ঢাকা,শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

কক্সবাজারের এলএ অফিসে সক্রিয় ভয়ংকর প্রতারক চক্র !

কক্সবাজার সংবাদদাতা ::
কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের আওতাধীন ভূমি অধিগ্রহন শাখায় সক্রিয় রয়েছে ভয়ংকর এক প্রতারক চক্র। বাস্তবায়নাধীন দোহাজারী-কক্সবাজার-ঘুনধুম রেল লাইন প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণকৃত বিভিন্ন জমির ক্ষতিপূরন প্রতারনার মাধ্যমে তুলে নিতে সক্রিয় এই চক্রের অপতৎপরতা ও হয়রানিতে জমির প্রকৃত মালিকদের ঘুমহারাম হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বৃহত্তর ঈদগাঁও কেন্দ্রিক এই চক্রের নেতৃত্বে রয়েছে দালাল বদরুদ্দোজা ওরফে বদরু, গিয়াস উদ্দীন প্রকাশ আবু ও জনৈক মহিলাসহ আরো কয়েকজন। অধিগ্রহনের আওতায় পড়া বিভিন্ন রোয়েদাদের জমিতে মিথ্যা ও ফেরবী ক্ষতিপূরণের আবেদন এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে মিথ্যা মামলা করে এরা প্রকৃত মালিকদের হয়রানি করে আসছে বলে জানা গেছে।
অনুসন্ধানে প্রকাশ, সদর উপজেজার ঈদগাঁও মৌজার আওতাধীন ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ৮৫ নং রোয়েদাদে অধিগ্রহনের ক্ষতিপূরনের চেক পেতে জমির প্রকৃত মালিকরা আবেদন করেন। কিন্তু এর পাশাপাশি জালিয়াতির মাধ্যমে চেক তুলে নিতে আবেদন করে উপরোক্ত চক্রের গিয়াস উদ্দীন আবুল ও আরো কয়েকজন।
কিন্তু সংশ্লিষ্ট সার্ভেয়ার উক্ত জমি পরিদর্শনে গেলে তাদের দখলের কোন প্রমান দিতে পারেনি।
উক্ত জমির প্রকৃত মালিক জান্নাতুন নাঈম বলেন, এরপর এ বিষয়ে শুনানী করার জন্য এল এ অফিস থেকে নোটিশ দেয়া হয়। কিন্তু প্রতারক গিয়াস উদ্দীন গং শুনানীতে হাজির হয়নি৷ ভূক্তভোগী মুসলিম উদ্দীন বলেন, কয়েকবার নোটিশ দেয়ার পর তারা শুনানীতে আসে। শুনানীর সময় জেরার মুখে ৮৫ নং রোয়েদাদ ভূক্ত জমিতে তাদের দখল-আমল নেই মর্মে স্বীকার করে অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহন কর্মকর্তা মোমিনুল হকের নিকট লিখিত জবানবন্দী দেয় গিয়াস উদ্দীনসহ ৬ জন। সংশ্লিষ্ট জমিতে দখল-আমল নেই মর্মে প্রমাণিত হওয়া সত্ত্বেও উক্ত জমির ক্ষতিপূরন তুলে নিতে দৌঁড়ঝাপ অব্যাহত রেখেছে।
অপর ভূক্তভোগী মুবিন বলেন, ঈদগাঁও মৌজার আওতাধীন অধিগ্রহনকৃত ১৮২ নং রোয়েদাদের জমির ক্ষতিপূরন থেকেও ইতিপূর্বে জালিয়াতির মাধ্যমে ২৮ লাখ লাখ টাকা তুলে নেয় উপরোক্ত চক্র। এ ব্যাপারে দূর্নীতি দমন আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
ভূক্তভোগী জামেনা হাসনাত বলেন, ঈদগাঁও মৌজার অধিগ্রহণকৃত ১১৪ ও ১১৫ নং রোয়েদাদের জমিসহ আরো বিভিন্ন রোয়েদাদে অধিগ্রহণকৃত জমির ক্ষতিপূরনের চেক জালিয়াতির মাধ্যমে তুলে নিতে মিথ্যা আবেদন করে প্রকৃত মালিকদের হয়রানি করে আসছে এরা।
অপর ভূক্তভোগী ও স্কুল শিক্ষিকা তৌহিদা সরওয়ার শামু জানান, তাঁর মায়ের মালিকানাধীন সাড়ে আট শতক জমি অধিগ্রহনের আওতায় পড়লে এলও শাখায় ক্ষতিপূরনের আবেদন করেন। কিন্তু প্রতারক গিয়াস উদ্দীন খতিয়ান বাতিল চেয়ে মিথ্যা মামলা করলেও বিজ্ঞ আদালত তা আমলে নেননি।
এভাবেই গণ হয়রানি ও প্রতারনায় নেমেছে উক্ত চক্র। জালিয়াত এ সিন্ডিকেটের মূল হোতা গিয়াস উদ্দীন প্রকাশ আবুল্যা ইসলামাবাদ ইউনিয়নের সিকদার পাড়ার বাসিন্দা ও মৃত শফিউল আলমের ছেলে। আর বদরুদ্দোজা প্রকাশ বদরু চিহ্নিত দালাল ও চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের হায়দার পাড়ার আলী হোসেনের ছেলে।
অভিযুক্ত গিয়াস উদ্দীন ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

পাঠকের মতামত: