চাল বিতরণ নিয়ে উদ্ভট পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। ওই ওয়ার্ডে চাল বিতরণ সময় দেখতে পান পরিষদ কার্যালয়ে চালের মজুদ নেই। এ খবর চাউর হয়। এ সময় চাল নিতে আসা ২ শতাধিক উপকারভোগী চালের জন্য জড়ো হয়। চাল পরিষদ কার্যালয়ে না থাকায় তারা অনেকটা হতাশ হয়ে যান। এ সময় হট্টগোল ছড়িয়ে পড়ে।

শিলখালী ইউপির ৪ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য শাহাব উদ্দিন জানায়, আমি চাল বরাদ্ধ পেয়েছি দেড়শত উপকারভোগীর জন্য। দরিদ্র উপকারভোগী চাল নিতে খালি বস্তা নিয়ে লাইনে দাড়ায়। এ সময় মজুদ শূন্য হওয়ায় কাউকে চাল দিতে পারেনি। আমার ওয়ার্ডে আমি আর মহিলা মেম্বার মিলে ২শত উপকারভোগী চুড়ান্ত করেছি। তবে কেউ চাল পাননি।

একই ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদু ছমদ জানায়, আমার ওয়ার্ডেও কিছু অসংগতি হয়েছে। ২০ থেকে ৩০ জন চাল না পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরেছে।

শিলখালীর ৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শাহাব উদ্দিন, ছরওয়ার উদ্দিন, তাজ উদ্দিন, মনছুর আলম, ছালেহ আহমদ, আবদু ছালাম, হাসিনা বেগম, মরিয়ম খাতুনসহ চাল নিতে আসা  ভিজিএফ তালিকাভূক্ত উপকারভোগীরা জানায়, আমরা সকাল থেকে প্রচন্ড রোদ্রের মধ্যে পরিষদে অবস্থান করছি। চাল চুরি করে তারা নিয়ে গেছে। এ রমজান মাসে এ ধরনের হটকারী বড় ধরনের আঘাত গরীব মানুষের জন্য।

স্থানীয় ওয়ার্ড আ’লীগ সভাপতি কালু বাবুর্চি জানায়, চাল লোপাট হয়েছে। সাধারন মানুষের চাল কারা পাচার করছে এর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। চেয়ারম্যান পালিয়েছে। ফোন পর্যন্ত রিসিভ করেনি। মানুষ চরম প্রতিবাদী হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে শিলখালী ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল হোছাইন জানায়, কিছু সমস্যা হয়েছে। তবে এতগুলো লোক চাল না পেয়ে ফেরত যাওয়ার কথা মোটেই ঠিক না। মেম্বারদের দায়িত্ব দিয়ে আমি একটু বিশ্রামে গিয়েছিলাম।

অপরদিকে উক্ত ইউনিয়নে ভিজিএফের চাল বিতরনের সময় সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসার অনুপস্থিত ছিলেন।

পেকুয়ার ইউএনও মাহাবুব উল করিম জানায়, চেয়ারম্যানের সাথে আমি কথা বলছি। কেন উপকারভোগীরা চাল না পেয়ে বাড়িতে ফিরল। এর কারণ বের করা হবে।

পাঠকের মতামত: