ঢাকা,শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ মাতামুহুরী সেতুতে এক লেনে চলছে গাড়ি যানজট, জন দুর্ভোগ চরমে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক

এক লেনে চলছে গাড়ি যানজট, চরম দুর্ভোগ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ায় মাতামুহুরী সেতুতে গাড়ির দীর্ঘ সারি। গতকাল বিকেলে তোলা ছবি । 

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি ::

ব্যস্ততম চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ার ঝুঁকিপূর্ণ মাতামুহুরী সেতুর দেবে যাওয়া অংশের এক লেনে তৈরি বেইলি সেতুর উপর দিয়ে চলছে উভয়মুখী যানবাহন। অন্য লেন এখনো প্রস্তুত না হওয়ায় ওয়ানওয়ে হয়ে যানবাহন চলতে গিয়ে সেতুর দুই প্রান্তে সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট।

এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামে আটকা পড়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে যাত্রী-সাধারণ। এর পরও মোটামুটি যানবাহন চলাচল সচল রয়েছে সেতুর এক লেন দিয়ে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দু-একদিনের মধ্যে দেবে যাওয়া সেতুর অপর লেনেও বেইলি সেতুর আদলে মেরামত করে দেওয়া হবে। তখন আগেকার মতোই নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচল সচল হয়ে পড়বে।

১০ টনের পরিবর্তে ৩০ টন ওজনের বালুভর্তি ডাম্পারসহ ভারী যানবাহন চলাচল করায় গত বুধবার রাতে ব্যস্ততম এই মহাসড়কের চকরিয়ার ঝুঁকিপূর্ণ মাতামুহুরী সেতুর মাঝখান দেবে যায়। এর পর যান চলাচল বন্ধ করে দিয়ে সেতুর উপরে একপাশে স্টিলের পাটাতন ও গার্ডার দিয়ে অনেকটা বেইলি সেতুর আদলে মেরামত করা হয়। এতে প্রায় ১০ ঘণ্টা পর যানবাহন চলাচল শুরু হয় সেতু দিয়ে। অবশ্য ওইসময় বিকল্প পথে চলাচল করে ব্যস্ততম মহাসড়কের যানবাহনগুলো।

সূত্র জানায়, চার বছর আগে সেতুটি দেবে গেলে সেতুর গার্ডারের নিচে বালুর বস্তার ঠেস দিয়ে কোনোরকমে দেবে যাওয়া ঠেকানো হলেও এবার তা সম্ভব হয়নি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, চার বছর আগে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় মাতামুহুরী সেতুর উপর দিয়ে ১০ টনের বেশি ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করে সাইনবোর্ড টাঙানো হয়। সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী গত দুই মাস ধরে সেতুটির নিচে এবং আশপাশ থেকে অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলন করে ওই সেতুর উপর দিয়ে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছে। যে কারণে সেতুটির মাঝখানের কংক্রিটের ঢালাই আবারও দেবে যায়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, পুরনো মাতামুহুরী সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় এর দক্ষিণ পাশে ছয় লেনের দ্বিতীয় মাতামুহুরী সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয় প্রায় চার মাস আগে। জাইকার অর্থায়নে ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের (বাংলাদেশ) আওতায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সেফটি সুপারভাইজার মো. শফিকুল আলম জানান, জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করা এক লেনে এখন গাড়ি চলাচল করছে, এটি আরো মজবুত করা হচ্ছে। পাশাপাশি অন্যলেনের সংস্কার কাজ চালাতে তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি আগামী দুই-একদিনের মধ্যে পুরোদমে যানবাহন চলাচল শুরু করা যাবে।

চকরিয়া পৌরশহরের ঈদ বাজারে আগত বেশ কয়েকজন ক্রেতা চকরিয়া নিউজকে জানান, সেতুতে মেরামত কাজ চলায় এবং এক লেনে যানবাহন চলাচল করায় সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। সেতু পার হতেই লেগে যাচ্ছে দীর্ঘ সময়। যার প্রভাব এসে পড়েছে চকরিয়া স্টেশনেও। ফলে মানুষকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

চকরিয়া ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মো. নিজাম উদ্দিন চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘এক লেনে সীমিত আকারে যানবাহন চলাচল করলেও যানজট সহনীয় রয়েছে। এ ছাড়াও যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সেতুটির দুই প্রান্তে পুলিশ রয়েছে।’

পাঠকের মতামত: