ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

লামায় প্রান্তিক কৃষকের তামাক লুটের অভিযোগ, মারধরে আহত ৭

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ::

বান্দরবানের লামায় এক বর্গাচাষী প্রান্তিক কৃষকের খামারে হানা দিয়ে ১০ লক্ষাধিক টাকার বিক্রয়যোগ্য তামাক লুট ও হামলায় দুইপক্ষের নারী ও শিশু সহ ৭ জন আহত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় উভয়পক্ষ লামা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন মো. দেলোয়ার হোসেন (৩৮) ও আবু তাহের (৫৫)। শুক্রবার দুপুর ১টায় লামা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৭নং ওযার্ড দুর্গম ঠাকুরঝিরি এলাকার আবু তাহেরের খামার বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।

তামাক লুট ও হামলার ঘটনায় মো. দেলোয়ার হোসেন পক্ষের ৫ জন ও আবু তাহের পক্ষের ২ জন লামা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আহতরা হলেন, রুশিয়া বেগম (৩৩), আহাদ আলী (২৫), দেলোয়ার হোসেন (৩৮), মো. রমজান আলী (১২), মো. রুস্তম আলী (২১), আবু তাহের (৫৫) ও জাহের উদ্দিন (৪২)। দেলোয়ার হোসেন ইউনিয়নের চিউনী খাল পাড়ার মো. হযরত আলীর ছেলে ও আবু তাহের একই ইউনিয়নের বৈল্ল্যারচর এলাকার মৃত আব্দুল হাসেমের ছেলে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দেলোয়ার হোসেন একজন প্রান্তিক কৃষক। সে বৈল্ল্যারচর এলাকার আবু তাহের এর ঠাকুরঝিরিস্থ ১৩ একর ফসলি জমি ও খামারে চলতি মৌসুমে বর্গা চাষী হিসেবে চাষ করেন। চাষাবাদের খরচের জন্য ঋণ হিসেবে আবু তাহের বর্গাচাষী দেলোয়ার হোসেনকে এক চুক্তিপত্র মতে ৪ লক্ষ ৯০ হাজার ও ভিন্ন কাগজে ভেঙ্গে ভেঙ্গে প্রায় ১ লাখ টাকা দেয়। দেলোয়ার উক্ত দলীলের ফটোকপি চাইলে আবু তাহের তাকে নকল কপি দিতে অপারগতা স্বীকার করেন। এতে করে দুইজনের মধ্যে মনমালিন্যে সৃষ্টি হয়। এদিকে জমির সম্পূর্ণ তামাক ঘরে তুলা হয়ে যায়। তামাকগুলো রাতের আধাঁরে অন্যত্র বিক্রি করে দিতে পারে এমন আশংকা থেকে শুক্রবার দুপুরে ভাড়াটিয়া ও পরিবারের লোকজন নিয়ে আবু তাহের খামার বাড়ি হতে তামাক আনতে গেলে দেলোয়ারের পরিবারের লোকজন ও শ্রমিকরা বাধা দেয়। এতে করে দু’পক্ষের মাঝে ঝগড়া বিবাদ লেগে যায়। সেসময় দেলোয়ার পক্ষের ৫ জন ও আবু তাহের পক্ষের ২ জন আহত হয়। দেলোয়ার পক্ষের রুশিয়া বেগম, আহাদ আলী ও দেলোয়ার হোসেন গুরুতর আহত হয়।

দেলোয়ার হোসেন আরো বলেন, আবু তাহের হামলা করে আমার বেঁধে রাখা ৭০ বেইল তামাক (৫,৬০০ কেজি) ও ২০০০ ডাংগি (১,৫০০ কেজি) মোট দাম প্রায় ১০ লাখ ৬৫ হাজার টাকা তামাক লুট করে নিয়ে যায়। হামলাকারীরা হল, সাইফুল ইসলাম (২২), শফিকুল ইসলাম (২০), আবু তাহের (৫৫), জাহের উদ্দিন (৪২), হাজেরা বেগম (৩৩), রফিকুল ইসলাম (২৭), ফরহাদ (২৪), মনজুর আলম (২৬), শাহেনা বেগম (২৫) ও আল আমিন (১৮)।

এই বিষয়ে আবু তাহের বলেন, আমার ঋণের টাকা পরিশোধ না করে সে রাতের আধাঁরে অন্যত্র তামাক বিক্রি করে দিচ্ছিল। তাই আমি আমার দেয়া টাকার পরিমাণ মত তামাক আনতে গেলে দেলোয়ার পক্ষ হামলা করে। এতে আমি ও আমার ভাই জাহের উদ্দিনকে আহত হই।

স্থানীয় ইউপি মেম্বার আবুল কাসেম বলেন, আমরা বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার করতে চেয়েছিলাম। তারা না মেনে থানায় অভিযোগ দিয়েছে।

দুই পক্ষের দেয়া অভিযোগের বিষয়ে লামা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আমিনুল হক বলেন, তারা লিখিত দিয়েছে। দুই পক্ষের আহতদের চিকিৎসা শেষে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তাদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে। সে পর্যন্ত ঊভয় পক্ষকে শান্তিপূর্ণভাবে থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

পাঠকের মতামত: