ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

কক্সবাজারে শিক্ষা প্রতিষ্টানে অতিরিক্ত শিক্ষা ব্যয়ে অভিভাবকদের নাভিস্বাস

bookনুরুল আমিন হেলালী::

পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সরকারী-বেসরকারী ও ব্যক্তি মালিকানাধীন শিক্ষা প্রতিষ্টানগুলোতে প্রতিযোগিতামূলক অতিরিক্ত শিক্ষা ব্যয়ে নি¤œ ও মধ্যবিত্ত অভিভাবকদের দূ:শ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জীবন যাপনের নানা ক্ষেত্রে ব্যয় বাড়লে শিক্ষার ব্যয় বেড়ে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু ব্যয় বৃদ্ধিও হার যদি যৌক্তিক না হয় তাহলে বিষয়টি নানা প্রশ্নের জন্ম দেয়। আবার সরকার শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে যখন এ খাতে সর্বোচ্চ বাজেট, উপবৃত্তি, বিনামূল্যে বই বিতরণ এবং ¯œাতক পর্যায় পর্যন্ত অবৈতনিক নারী শিক্ষা কার্যক্রম চালু করেছে তখন শিক্ষা ব্যয় বৃদ্ধি হলে তা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হওয়াও অমুলক নয়। নি¤œ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর কয়েক অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ নির্বাহে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। অনেকে ছেলেমেয়েদের শিক্ষার খরচ জোগাড় করতে গিয়ে খাদ্য-বস্ত্রসহ অন্যান্য মৌলিক চাহিদা মিটাতে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে জেলার শিক্ষা ব্যবস্থা হুমকির মূখে পড়ার আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল। শিক্ষা ব্যয় কমাতে সরকার স্কুল শিক্ষকদের কোচিংবাণিজ্য ও প্রাইভেটবাণিজ্য বন্ধে নীতিমালা জারি করলেও কক্সবাজাওে তা কার্যকর হচ্ছে না। ২০১২ সালে এ নীতিমালা প্রণয়ন হলেও জেলায় কারও কোনো শাস্থি না হওয়ায় অধিকাংশ প্রতিষ্টানের কতিপয় শিক্ষকরা আরও বেশী বেপরোয়া হয়ে শিক্ষার্থীদের জিম্মি কওে নির্বিগ্নে চালিয়ে যাচ্ছে অনৈতিকবাণিজ্য। অতচ শিক্ষাখাতের নীতিনির্ধারক কর্তাবাবুরা সরকারের নীতিমালা প্রণয়নে আন্তরিক হলে নি¤œ ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া চালিয়ে নিতে চরম সংকট থেকে অনেকটা মুক্তি পেতেন বলে মনে করছেন শিক্ষাবিদরা। অন্যদিকে অতিরিক্ত শিক্ষাব্যয়বৃদ্ধিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের চরম দূর্বলতা ও নিজেদের দূর্নীতিকেই দায়ী করছেন অনেকে। শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সরকার বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় বই প্রদান করলেও বিভিন্ন বিদ্যালয়ে গাইডবই, কাগজ-কলম, খাতাসহ অন্যান্য শিক্ষা উপকরণ উচ্চ মূল্যে বিদ্যালয় থেকে কিনতে বাধ্য করছে। আবার বিষয় ভিত্তিক কোচিং কিংবা প্রাইভেট পড়তে গিয়েও মরার উপর খড়ার ঘাঁ । অথচ ক্লাসে যদি মানসম্মত শিক্ষা দেয়া হয় তাহলে অভিভাবকদের বাড়তি খরচের এ চাপ পোহাতে হতো না, ছেলেমেয়েদের নিয়ে ছুটতে হতো না কোচিং সেন্টারনামক বাণিজ্যিক প্রতিষ্টানগুলোতে। নতুন বছরের শুরুতেই জেলার শিক্ষা প্রতিষ্টানগুলোতে ভর্তি ফি এর নামে চলে অভিভাবকদের পকেট কাটা বাণিজ্য। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এমপিও ভুক্ত বিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি ফি সরকার কর্তক নির্ধারিত থাকলেও শহরের অধিকাংশ বিদ্যালয়ে তা তোয়াক্কা না কওে নিজেদের ইচ্ছেমত ভর্তি বাণিজ্য চালিয়েছে। কক্সবাজার শহরের এমপিও ভুক্ত বিদ্যালয় কক্সবাজার মডেল হাইস্কুল, বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমীসহ কয়েক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ এবছর নতুন শ্রেণীতে ভর্তি হতে তাদের সাড়ে চার হাজার থেকে আট হাজার টাকা গুনতে হয়েছে। অন্যদিকে কেজিস্কুল নামধারী ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্টানগুলোর অবস্থা আরও করুন। এসব প্রতিষ্টানেও বিভিন œছলছুতোয় প্রতিমাসে গুনতেহয় এক থেকে তিন হাজার টাকা। সরেজমিনে জানা যায়, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীও শিংহভাগই মধ্যবিত্ত, নি¤œমধ্যবিত্ত ও দরিদ্র শ্রেণীর। ফলে শিক্ষার উচ্চ ব্যয় জোগানো অনেকের পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া সরকারি স্কুলগুলোতেও জে এস সি ও এস এস সি পরীক্ষাকে পুঁজি করে মাসের পর মাস কোচিংয়ের নামে চালিয়ে যাচ্ছে শিক্ষা বাণিজ্য। তাই শিক্ষার ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া কক্সবাজারের জনগুষ্টিকে এগিয়ে নিতে প্রয়োজন গলাকাটা শিক্ষা বাণিজ্য রোধ করা। জেলার শিক্ষা প্রতিষ্টানগুলোতে অতিরিক্ত শিক্ষা ব্যয় বন্ধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নজরদারী বাড়ানো জরুরী বলে মনে করছেন শিক্ষাবীদরা।

 

পাঠকের মতামত: