ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪

চকরিয়ায় চারলেনের মহাসড়ক নির্মাণ প্রকল্প: সরকারী জমি ব্যক্তিগত খতিয়ানভুক্ত দেখিয়ে চলছে অপকর্ম

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::

মাতারবাড়ি থেকে বদরখালী হয়ে চকরিয়া উপজেলার ফাসিয়াখালী পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার আয়তনের নতুন চারলেনের সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে এগিয়ে চলছে। বর্তমানে নতুন সড়ক নির্মাণে জমি অধিগ্রহন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ সুযোগে উপজেলার বদরখালীতে কতিপয় একটি চক্র সরকারি খতিয়ানের বিপুল পরিমাণ জমি কৌশলের আশ্রয় নিয়ে ব্যক্তিগত খতিয়ান ও প্রতিষ্ঠানের খতিয়ানভুক্ত জমি দেখিয়ে অন্তত কোটি টাকার বেশি ক্ষতিপুরণের টাকা হরিলুটে মেতে উঠেছে।

অভিযোগ উঠেছে, ইতোমধ্যে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভুমি অধিগ্রহন শাখা থেকে চক্রটি সরকারী ১নং খতিয়ানের জায়গা বদরখালী সমিতির ৪নং খতিয়ানের ৪৫৯০ দাগের অন্তর্ভূক্ত দেখিয়ে প্রায় ৫৩ লাখ টাকা উত্তোলন করে নিয়েছে। এখন জায়গার মূল্য ও অন্যান্য খাতে আরো ৬৯ লাখ টাকার বেশি টাকা হাতিয়ে নেয়ার নীলনক্সা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বদরখালী ইউনিয়নের সচেতন লোকজনের অভিযোগে জানা গেছে, মাতারবাড়ি থেকে বদরখালী হয়ে চকরিয়া উপজেলার ফাসিয়াখালী পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার আয়তনের নতুন চারলেনের সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় বদরখালী ইউনিয়নের ভেতরে বদরখালী ফেরীঘাট হতে সোয়া ১ কিলোমিটার জায়গা প্রাথমিক ভাবে অধিগ্রহন করার প্রকল্প হাতে নিয়েছে। প্রস্তাবিত অধিগ্রহন এলাকায় যাদের জায়গা-জমি ও অবকাঠামো অন্তর্ভূক্ত হয়েছে তাদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে সরকার।

স্থানীয় লোকজন জানান, অধিগ্রহনের আওতায় প্রকল্পের অধীনে বদরখালী সমবায় দিঘির পূর্বপাড়ে সড়ক সংলগ্ন জায়গায় কয়েকবছর পূর্বে সরকারী অনুমতি ছাড়া ২০-২২ ফুট দৈর্ঘ্য একটি দোকানঘর নির্মাণ করেন স্থানীয় হাজী গুরা মিয়ার ছেলেআমির হোছাইন। অনুরূপভাবে বদরখালী ফাজিল মাদ্রাসার সামনে ৪০-৫০ ফুট আয়তনের একটি টিনসেট দোকানঘর নির্মাণ করে সমিতির কর্মচারী নুরুল ইসলাম। দোকান দুটি নির্মাণ ব্যয় বেশি হলে ৩ থেকে ৫ লাখ টাকার মতো হবে।

অথচ জমি অধিগ্রহনে সহযোগিতকারী সিসিডিভি নামের এক বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থার জরিপ কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাকের মধ্যস্থতায় জেলা প্রশাসন কক্সবাজারের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা ও বদরখালী সমিতির সংশ্লিষ্টদের যোগসাজসে ইতোমধ্যে অবকাঠামো খাতে আমির হোছাইন ১৪ লাখ টাকা ও নুরুল ইসলাম ৩৮ লাখ টাকাসহ প্রায় ৫৩ লাখ টাকা অধিগ্রহন শাখা থেকে উত্তোলন করে নিয়েছে। অভিযোগ পাওয়া গেছে, বর্তমানে ৫৩ লাখ টাকা উত্তোলনের পর একইখাতে সরকারী নির্দেশনার আলোকে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা সিসিডিভি ৩২ শতাংশ ও জমির মূল্য বাবদ সরকার প্রদত্ত ৫৩ লাখ টাকাসহ আরো ৬৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

সচেতন এলাকাবাসী জরুরী ভিত্তিতে জমি অধিগ্রহনে জালিয়াতির ঘটনা বন্ধে এবং সরকারি টাকা উত্তোলনে সহযোগিতায় জড়িত সিসিডিভির কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাককে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে উত্তোলনকৃত সরকারি টাকা উদ্ধারে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। #

পাঠকের মতামত: