ঢাকা,বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় বিচারকের উপর আসামীর হামলা

চকরিয়া সংবাদদাতা ::

চকরিয়ায় দু’পক্ষের বিরোধীয় ঘটনায় স্থানীয় শালিস বৈঠকে বিচারকের উপর নির্মমভাবে হামলা চালিয়েছে জিআর মামলার আসামীরা। এঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছে ডুলাহাজারা ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার সাইফুর রহমান। আশংকাজনক অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত সাইফুর রহমান সাবেক ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ও ষোলহিচ্ছা (৫নং ওয়ার্ড) গ্রামের মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে।

রবিবার সন্ধা সাড়ে ৫টার দিকে ডুলাহাজারা ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসায় শালিস বৈঠকে এ ঘটনা ঘটে। জানাগেছে গত ২৪ এপ্রিল বাদি-বিবাদি উভয়ের নিজ এলাকা ডুলাহাজারা বালুরচর গ্রামে মারধরের ঘটনা ঘটে। এতে ছাদেকুর রহমানের নামের এক যুবককে বেধড়ক মারধর করে দাঁত ভেঙ্গে দিয়ে অঙ্গহানি করে। এ নিয়ে পরদিন চকরিয়া থানায় ছয় জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা (নং ৫১/জিআর ১৯২) রুজু হয়।

এ মামলায় থানা পুলিশ দুই আসামীকে গ্রেফতার করলেও অপর তিন আসামী আত্মগোপনে থাকে। তারা হলো বর্নিত ষোলহিচ্ছা গ্রামের নুরুল আলমের ছেলে মীর কাশেম (২৮), মনজুর আলমের ছেলে আরিফুল ইসলাম (২৫), আবু তাহেরের ছেলে জিয়াবুল করিম (৩৫), নুরুল আলমের ছেলে মোকাদ্দেস (৩৪)।

ওই ঘটনায় মামলার আসামী আরিফুল ইসলাম জানায়, ছাদেক রহমান একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী। তাই তারা সংগঠন করে ইয়াবা ব্যাবসার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে। স্থানীয় মেম্বার-চেয়ারম্যান তা অবগত আছে বলেও জানায় আরিফ।

অপরদিকে ছাদেকুর রহমান জানায়, আরিফ নিজেই একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী। নিজের অপরাধ ঢাকতে কোন প্রমাণ ছাড়া আমাকে দোষারোপ করছে। আরিফ মাত্র বছর দু’এক প্রবাসে থেকে একটি দোকানে চাকরি করে কিভাবে কোটি-কোটি টাকার মালিক বুনে যায়! বছরে তিন-চর বার দেশে আসা-যাওয়ার খরচ, নিজস্ব তিন তলা বিশিষ্ট আলিশান বাড়ি, কক্সবাজার শহরের কলাতলীতে আবাসিক হোটেল, স্থানীয় ডুলাহাজারা বাজারে বসুন্ধরা ফ্যাশন নামের ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের মালিক কি ভাবে হয়! ইয়াবার পাশাপাশি হুন্ডি ও স্বর্নের বার পাচার করে সম্পদের পাহাড় গড়ে আরিফ। মোটা অংকের টাকা দিয়ে এলাকার প্রভাবশালীদের হাতের মুঠো রেখে বিভিন্ন অপকর্ম চালাচ্ছে সে। প্রশাসন নিরপেক্ষ তদন্তে সব সত্যতা বেরিয়ে আসবে বলেও জানায় ছাদেকুর রহমান।

অপরদিকে মারধরে দায়ের করা মামলা নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ডুলাহাজারা ইসলামিয়া মাদরাসায় উভয় পক্ষের লোকজন নিয়ে রবিবার সন্ধায় একটি শালিসী বৈঠক বসে। এতে শালিসকার ছিলেন মাওলানা গিয়াস উদ্দিন, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনছুর আলম, যুবলীগের সাবেক সভাপতি এহছানুল হক, প্রভাষক মঈনুদ্দিন, ৭নং ওয়ার্ড এমইউপি ফরিদুল আলম ও সাবেক মেম্বার সাইফুর রহমান। শালিসী বৈঠক শেষে মামলায় অভিযুক্ত আসামী একই এলাকার নুরুল আলমের পুত্র মুবিনুল হক, মীল কাসেম, মনজুর আলমের পুত্র আরিফুল ইসলাম, আবু তাহেরের পুত্র রেজাউল করিম, মৃত নজির আহমদের পুত্র কাইছার হামিদ ও আবু বক্করের পুত্র মোক্তার আহমদসহ ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে শালিসকার ও সাবেক ইউপি সদস্য সাইফুর রহমানকে কুপিয়ে জখম করে। তার মাথার বিভিন্ন অংশে ভাঙ্গা গ্লাসের অংশ ঢুকে প্রচুর রক্ত ক্ষরণ হয়।

এসময় উপস্থিত লোকজন আহত সাইফুর রহমানকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থা গুরুতর দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। পরে এ ঘটনায় আহতের বড় ভাই কায়ছার হামিদ বাদি হয়ে চকরিয়া থানায় সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা করেন।

চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ হাবিবুর রহমান জানান, ঘটনার বিষয়ে লিখিত এজাহার দিয়েছে। এটি মামলা হিসেবে রুজু হচ্ছে। এনিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: