ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪

কি ঘটেছে ১৪ জেলের ভাগ্যে ?

মুহিববুল্লাহ মুহিব, কক্সবাজার ::
বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার উপকুলে মাছ আহরণে গিয়ে ফিশিং ট্রলারসহ নিখোঁজ রয়েছে ১৪ মাঝি-মাল্লা। ২৫ দিন ধরে নিখোঁজ হলেও এখনো তাদের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। পরিবারের সদস্যদের দাবি জলদস্যুদের কবলে পড়েছে তারা।
জানাযায়, গত ৩১ ডিসেম্বর থেকে মাছ আহরণে গিয়ে নিখোঁজ হয় ফিশিংট্রলারটি। ওই ফিশিং ট্রলারে ১৪ মাঝি-মাল্লা ছিল। নিখোঁজের ২৫ দিন পার হলেও তাদের ভাগ্যে কি ঘটেছে তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে নিখোঁজদের পরিবারে চলছে আহাজারি।
নিখোঁজ জেলেরা হলেন, আহমদ উল্লাহর ছেলে মনির আহমদ, মোহাম্মদ আলীর ছেলে মো. আব্দুল্লাহ, শাহ আলমের ছেলে আবুল ফয়েজ, মো. হাসানের ছেলে নুর মোহাম্মদ, শাহজাহানের ছেলে সাদ্দাম হোসেন, কুইল্যা মিয়ার ছেলে মো. রশিদ, জাফর আলমের ছেলে রফিক আলম, শফি আলমের ছেলে মো. আনছার, মো. আলীর ছেলে মো. মুফিজ, ঈসমাইলের ছেলে সোলতান, রহমানের ছেলে মো. আমান উল্লাহ, আব্দুল করিমের ছেলে সালেহ আহমদ- তার ভাই মো. আলী ও আজমের ছেলে মো. ইউনূছ। এদিকে বৃহস্পতিবার বিকেলে কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সামনে মানব্বন্ধন করেছে নিখোঁজদের স্বজনরা।
মানব্বন্ধনে স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, ফিশিংট্রলারের মালিক তারা মালয়েশিয়া পালিয়েছে বলে ঘটনাটি ধামা চাপা দেয়ার চেষ্টা করছেন। ২৫ দিন ধরে চরম অর্থ সংকটে দিন পার করছি আমরা।
নিখোঁজ জেলে মনির আহমদের মা মরিয়ম বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার সংসারের একমাত্র উপার্জনকারীকে হারিয়েছি। এখন সে কি অবস্থায় আছে আমরা জানিনা। চরম আর্থিক সংকটে দিশেহারা হয়েছি। কিভাবে চলবে বাকি জীবন। আমি কি আমার ছেলেকে আর পাবো না। প্রশাসনের কাছে আমি আমার ছেলে ফিরে পেতে চাই।
ভাই হারানো রুবি আক্তার বলেন, আমার ভাই স্কুলে যাওয়ার টাকা দিত। কিন্তু আজ ২৫ দিন হয়ে গেলো আমি আমার ভাইকে টাকা তো দূরের কথা দেখতে পাইনি। কোথায় আছে, কেমন আছে আমার ভাই আমি জানতে চাই।
নিখোঁজ নুর আহমদের মেয়ে রুমা আকতার বলেন, আমার বাবাকে কেউ আটকে রেখেছে। আমার বাবাকে ফিরে পেতে চাই। এজন্য প্রশাসনের কাছে দ্রুত সাগরে তল্লাশী চালানোর দাবি জানাচ্ছি।
কক্সবাজার ফিশিংবোট মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, কক্সবাজারে কাইয়ুম সওদাগরের একটি ফিশিংবোট ২৫ দিন ধরে সাগরে নিখোঁজ রয়েছে। তাদের সাথে যোগাযোগ করাও সম্ভব হচ্ছে না। তার কি জলদস্যুদের কবলে পড়েছে নাকি ইঞ্জিন বিকল হয়ে সাগরে ভাসমান অবস্থায় আছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
মালয়েশিয়া চলে যাওয়ার অভিযোগটি অস্বীকার করে ফিশিং ট্রলারটি মালিক কায়ুম সওদাগর বলেন, মাছ আহরণে গিয়ে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর থেকে তাদের মোবাইলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ৫ জানুয়ারী ফিরে আসার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তারা ফিরেনি। তাদের ভাগ্য কি ঘটেছে তাও জানতে পারছি না।
তিনি আরও জানান, আমার ট্রলারে মোট ১৪ মাঝিমাল্লা ছিল। তার মধ্যে একজন মাঝি ও বাকি ১৩ জন জেলে ছিল। এবিষয়ে প্রশাসনকে অবহিত করেছি।
উল্লেখ্য যে, গত ৩১ ডিসেম্বর থেকে বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার উপকুলে মাছ আহরণে গিয়ে নিখোঁজ রয়েছে ১৪ মাঝি-মাল্লা। নিখোঁজের ২৫ দিন পার হতে চললেও এখনো তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

পাঠকের মতামত: