ঢাকা,রোববার, ৫ মে ২০২৪

চকরিয়ায় সীমানা বিরোধে একই পরিবারের ১২নারী-পুরুষকে কুপিয়ে আহত করার পাঁচমাস পর বাদিপক্ষের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষে সাজানো মামলা (ফলোআপ)

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::

চকরিয়া উপজেলার পূর্ব বড়ভেওলা ইউনিয়নের বানিয়ারচর মাদ্রাসা পাড়া এলাকায় চলাচল পথের বিরোধ নিয়ে একই পরিবারের ১২ নারী-পুরুষকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় ২০১৮ সালের ২১ নভেম্বর চকরিয়া থানায় ৯জনের নাম উল্লেখ করে আরো ৫-৬জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে একটি মামলা রুজু করেন ওই এলাকার আবদুল মান্নানের স্ত্রী এলমুন নাহার। বর্তমানে মামলাটি চকরিয়া থানা পুলিশের এসআই রুহুল আমিন তদন্ত করছেন। মামলায় প্রতিপক্ষের ফরিদুল আলম, মিজান, মিনহাজ উদ্দিন, আজিজুল হক প্রকাশ রুবেল, হুমায়ন প্রকাশ বাদশা, ছুরা খাতুন, খুকি, রিনা আক্তার ও ওমর ফারুক প্রকাশ ভুট্টোকে এজাহারে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে ২০১৮ সালের ১৯ নভেম্বর রাত সাতটার দিকে হামলার ঘটনায় আক্রান্ত পরিবারের গৃহকর্তা নুরুল মোস্তফার পরিবারের ১২ নারী-পুরুষ সদস্যকে কুপিয়ে জখম ১২ নারী-পুরুষ আহত হন। আহতেরা হলেন নুরুল মোস্তফার স্ত্রী ফরিদা বেগম (৫০), ছেলে আব্দুল হামিদ (৩০), মহিব উল্লাহ (২৮), আবু তৈয়ব (২৬), মহিব উল্লাহর স্ত্রী সেতু মনি (২৩), আব্দুল হামিদের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (২৬), আব্দুল জলিলের স্ত্রী এলমুন্নাহার (৩০), ফরিদা বেগমের মেয়ে রুজিনা আকতার (২০), ফরিদা বেগমের ভাই শামশুল আলম (৪৫) ও তাঁর স্ত্রী জুহুরা বেগম (৩৬) সহ ১২জন।

ঘটনার সময় ওই বাড়ি থেকে স্বর্ণালংকারসহ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করেছে হামলাকারীরা। ঘটনার পরপর আহতদের উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পাঁচজনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেছে কর্তব্যরত চিকিৎসক।

আহত পক্ষের লোকজনের অভিযোগ, প্রতিপক্ষ ফরিদুল আলমের সাথে চলাচলের পথ নিয়ে বিরোধের জের ধরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমাদের উপর হামলা চালানো হয়। তিনি অভিযোগ করেছেন, হামলার ঘটনায় প্রতিপক্ষের ফরিদুল আলমের নেতৃত্বে মিনহাজ উদ্দীন, মিজান উদ্দিন, আজিজুল হক ওরফে রুবেল, হুমায়ন, জহির উদ্দিন, আলমগির, মোজাফ্ফর, গুরা মনিয়া প্রকাশ দাদা অংশ নেয়।

মামলার বাদি এলমুন নাহার অভিযোগ করেছেন, তাদের উপর ঘটনায় চকরিয়া থানায় মামলা রুজু করার প্রায় পাঁচমাস পর প্রতিপক্ষের ফরিদুল আলমের স্ত্রী ছফুরা খাতুন গত ৩০ এপ্রিল চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আগুনে বসতঘর পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে একটি সাজানো পাল্টা মামলা করেছেন। মুলত আমাদের উপর হামলার ঘটনা থেকে তাঁরা বাঁচতে কুটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে নিজেরা বাড়ির সব মালামাল আগে থেকে সরিয়ে নিয়ে নিজেরা খালী ঘরে আগুন দেয়। এই ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে তাঁরা উল্টো ঘটনার পাঁচমাস পর আমাদের বিরুদ্ধে আদালতে সাজানো মামলাটি রুজু করেছেন। মামলায় নুরুল মোস্তাফা পক্ষের ১২জনকে আসামি করা হয়েছে। এতে যাদেরকে স্বাক্ষী করা হয়েছে তাদের মধ্যে অধিকাংশ স্বাক্ষী অন্য এলাকার বাসিন্দা। এমনকি ঘটনাস্থলের বাইয়ের ওয়ার্ডের দুইজন মেম্বারকেও মামলাটিতে স্বাক্ষী করা হয়েছে।

মামলার বাদি এলমুন নাহার জানান, প্রতিপক্ষের ফরিদুল আলমের স্ত্রী ছফুরা খাতুনের দায়ের করা মামলাটি আদালত কক্সবাজারস্থ পিবিআই পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। বাদি ও আহত নুরুল মোস্তাফা পক্ষের লোকজন ঘটনাটি সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষভাবে তদন্তের জন্য পিবিআই পুলিশসহ কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপারের কাছে হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।##

পাঠকের মতামত: