ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

সাবমেরিন ক্যাবলের পেছনে চৌধুরীপাড়ায় ১০টি মুরগির ফার্মের বিষ্ঠার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার ॥

কক্সবাজার পৌরসভাধীন ৫নং ওয়ার্ড সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশনেরপেছনে চৌধুরীপাড়া এলাকায় ১০টি মুরগির খামারের বিষ্ঠার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। অভিযোগ উঠেছে, নীতিমালা উপেক্ষা করে ৫নং ওয়ার্ডেও চৌধুরী পাড়ার আবাসিক ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা এবং মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানার পার্শ্বে খামারগুলো স্থাপন করা হয়েছে। এতে করে ছাত্র ছাত্রী, পথচারী ও মুসল্লিরা যাতায়তে চরম দূর্ভোগের শিকার হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পরিবেশ অধিদপ্তর সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগও দিয়েছিল এলাকাবাসী। কিন্তু কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি খামার মালিকদের বিরুদ্ধে।

এলাকাবাসী এসব মুরগির খামারগুলোর বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ করার পরেও মালিকেরা তা গায়ে মাখছে না। মুরগীর বিষ্ঠার গন্ধ পুরো এলাকার পরিবেশ দূষিত করছে। এলাকাবাসী পরিবেশ অধিদপ্তর সহ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চৌধুরীপাড়া এলাকাটি আবাসিক ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। কালে আবর্তে সেখানে গড়ে উঠেছে মসজিদ,মনারুল কোরআন মাদ্রাসা, ফোরকানিয়া ও এতিমখানা। ঘনবসতিপূর্ণ চৌধুরীপাড়ায় গড়ে তোলা হয়েছে ১০টি মুরগীর খামার।

স্থানীয় বাসিন্দারা আরো জানান, টেকনাফ হ্নীলা এলাকার শামসুল আলম, স্থানীয় জাফর আলম ড্রাইভার, মোস্তাক আহমদ ও মোহাম্মদ তৈয়ব নামের ব্যক্তিরা এসব অপরিকল্পিত ভাবে মুরগির ফার্ম গড়ে তুলেছেন।

বর্তমানে খামারে প্রায় ৩০ হাজার মুরগি রয়েছে। মুরগির বিষ্ঠার কারণে এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। বিষ্ঠার দুর্গন্ধে খামারগুলোর চারদিকে মানুষের বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে। অথচ নীতিমালা অনুযায়ী, একটি মুরগির খামার স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ও প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে রেজিস্ট্রেশনভুক্ত হতে হবে। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা এবং জনগণের ক্ষতি হয় এমন স্থানে খামার স্থাপন করা যাবে না।

চৌধুরীপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, খামারটির আশপাশে মুরগির বিষ্ঠা ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে। পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। খামারের চারপাশে বসতবাড়ি। এসব বাড়ি থেকে তীব্র দুর্গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

চৌধুরী পাড়া জামে মসজিদের খতিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ বলেন, মুরগির বিষ্ঠার দুর্গন্ধে জনগণের যাতায়তে সমস্যা হচ্ছে। বিশেষ কওে মসজিদে আসা মুসল্লি ও মাদ্রাসা, ফোরকানিয়া ও এতিমখানায় আগত শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি দূর্ভোগে পড়েছে। পুরো এলাকায় চলাফেরা করতে নাকে রুমাল দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। তিনি এব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।

চৌধুরী পাড়া গ্রামের বাসিন্দা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমার বাড়ির পাশেই খামার। বিষ্ঠা থেকে সব সময় দুর্গন্ধ ছড়ায়। আশপাশে বসবাস করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।’

কলেজছাত্র মনির আহমেদ বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে খামারগুলো সরানোর জন্য গত বছরও পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে অভিযোগ দিয়েছিল গ্রামবাসী। কিন্তু সেই সময় উক্ত খামারগুলোর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেননি। পরে তারা কক্সবাজার সদও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকটও অভিযোগ দেওয়া হয়।কিন্তু এতেও কোন কাজ হয়নি।

একটি সুত্র জানিয়েছেন, খামারগুলো স্থাপনে পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কোন অনুমতি নেওয়া হয়নি। এ ছাড়া আবাসিক ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত খামারগুলোর বর্জ্য অপসারণের ব্যবস্থা নেই। খামারগুলো স্থাপনের ক্ষেত্রে জাতীয় পোলট্রি উন্নয়ন নীতিমালা-২০০৮ মানা হয়নি বলে সুত্রে প্রকাশ।

খামারগুলো থেকে কিছুটা দূরে শামসুল আলম, জাফর আলম ড্রাইভার, মোস্তাক আহমদ ও মোহাম্মদ তৈয়ব নামের খামারগুালোর মালিকদের বাড়ি। বাড়িতে গিয়ে তাঁদের পাওয়া যায়নি।

কক্সবাজার জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা অফিস সুত্রে জানা গেছে, নীতিমালা উপেক্ষা করে খামারগুলো স্থাপন করা হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: