ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

‘নকল বাটার’ দিয়ে তৈরি হয় ফুলকলির পণ্য!

অনলাইন ডেস্ক ::

বিভিন্ন বেনামি প্রতিষ্ঠান থেকে ‘নিম্নমানের নকল বাটার’ কিনে তা দিয়ে তৈরি হয় ফুলকলি ব্রেড অ্যান্ড বিস্কুট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পণ্য। দীর্ঘদিন এ ‘নিম্নমানের নকল বাটার’ দিয়ে তৈরি হয়ে আসছে ফুলকলির পণ্য। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ম্যানেজ করে মো. লিটন নামে এক ব্যক্তি এসব ‘নিম্নমানের নকল বাটার’ সরবরাহ করে আসছিলেন ফুলকলিসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের খাদ্যপণ্য তৈরির প্রতিষ্ঠানে। সিভয়েসের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এমন সব চাঞ্চল্যকর তথ্য।

‘নিম্নমানের নকল বাটার’ তৈরির বিষয়টি সিভয়েসের কাছে স্বীকারও করেছেন ফুলকলি ব্রেড অ্যান্ড বিস্কুট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার এমএ সবুর।
তবে এমএ সবুর দাবি করেছেন,  কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ফুলকলিতে ‘নিম্নমানের নকল বাটার’ সরবরাহের অভিযোগ উঠায় তাদের কাছ থেকে বাটার ও ঘি কেনা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

সিভয়েসের অনুসন্ধানে উঠে আসে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নাম যেসব প্রতিষ্ঠান ফুলকলিতে বাটার ও ঘি সরবরাহ করতেন। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ঢাকার মিরপুর পল্লবী এলাকার শাহী ট্রেডার্স, চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের আলম এন্টারপ্রাইজ, ঢাকার দেওয়ানপাড়া মাটিকাটা এলাকার খান এন্টারপ্রাইজ। ভিন্ন ভিন্ন নাম ও ঠিকানা হলেও এসব প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. লিটন নামে এক ব্যক্তি। লিটনের সহযোগী মো. মামুন নামে আরেক ব্যক্তি নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এসব নকল বাটার ফ্লেভারসসহ আরও কয়েকটি ব্র্যান্ডের প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করেন। মো. মামুনও এসব বিষয় স্বীকার করেন।
মো. মামুন বলেন, ‘ফুলকলি এখন আর আমাদের কাছ থেকে পণ্য নেয় না। তারা বিলও আটকে রেখেছে।’
এদিকে ফুলকলি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানার পরেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো এ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য চেষ্টা করছে।

অভিযুক্ত কর্মকর্তা, কর্মচারীদের কোনো ধরণের শাস্তির ব্যবস্থা না করে নকল বাটার ব্যবহারের বিষয়টি মিডিয়ার না ছাপানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে ফুলকলির ব্রেড অ্যান্ড বিস্কুট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পরিচালক ইকবাল উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আসলে দু:খজনক। তবে ফুলকলির ব্রেড অ্যান্ড বিস্কুট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের বিষয়গুলো আমাদের কফিল সাহেব দেখেন। তাই বিষয়টি নিয়ে আমার মন্তব্য করা ঠিক হবে না। বিষয়টি নিয়ে পরিচালক কফিল উদ্দীনের কাছে ফোন দেওয়া হলে বন্ধ পাওয়া যায়।

ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণকারী জাতীয় প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন সিভয়েসকে বলেন, আমাদের দেশের ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত মুনাফা আদায়ের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। আমি কিছুদিন আগে বাজারে গিয়েছি কলা কেনার জন্য। তখন লক্ষ্য করি পচা কলাগুলো বিক্রেতা একটি ঝুড়িতে সংরক্ষণ করছেন। এগুলো ফেলে না দিয়ে সংরক্ষণ করার কারণ জানতে ওই বিক্রেতা জানায়, পচা কলাগুলোর কাস্টমার আরও বেশি। এগুলো বিভিন্ন বেকারি ও ব্রেড কোম্পানিগুলো নিয়ে যায়। মান যেমন হোক না কেন? যত সস্তায় পাওয়া যায় সেটায় ব্যবসায়ীরা ব্যবহার করছেন। যার কারণে প্রতিনিয়ত জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে রয়েছে। মালিকপক্ষ কর্মচারীদের উপর দোষ দিয়ে পার পান । আবার এসব পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে দায়িত্বে বিএসটিআইয়ের যতটুকু দায়িত্বপালন করা দরকার, ততটুকু করছে না। ফলে এমন অবস্থার তৈরি হচ্ছে। ফুলকলির মত প্রতিষ্ঠান থেকে এমন কোনো কিছু কখনও কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বিষয়টি নিয়ে চট্টগ্রাম বিএসটিআই এর উপ-পরিচালক নুরুল আমিন সিভয়েসকে বলেন, আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি, যদি সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে অব্শ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।সিভয়েস

পাঠকের মতামত: